ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

জেলা বিএনপির কর্মী সমাবেশ পণ্ড

রাজশাহীতে এবার নাদিম তপু গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষ

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ১৭ মে ২০১৭

রাজশাহীতে এবার নাদিম তপু গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষ

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ মহানগর বিএনপির সমাবেশে সংঘর্ষের পরদিন রাজশাহী জেলা বিএনপির কর্মী সমাবেশেও কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে নগরীর পাঠানপাড়া এলাকায় উত্তরা কমিউনিটি সেন্টারে প্রতিনিধি সম্মেলনে জেলার সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি নাদিম মোস্তফা ও জেলা বিএনপির বর্তমান সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপুর সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এ সময় নেতাকর্মীরা মঞ্চ লক্ষ্য করে জুতা-স্যান্ডেল ও পানির বোতল ছুড়ে মারে এবং মঞ্চের ব্যানার টেনে-হিঁচড়ে ছিঁড়ে ফেলে। ভাংচুর করা হয় চেয়ার-টেবিল। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। তাদের সামনে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দলের নেতাকর্মীরা। পরে তারা তিনজন বক্তব্য রেখে সমাবেশ শেষ করে দেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, প্রতিনিধি সম্মেলনে জেলা বিএনপির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপুকে সভাপতি ঘোষণা করার পর সাবেক সভাপতি নাদিম মোস্তফার সমর্থকরা সমাবেশস্থলে হৈচৈ শুরু করে। এ সময় হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে আবার সমাবেশ শুরু হয়। এরপর মঞ্চে ডাকা ও নাম ঘোষণা নিয়ে দ্বিতীয় দফায় হৈচৈ, হাতাহাতি ও ভাংচুর করে নাদিম মোস্তফার সমর্থকরা। এ সময় নাদিম সমর্থকরা মঞ্চে উঠে ব্যানার টেনে ছিঁড়ে ফেলে। এর কিছুক্ষণ পর নাদিম সমর্থক জেলার সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন ও যুগ্ম-সম্পাদক সৈয়দ মহাসিনের নেতৃত্বে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করে ভাংচুর শুরু করে। এ সময় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় উঠে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। তবে এ ঘটনার সময় কমিউনিটি সেন্টার থেকে নেতাকর্মীরা বের হয়ে যায়। পরে রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার নেতাকর্মীদের ভেতরে প্রবেশ করতে আহ্বান জানান। এরপর গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও মিজানুর রহমান মিনু বক্তব্য রেখে সমাবেশ শেষ করে দেন। জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুন বলেন, জেলা বিএনপির নতুন কমিটির পদবঞ্চিত বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। যারা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নাদিম মোস্তফার অনুসারী, প্রতিনিধি সম্মেলন প- করতে পরিকল্পিতভাবে তারা এসব ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানান তিনি। রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার ইফতে খায়ের আলম বলেন, পুলিশ সমাবেশস্থলের বাইরে নিরাপত্তায় ছিল। সমাবেশস্থলের ভেতরে নিজেদের মধ্যে হাতাহাতি ও চেয়ার-টেবিল ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। দলের কেন্দ্রীয় নেতারাই সেটি নিয়ন্ত্রণ করেন। এ ব্যাপারে পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি। প্রসঙ্গত, এর আগের দিন সোমবার বিকেলে একই স্থানে রাজশাহী মহানগর বিএনপির কর্মী সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে দুই দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় নিজ দলের নেতাকর্মীদের বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে জখম করতে দেখা যায়। এতে আহতদের মধ্যে তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এসব বিষয় নিয়ে রাজশাহী জেলা ও মহানগর বিএনপিতে চরম উত্তেজনা ও অস্থিরতা বিরাজ করছে।
×