ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৫ মে ২০২৪, ৩১ চৈত্র ১৪৩১

বস্তুগত উন্নয়ন দিয়ে উন্নয়ন টেকসই হয় না ॥ তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২১:৪৮, ২৬ জুন ২০২১

বস্তুগত উন্নয়ন দিয়ে উন্নয়ন টেকসই হয় না ॥ তথ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ শুধু বস্তুগত উন্নয়ন দিয়ে উন্নয়ন টেকসই হয় না। বস্তুগত উন্নয়নের পাশাপাশি মানুষের আত্মিক উন্নয়ন প্রয়োজন। সেটি করতে হলে মানুষের মধ্যে মূল্যবোধ, দেশাত্মবোধ ও মমত্ববোধের সমন্বয় ঘটাতে হবে। আমরা এমন একটি রাষ্ট্র রচনা করতে চাই, যেটি বস্তুগত উন্নয়নের দিক দিয়ে একটা উন্নত রাষ্ট্র হবে, একইসঙ্গে একটি মানবিক রাষ্ট্রও গঠন হবে। বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে দেবে, রাস্তায় দুর্ঘটনা হবে মানুষ কাতরাবে, কিন্তু পাশ দিয়ে যাওয়া কেউ ফিরে তাকাবে না, কখন পুলিশ এসে লাশ নিয়ে যাবে- সেই উন্নয়ন ও সমাজ আমরা চাই না। শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগরীর রেডিসন ব্লু’র মেজবান হলে আয়োজিত রোটারি ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিক্ট কনফারেন্স-২০২১ এর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কথাগুলো বলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। কনফারেন্সের আহ্বায়ক মোঃ তৈয়বের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন রোটারি ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্টের প্রতিনিধি পিডিজি কেএম জয়নুল আবেদীন, জেলা গবর্নর ড. বেলাল উদ্দিন আহমেদ, রোটারিয়ান ফাতেমা জেবুন্নেছা প্রমুখ। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মধ্যযুগে যে সকল দেশের উন্নত কৃষি জমি ছিল তারাই ছিল ধনী। আমাদের উন্নত কৃষি জমি তখনও ছিল, এখনও আছে। আমাদের দেশে তিনবার ফসল হয়, ইউরোপে হয় একবার। পৃথিবীর অর্থব্যবস্থা যখন শিল্পনির্ভর হয়ে গেল তখন আমাদের মতো কৃষিনির্ভর দেশ থেকে বর্গি, ওলন্দাজ ও ইংরেজরা উপকরণ কিনে নিয়ে সেগুলো দিয়ে তৈরি করা পণ্য আমাদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করা শুরু হলে তখন আমরা দরিদ্র হয়ে যাই। এখান থেকে উপার্জন করে নিয়ে তাদের দেশকে উন্নত করেছে, এটাই বাস্তবতা। তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে আমরা সেই দৃশ্যপট বদলে দিতে চাই। আমাদের লক্ষ্য দেশকে স্বপ্নের ঠিকানায় নিয়ে যাওয়া। সেই কারণে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ১শ’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির ঘোষণা দিয়েছেন। চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে দেশের সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে, ইতোমধ্যে কয়েকটি ইন্ডাস্ট্রি উৎপাদনে গেছে। ১শ’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল যখন প্রতিষ্ঠা হবে তখন আমরা পুরো দৃশ্যপট বদলে দিতে পারব। আজ বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নিত হয়েছে, আমরা উন্নত দেশে রূপান্তর করতে চাই। সেটি করতে হলে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার। দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রগতি উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ধান উৎপাদনে পৃথিবীতে তৃতীয়, সবজি উৎপাদনে চতুর্থ, মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে চতুর্থ, আলু উৎপাদনে সপ্তম। অথচ আয়তনের দিক দিয়ে পৃথিবীতে ৯২তম। এটি সম্ভবপর হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্ব, কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করা এবং আমাদের কৃষকসহ বিপুল জনগোষ্ঠীর পরিশ্রমের কারণে। স্বাধীনতার ৫০তম বর্ষে মানব উন্নয়ন, সামাজিক ও অর্থনৈতিকসহ সব সূচকে আমরা অনেক আগেই পাকিস্তানকে অতিক্রম করেছি। মানব উন্নয়ন ও সামাজিক সূচকে ভারতকেও অনেক আগে অতিক্রম করেছি। সাম্প্রতিক সময়ে আমরা মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রেও ভারতকে অতিক্রম করেছি, এটি চাট্টিখানি কথা নয়। করোনা মহামারীর মধ্যে ২০২০ সালে পৃথিবীর মাত্র ২০টি দেশে পজিটিভ জিডিপি গ্রোথ রেট হয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। করোনা মহামারীর মধ্যে আমাদের মাথাপিছু আয় ২০০ ডলার বেড়েছে। আর সেটি সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্ব ও সম্মিলিত প্রচেষ্টার কারণে।
×