স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কিরগিজস্তানে অনুষ্ঠিতব্য ‘এএফসি কাপ’-এ অংশ নিতে শনিবার সকালে ঢাকা ছাড়ছে শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেড। এ আসরে তারা অংশ নিচ্ছে প্রিমিয়ার লীগের চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে। গত ২৯ জুন এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) সদর দফতর মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত হয় ‘২০১৬ এএফসি কাপ’-এর গ্রুপিং ড্র। এতে ‘বি’ গ্রুপে পড়ে বাংলাদেশের শীর্ষ ক্লাব শেখ জামাল ধানম-ি। তাদের অপর দুই প্রতিপক্ষ হলো কিরগিজস্তানের এফসি আলগা বিশকেক এবং ম্যাকাওয়ের এসএল বেনফিকা ডি ম্যাকাও ক্লাব। শেখ জামাল তাদের প্রথম ম্যাচ খেলবে আগামী ১৩ আগস্ট বেনফিকা এবং ১৫ আগস্ট আলগার বিপক্ষে। দুটি খেলাই অনুষ্ঠিত হবে বিশকেকের স্পার্টাক স্টেডিয়ামে সেখানকার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায়।
গ্রুপ ‘এ’ তে আছে ভুটানের ড্রুক ইউনাইটেড এফসি (স্বাগতিক), মঙ্গোলিয়ার খরমকন ও পাকিস্তানের কে-ইলেকট্রিক এফসি। প্রতি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দল খেলবে প্লে অফ পর্বে। তারপর খেলবে যথাক্রমে গ্রুপ পর্বে এবং নকআউট (চূড়ান্ত পর্ব) পর্বে।
গত আসরে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রকে প্লে অফ ম্যাচ খেলতে হলেও এএফসি এবার ক্লাবগুলোকে বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ দিতে তিনটি করে দল নিয়ে গ্রুপ পদ্ধতি প্রচলন করেছে, তুলে দিয়েছে প্রেসিডেন্টস কাপ।
এএফসি কাপে শেখ জামালের কোচ জোসেফ আফুসির এএফসি লাইসেন্স কোর্স না থাকায় তিনি দলের ম্যাচগুলোতে কোচ হিসেবে ডাগআউটে দাঁড়াতে পারবেন না।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে ক্লাবটির যাত্রা শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত ক্লাবটি ফুটবলে জিতেছে মোট নয় শিরোপা। এর মধ্যে দেশের বাইরে জিতেছে তিন শিরোপা। এগুলো হলোÑ ভুটানে কিংস কাপ শিরোপা, নেপালে সাফাল পোখরা গোল্ডকাপ শিরোপা এবং বুদ্ধ সুব্বা গোল্ডকাপ শিরোপা। এছাড়া রানার্সআপ ট্রফি আছে একটি (ভারতে আইএফএ গোল্ডকাপ)।
প্রথমবারের মতো এএফসি কাপের আসরে খেলতে যাওয়ার আগে জামালের নিয়মিত অধিনায়ক-ডিফেন্ডার নাসিরউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘সেখানে আমরা কেমন ফল করব, তা এখনই বলা সমীচীন হবে না। তবে টুর্নামেন্টটি খুব প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে।
আমাদের জিততে হলে মাঠে কঠিন লড়াই করতে হবে। আবার আমাদের হারাতে হলেও প্রতিপক্ষকে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে।’ দলের কোচ জোসেফ আফুসি বলেন, ‘আগে প্রতিপক্ষ দলগুলোকে দেখতে চাই তারা কেমন। তারপরেই নিজেদের লক্ষ্য জানাতে চাই। তবে নিজেদের মধ্যে আমরা লক্ষ্যের কথা আলোচনা করেছি। সেখানে যেহেতু ট্রফি নেই, তাই কোয়ালিফাইড সার্টিফিকেট নিয়েই দেশে ফিরতে চাই।’ যদিও আক্রমণভাগের অন্যতম হাইতিয়ান-ফরোয়ার্ড ওয়েডসন এ্যানসেলমে ভিসার মেয়াদ ঠিক রাখতে কদিন আগেই চলে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রে। এখন ওয়েডসনের চলে যাওয়াতে শেখ জামালের আক্রমণভাগে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে, সেটা পূরণ হবে কিভাবে? অবশ্য বাছাইপর্বে দুজনের বেশি বিদেশী খেলোয়াড়ও খেলানো যাবে না। সেক্ষেত্রে এমেকা ডার্লিংটন ও ল্যান্ডিং ডার্বোয়ে অবশ্য আছেন।
তবে দলটির বড় ভরসার নাম জাতীয় দলের অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ওখানে আমরা শুধু শেখ জামাল হিসেবেই যাব না। বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছি। সামর্থ্য অনুযায়ী নিজেদের সেরাটা দিতে পারলে আশা করি দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে পারব।’
কিরগিজস্তানগামী শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেডে খেলোয়াড়রা হলেনÑ মাজহারুল ইসলাম, মাকসুদুর রহমান, শহীদুল আলম, ইয়ামিন আহমেদ চৌধুরী মুন্না, রায়হান হাসান, মোহাম্মদ লিংকন, ইয়াসিন খান, নাসির উদ্দিন চৌধুরী (অধিনায়ক), দিদারুল হক, কেষ্ট কুমার বোস, মামুনুল ইসলাম, জামাল ভুঁইয়া, সোহেল রানা, এনামুল হক শরীফ, মোনায়েম খান রাজু, শেখ আলমগীর কবির রানা, শাখাওয়াত হোসেন রনি, তকলিস আহমেদ, রুবেল মিয়া, ওয়েডসন এ্যানসেলমে, এমেকা ডার্লিংটন অনুহা, ল্যান্ডিং ডার্বোয়ে, কাবিরু আবদুল্লাহি মুসা ও চিদোজি জনসন। দলের স্টাফরা হলেন- জোসেফ আফুসি (কোচ), মাসুদ পারভেজ কায়সার (সহকারী কোচ), আনোয়ারুল করিম হেলাল (ম্যানেজার), আশরাফউদ্দিন আহমেদ (দলনেতা), ভিক্টর এরিয়েল কোলম্যান (ফিজিক্যাল ট্রেনার), হোসেন মোঃ সাইফুজ্জামান (ফিজিও), শহীদুল ইসলাম (ম্যানেজার এডমিন), মাহমুদ হাসান খান (ইভেন্ট ম্যানেজার), শেখ মোঃ দীপু (ফটোগ্রাফার) এবং শরীফুল হোসেন সুজন (বল বয়)।