ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

আদালত বিষয়ক সম্মেলন

প্রকাশিত: ২১:৩৮, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

আদালত বিষয়ক সম্মেলন

.

ঢাকায় সদ্যসমাপ্ত দুদিনব্যাপী আদালত বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন নানা কারণে গুরুত্ববহ। বাংলাদেশ ভারতের জ্যেষ্ঠ বিচারকদের অংশগ্রহণে এটি সার্থকতা পেয়েছে। প্রসঙ্গক্রমে বিচারকদের দায়িত্ব কর্তব্য সম্পর্কে এমন কিছু বক্তব্য উঠে আসে, যা সচরাচর অনুক্তই থেকে যায়। সম্মেলনের প্রথম দিন বিচারকদের মাধ্যমে যাতে ক্ষমতার অপব্যবহার না হয়, সেদিক কঠোরভাবে খেয়াল রাখার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। গত শুক্রবার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ইনার কোর্ট ইয়ার্ডে দুই দিনব্যাপীএকবিংশ শতাব্দীতে দক্ষিণ এশিয়ার সাংবিধানিক আদালত : বাংলাদেশ ভারত থেকে শিক্ষাশীর্ষক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আহ্বান জানান তিনি।  রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘ক্ষমতার সঙ্গে দায়িত্ব ওতপ্রোতভাবে জড়িত। দায়িত্ব পালনের জন্য ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে। আবার ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে এবং ক্ষমতার যাতে অপব্যবহার না হয়, সেদিকে কঠোরভাবে খেয়াল রাখতে হবে।সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণ রাষ্ট্রপতির গূঢ় বার্তা অনুধাবনে সক্ষম হবেন, এটিই প্রত্যাশা।

অপরদিকে, সম্মেলনের শেষদিন সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি চাই, আমার দেশের মানুষ ন্যায় বিচার পাবে। আমাদের মতো যেন বিচারহীনতায় তাদের কষ্ট পেতে না হয়। তারা যেন ন্যায় বিচার পায় এবং দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং অর্থনৈতিক-সামাজিক সাংস্কৃতিক অধিকার যেন সুনিশ্চিত হয়। বাংলাদেশ যেন এগিয়ে চলে এবং ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব যেন চিরস্থায়ী হয়।এটি সত্যি, পঁচাত্তরের হত্যাকান্ডে পর বঙ্গবন্ধুর পরিবারের জীবিত সদস্যরা বিচারপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। জাতির জনকের হত্যাকান্ডে বিচার পাওয়ার অধিকার থেকে বহু বছর বঞ্চিত ছিল সমগ্র জাতি।

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি . ধনঞ্জয় যশবন্ত চন্দ্রচূড় উপস্থিত ছিলেন। তিনি রবিবার আপিল বিভাগে বিচারিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ  করেন। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। দুই দেশের বিচার বিভাগ সংস্কৃতি প্রায় একই। বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান আপিল বিভাগের অপর পাঁচ বিচারপতির সঙ্গে রবিবার এজলাসে (প্রধান বিচারপতির কোর্ট) আসেন ভারতের প্রধান বিচারপতি ধনঞ্জয় যশবন্ত চন্দ্রচূড়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ভারতের সুপ্রিম কোর্টের দুজন বিচারপতিও। এরপর আপিল বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। কার্যতালিকার থেকে নম্বর ক্রমিকে থাকা মামলার শুনানি গ্রহণ করে সিদ্ধান্ত দেন আপিল বিভাগ। যা পর্যবেক্ষণ করেন ভারতের প্রধান বিচারপতিসহ অন্য দুজন বিচারপতি। পর্যবেক্ষণ করা মামলার শুনানির বিষয়ে ভারতের প্রধান বিচারপতি বলেন, ক্ষেত্রে তিনিও অনুরূপ আদেশ দিতেন। ভারতের প্রধান বিচারপতির প্রশংসা সমর্থন নিশ্চয়ই বাংলাদেশের বিচারপতি আইনজীবীদের জন্য সম্মানজনক। তাঁর বক্তব্যে এমন ইঙ্গিতও পরিষ্কার যে, বাংলাদেশের আইনজীবীরা প্রশিক্ষণের জন্য আগ্রহী হলে সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে। আমরা মনে করি, ধরনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন নিয়মিতভাবেই অনুষ্ঠিত হতে পারে। এতে দেশের বিচারবিভাগই উপকৃত হবে।

×