ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

সাতক্ষীরায় ‘বড়ছেলে’ বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ মানুষ

প্রকাশিত: ০৯:৪১, ১৯ নভেম্বর ২০১৯

সাতক্ষীরায় ‘বড়ছেলে’ বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ সাতক্ষীরার সুন্দরবনঘেঁষা ভারত সীমান্তের ধার দিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রফিকুল ইসলাম ওরফে ‘বড়ছেলে’ ও তার বাহিনী। শতাধিক ক্যাডার এখন তাকে ঘিরে থাকে। লাঠিসোঁটা, ধারালো অস্ত্র দিয়ে যেখানে প্রয়োজন সেখানে হানা দিয়ে আদায় করে চাঁদা। বার বার সন্ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে এলাকার মানুষকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে বাহিনীপ্রধান রফিকুল ওরফে বড়ছেলে ও তার বাহিনী। স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকায় রফিকুল তার মার সঙ্গে থাকত সরকারের খাসজমিতে। এখন কোটি টাকার মালিক রফিকুলের বিরুদ্ধে কেউ কোন কথা বলতে সাহস করে না। কারণ, তার পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক শক্তি। রফিকুল সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার নুরনগর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। এলাকাবাসী বলছেন, তার দাপট এত বেশি যে একমাত্র আল্লাহ তার বিচার করতে পারে। আর এই অত্যাচারের বিচার ও প্রতিকার চাইতে এলাকার কিছু মানুষ সোমবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এসে তাদের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরেন। নানা অভিযোগ রফিকুল ওরফে বড়ছেলের বিরুদ্ধে। চোরাচালান, মাদক কারবারি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি তাদের প্রধান কাজ। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, কয়েক অসাধু পুলিশ ও বিজিবি সদস্যের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। আর ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় থাকায় কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বড়ছেলে বাহিনীপ্রধান রফিকুল ইসলাম বলেন, তার দলে শতাধিক লোক রয়েছে। তারা ভারতীয় গরু বেচাকেনা করে। তার বিরুদ্ধে আনীত অন্য সব অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, এলাকায় রাজনৈতিক বিরোধের জেরে এসব অভিযোগ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সংসদ নির্বাচনে তিনি ও তার লোকজন ছিলেন নৌকার পক্ষে। আর যারা অভিযোগ দিচ্ছেন তারা ছিলেন বিকল্পধারার কুলা প্রতীকের পক্ষে। সেখান থেকেই বিরোধের সৃষ্টি বলে দাবি করেন তিনি। শ্যামনগর ও কালীগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী নুরনগর ও কুলতলির এক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, বড়ছেলে বাহিনী তার কাছে আট লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছে। তিনি তা দিতে অস্বীকার করায় তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে তার ওপর। এমন বেশ কয়েক ব্যবসায়ী সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এসে জানান বড়ছেলে বাহিনীর অত্যাচারে তারা অতিষ্ঠ। বড়ছেলে বাহিনীতে রয়েছে আনার, সাইফুল, হযরত, আশরাফুলসহ শতাধিক ক্যাডার। এসব ক্যডার সব সময় হাতুড়ি, চাকু, হকস্টিক, লোহার রড নিয়ে চলাফেরা করে। সম্প্রতি কুলতলি গরুর খাটাল ও নুরনগর বাজার এলাকায় বোমাবাজির ঘটনাও ঘটায় ত্রাা। এখন খাটাল রয়েছে তাদের নিয়ন্ত্রণে । ভারত থেকে আসা গরুপ্রতি ৫শ’ ৫০ টাকা নেয়ার কথা থাকলেও বড়ছেলে বাহিনী তাদের কাছ থেকে আদায় করে ১০ হাজার টাকা। চাঁদা না পেয়ে এরই মধ্যে তারা কয়েকজনকে মারপিট করেছে। স্থানীয় গরু ব্যবসায়ী আবদুস সামাদ জানান, তাদের দাবি অনুযায়ী টাকা না দেয়ায় তিনিসহ অনেকে হামলা ও মামলার শিকার হয়ে সম্প্রতি জেলও খেটেছেন।
×