ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

কক্সবাজারে ঘুষখোর ওসিকে কারাগারে প্রেরণ

প্রকাশিত: ০০:৩৩, ১৯ জুন ২০১৮

কক্সবাজারে ঘুষখোর ওসিকে কারাগারে প্রেরণ

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ মামলা নিতে ঘুষ গ্রহণের দায়ে ভুক্তভোগীর দায়ের করা মামলায় কুতুবদিয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলতাফ হোসেনকে জেলহাজতে পাঠিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মীর শফিকুল আলমের আদালতে বিচারাধীন একটি মামলায় অভিযুক্ত ঐ ওসিকে জেলহাজতে প্রেরণের এই আদেশ দেন। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক অভাব অনটনের কারণে ২০১৪ সালের ১৮ জুন সকালে ছিন্নি খাইয়ার পাড়ায় মৃত নজির আহমদের পুত্র উপজেলার ভূমি অফিসের কর্মচারী ফরিদুল আলমকে হত্যা করে তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম ডেজি ও ছেলে অহিদুল আলম (রিয়াদ)। এ ঘটনায় নিহতের মা নুর জাহান বেগম বাদী হয়ে মামলা করতে গেলে কুতুবদিয়া থানার ওসি আলতাফ হোসেন এক লক্ষ টাকা ঘুষ দাবী করেন। এ প্রস্তাব শুনে অবাক বনে যান বৃদ্ধ মা নুর জাহান। তারপরও ছেলে হত্যার ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় এসআই এবিএম কামাল উদ্দিনের মাধ্যমে আলতাফ হোসেনকে ৫০ হাজার টাকা দেয় ওই বৃদ্ধা। কিন্তু ওসি আলতাফ হোসেন নুরজাহানের দায়ের করা এজাহারটি আমলে নেয়নি। উল্টো নিহতের ছেলে মোহাম্মদ তৌহিদুল আলমের নিকট থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ গ্রহণ করে অপর একটি মামলা (কুতুবদিয়া থানার মামলা নং ১৫। জি আর নং ৭৫/১৪) গ্রহন করেন। ওই মামলায় নিহতের বৃদ্ধ মা নূর জাহান নিহতের দুই ভাই ইস্কান্দর মির্জা ও মাহবুব আলমকে আসামি করা হয়। সেই মামলায় দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন দুই ভাই। এনিয়ে ইস্কান্দর মির্জার স্ত্রী জামিলা আকতার বাদি হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে কুতুবদিয়া থানার ওসি আলতাফ ও এসআই এবিএম কামাল উদ্দিনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে। এ বিষয়ে দুদকের পিপি বলেন, বাদীনির লিখিত অভিযোগ পেয়ে কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের তৎকালীন সাদিকুল ইসলাম তালুকদার মামলাটি আমলে নিয়ে দুদককে তদন্তের নির্দেশ দেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২১০৭ সালের ১৫ মার্চ ওসি এবং এসআই দুইজনকেই অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দেন তদন্ত কর্মকর্তা অজয় ঘোষ। এরপর তাঁদের বিরুদ্ধে আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। সেই গ্রেফতারি পরোয়ানা মূলে ওসি আলতাফ আদালতে আত্মসমার্পন করে জামিনের আবেদন করেন। জানা গেছে, ওসি আলতাফ আত্মসমর্পনের সময় কৌশলে সঙ্গে করে বাদীনিকেও নিয়ে আসে। বাদী মামলাটি সামাজিকভাবে সুরাহা করা হয়েছে বলে আদালতে লিখিত আবেদন করেছেন। আদালত ওসির জামিন আবেদনটি শুনানীর জন্য রেখে ওসিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। আদালত মামলার পরবর্তী শুনানীর তারিখ ২৬ জুন ধার্য করেন। উল্লেখ্য ওসি আলতাফ হোসেন বর্তমানে সিলেটের কোম্পানিগঞ্জ থানায় কর্মরত আছেন বলে জানা গেছে।
×