ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৪ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

এ জঙ্গী সংগঠন তৎপর মহিলা কলেজ, মাদ্রাসা ও হোস্টেলে

চট্টগ্রামে সক্রিয় ছাত্রী সংস্থা

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১২ আগস্ট ২০১৬

চট্টগ্রামে সক্রিয় ছাত্রী সংস্থা

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্থা নামের একটি জঙ্গী সংগঠন অতিগোপনে ও পারিবারিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ সংগঠনের কর্মী ও সংগঠকরা তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সুপ্ত অবস্থায় থাকা এ জঙ্গী সংগঠন কাজ করছে মহিলা কলেজ, মাদ্রাসা ও মহিলা হোস্টেলকে কেন্দ্র করে। তবে নামসর্বস্ব এ সংগঠনটির কোন সাইনবোর্ড বা অফিস কার্যালয়ের অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে সংগঠনটির কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে এমন তথ্য ছিল র‌্যাব সেভেনের অভিযানে। সংগঠনের সভানেত্রী সুমাইয়া আফরোজ স্বাক্ষরিত একটি চিঠি নারীদের উদ্দেশে লেখা হয়েছিলÑ এমন তথ্য রহিমা নামের এক নারী জঙ্গীর। লিফলেটে সংগঠনটির কথা উল্লেখ থাকলেও অবস্থানের কোন ঠিকানা নেই। র‌্যাব সেভেনের সিইও লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, কক্সবাজারের মগনামা এলাকার রহিমাকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে নারী সংগঠনের অস্তিত্ব সম্পর্কে অবগত হয়েছে র‌্যাব। উদ্ধারকৃত চিঠি ও লিফলেট থেকেই মূলত জঙ্গী ছাত্রী সংস্থার পরিচয় পাওয়া গেছে। অভিযোগ রয়েছে, সিএমপির ১৬টি থানার আওতায় সাপ্তাহিক ও ইসলামী মাহফিলের নামে বিভিন্ন স্থানে গোপন বৈঠক চলছে। এ ধরনের বৈঠকে সংগঠনের ৮ থেকে ১০ সদস্য উপস্থিত থাকে। এই সদস্যদের আবাসস্থলে পৃথকভাবে নির্দিষ্ট দিনে জমায়েত হয়। প্রত্যেক সদস্য প্রত্যেক সপ্তাহে পৃথকভাবে নিজ নিজ আবাসস্থলে এসব সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করে। বিশেষ করে ঘিঞ্জি এলাকাগুলোতে এ ধরনের বৈঠক সবচেয়ে বেশি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সদস্যরা কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে বৈঠকে অংশ নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া বিভিন্ন মহিলা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে এ সংগঠনের কর্মী ও সদস্যরা সমর্থক কালেকশনের মধ্য দিয়ে নিজেদের প্রচার ও কর্মসূচী পালন করছে। সংগঠনটির পরিসংখ্যানে ও উদ্ধারকৃত লিফলেটে রয়েছে ১৯৭৯ সাল থেকেই ইসলামের সঠিক প্রচারের নামে এ সংগঠনটি কাজ করছে। ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম মহানগরীকে ওই সংগঠনটি তাদের কর্মসূচীর আওতায় আনতে উত্তর ও দক্ষিণ দুটি ভাগে ভাগ করেছে। চট্টগ্রাম মহানগরী নতুনভাবে কাজ শুরু করলেও নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে অফিস কক্ষ, ল্যাপটপসহ বায়তুল মালের (নগদ অর্থ) প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করা হয়েছিল সংগঠনের সভানেত্রীর এক চিঠিতে। নারী এ সংগঠনটির বর্তমান সদস্য মুষ্টিমেয় তবে কর্মী রয়েছে প্রায় ১ হাজার ৭৭ জন। সমর্থক প্রায় ৮ হাজার। আবার সদস্য প্রার্থীও রয়েছে মাত্র কয়েকজন। অগ্রসর কর্মী হিসেবে কাজ করছে ৬৮ জন, যারা নারী, তরুণী ও কিশোরী। র‌্যাব-৭ সূত্রে জানা গেছে, দেশব্যাপী প্রশিক্ষণে বিশাল নেটওয়ার্ক নিয়ে নেমেছে ৮ হাজার সদস্যের এই মহিলা জঙ্গী সংগঠন। হালিশহরের বসুন্ধরার বিএস ভবনের দ্বিতীয়তলা থেকে গত বছরে গ্রেফতারকৃত ৪ জঙ্গীর মধ্যে একজন ছিল নারী। এছাড়াও ওই ভবন থেকে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্থার প্রায় অর্ধশত লিফলেট উদ্ধার করা হয়। ওই লিফলেটে ছাত্রী সংস্থাটির দাওয়াতী কর্মকা-, ব্যয়বহুল কার্যক্রম ও প্রকাশনা, দাওয়াতী কর্মসূচী, প্রশিক্ষণমূলক কর্মসূচীসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের উল্লেখ রয়েছে।
×