ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

কবি বেলাল চৌধুরীর অবস্থা অপরিবর্তিত

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২২ এপ্রিল ২০১৮

কবি বেলাল চৌধুরীর অবস্থা অপরিবর্তিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কবির সুস্থতার প্রতীক্ষায় শুভাকাক্সক্ষীরা। তবে চিকিৎসকদের কাছ থেকে মিলছে না কোন সুখবর। এখনও অবচেতন রয়েছেন কবিতার পঙক্তিমালায় পাঠককে মোহাবিষ্ট করা কবি বেলাল চৌধুরী। কৃত্রিম শাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে জীবনের সঙ্গে চলছে একুশে পদকজয়ী কবির লড়াই। শনিবার পর্যন্ত তার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। চিকিৎসকরাও দেখছেন না কোন আশার আলো। তিনি রাজধানীর ধানম-ির আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, বেলাল চৌধুরীর সুস্থ হয়ে ফিরে আসার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। হাসপাতালে সর্বক্ষণিকভাবে পরিবারের পক্ষে কবির দেখভাল করছেন তার ছেলে আবদুল্লাহ প্রতীক চৌধুরী। ইতোমধ্যে শনিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক থেকে দেশে ফিরেছেন বেলাল চৌধুরীর একমাত্র মেয়ে ও পরিবারের জ্যেষ্ঠ সন্তান সাফিয়া আক্তার চৌধুরী মৌরী। শনিবার দুপুরে আব্দুল্লাহ প্রতীক চৌধুরী জনকণ্ঠকে জানান, শুক্রবার বেলা সাড়ে বারোটার দিকে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে আইসিইউ থেকে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের অধ্যাপক ফিরোজ আহমেদ কোরেশীর তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছে বেলাল চৌধুরীর। তিনি ক্রনিক কিডনি ডিজিজ, রক্তশূন্যতা, হাইপোথাইরোটিজ, ডায়াবেটিসসহ নানা জটিল রোগে ভুগছেন। চিকিৎসকদের তথ্য অনুযায়ী, প্রকৃত অর্থে বেলাল চৌধুরীর সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা একেবারেই সামান্য। তিনি পরিবারের পক্ষ থেকে বেলাল চৌধুরীর জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন। চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনে রাষ্ট্রের কোন সহযোগিতার প্রয়োজন আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতীক চৌধুরী বলেন, আপাতত চিকিৎসার জন্য কোন আর্থিক সহযোগিতার প্রয়োজন নেই আমাদের। মূলত প্রবাসে থাকা আমার ছোট ভাই আবদুল্লাহ নাফিস চৌধুরীই চিকিৎসার ব্যয়ভার চালিয়ে যাচ্ছেন। বেলাল চৌধুরীর ছেলে জানান, চার মাসেরও বেশি সময় ধরে বেলাল চৌধুরী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বৃহস্পতিবার রাতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেয়া হয়। এর আগে ২০১৪ সালের ৯ মে কলকাতা সাহিত্য আকাদেমির এক অন্ষ্ঠুানে যোগ দেয়ার আগে বেলাল চৌধুরী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানান, কবির কিডনিতে সমস্যা হয়েছে। মূত্রনালিতে ইনফেকশনের কারণে তিনি ‘সেফটিসেমিয়া’য় ভুগছেন। এছাড়া তার উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে। সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১৪ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন বেলাল চৌধুরী। ষাটের দশকে আলোড়ন তোলা এই কবি একাধারে সাংবাদিক, প্রাবন্ধিক, অনুবাদক। পত্রিকা সম্পাদনায় রেখেছেন অনন্য ভূমিকা। জনকণ্ঠের জন্মলগ্ন থেকে বল্লাল সেন ছদ্মনামে তার লেখা ঢাকা ডায়েরি ছিল অন্যতম জনপ্রিয় এবং ভিন্ন স্বাদের এক কলাম। বোহেমিয়ান স্বভাবের এক কবি বেলাল চৌধুরী। তবে সাহিত্যসাধনায় সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি প্রবলভাবে দায়বদ্ধ এই কবি। তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ হলো ‘নিষাদ প্রদেশে’, ‘আত্মপ্রতিকৃতি’, ‘স্থিরজীবন ও নিসর্গ’, ‘স্বপ্নবন্দী’, ‘সেলাই করা ছায়া’, ‘কবিতার কমলবনে’, ‘যাবজ্জীবন সশ্রম উল্লাসে’ ও ‘বত্রিশ নম্বর’।
×