স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘আমি সব সময় নিজেকে একজন উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে ভাবি। এভাবেই বাকি ক্যারিয়ার চালিয়ে যেতে চাই। ব্যাটিংয়ের চেয়ে কিপিংটাই বেশি উপভোগ করি।’ কথাগুলো বলেছেন বাংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম। যার উইকেটকিপিং ক্যারিয়ার অনেকটাই হুমকির মুখে পড়ে গেছে। সঙ্গে এখনও আঙ্গুলের ব্যথা সারেনি। এ জন্য অস্ট্রেলিয়াতেও যেতে হতে পারে মুশফিককে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সূত্রে এমনটিই জানা গেছে।
সেই যে এপ্রিলে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে আঙ্গুলের ইনজুরিতে পড়েছেন। আঙ্গুলের সেই ব্যথায় এখনও ভুগছেন মুশফিক। এরপরও কখনও কখনও ইনজুরি নিয়েই উইকেটকিপিং করেছেন। তবে এখনও ব্যথা রয়ে গেছে। যা একেবারে সেরে উঠছে না। আর তাই মুশফিকের আঙ্গুলের করা স্ক্যান রিপোর্টগুলো মেলবোর্নে অর্থপেডিক সার্জন গ্রেগ হয়ের কাছে পাঠিয়েছে বিসিবি। যে কোন সময় মুশফিককে অস্ট্রেলিয়ায় উড়াল দিতে হতে পারে। যদি স্ক্যানগুলো দেখে গ্রেগ সবুজ সঙ্কেত দেন। আর যদি গ্রেগ মনে করেন প্রয়োজন নেই অস্ট্রেলিয়াতে এসে চিকিৎসা নেয়ার। বাংলাদেশে থেকেই নিয়ম মেনে চললে ঠিক হয়ে যাবে, তাহলে অস্ট্রেলিয়ায় যেতে হবে না মুশফিককে। মুশফিক যেন ভবিষ্যতে কোন রকমের সমস্যায় না পড়েন, এ জন্যই এমন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
বিশ্বকাপের পরই খুলনায় পাকিস্তান সফরের প্রথম টেস্টে আঙ্গুলে ব্যথা পান। আর ইনজুরির কারণে ভারতের বিপক্ষে টেস্টে তার পরিবর্তে লিটন কুমার দাশকে উইকেটরক্ষক হিসেবে দেখা যায়। তবে ভারত সিরিজের পরই আবার উইকেটরক্ষকের ভূমিকায় দেখা যায় মুশফিককে। সমস্যা যে আছে তা বোঝাও গেছে।
বাংলাদেশ ক্রিকেটে এখন নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান মুশফিক। ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার ভাষায়, ‘রান মেশিন’ও। সেই রান মেশিনের কাছ থেকে ধারাবাহিকভাবে রান পেতে উইকেটরক্ষকের ভূমিকা থেকে দূরে সরাতে চেয়েছে বোর্ডই। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনই বলেছিলেন, ‘মুশফিকের ব্যাটিং আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ওর (মুশফিক) জন্য চাপ হয়ে দাঁড়ায়-এমন কোন সিদ্ধান্ত আমরা নেব না। টেস্ট ম্যাচে সারাদিন ধরে কিপিং করা সহজ কাজও নয়। যদি এমন হয়, কখনও মুশফিক ৩টি দায়িত্ব পালন করতে চাপ অনুভব করে, তাহলে মুশফিককেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মুশফিককে ঠিক করতে হবে, কোন দায়িত্বটা সে রাখবে। আমার ধারণা, মুশফিক সিদ্ধান্ত নিলে উইকেটরক্ষকের দায়িত্ব হয় তো সে ছেড়ে দেবে। তবে যেহেতু তার চোট পুরোপুরি সারেনি, এই বিষয়ে একটু সন্দেহ আছে, হয় তো সে এই সিরিজে কিপিং নাও করতে পারে।’ ভারতের বিপক্ষে সিরিজ চলার সময় এমনটি বলেছিলেন বিসিবি সভাপতি। পরে মুশফিক সিরিজে উইকেটরক্ষকের ভূমিকাতেও থাকেননি। এমন যখন অবস্থা, তখন এর প্রভাব যেন ব্যাটিংয়েও পড়েছে। আর তাই মুশফিক আবার উইকেটরক্ষকের ভূমিকাতে ফিরেছেন।
যেহেতু মুশফিক এ ভূমিকাতে থাকবেন এবং ব্যাটিংটাও জরুরী, তাই আঙ্গুলের ব্যথা সবার আগে কমতে হবে। এ জন্য বিসিবি চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছে। সেই চেষ্টায় এবার অস্ট্রেলিয়াতেও যেতে হতে পারে মুশফিককে।