ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৭ জুন ২০২৪, ৪ আষাঢ় ১৪৩১

নিম্ন চাপ আজ ঘূর্ণিঝড়ে  রূপ নিতে পারে

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:৪১, ২৪ মে ২০২৪

নিম্ন চাপ আজ  ঘূর্ণিঝড়ে   রূপ নিতে পারে

.

একটি প্রবল ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে যে ধরনের পরিবেশ লাগে, তা সবই যেন সমুদ্রের বুকে ঘটে চলেছে। লঘুচাপ, সুস্পষ্ট লঘুচাপ নিম্নচাপের কেন্দ্র ঘিরে সাগর উত্তাল। সেখানে বইছে তীব্র বাতাস। আবহাওয়া অধিদপ্তরের ধারণা, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। তবে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে আজ দুপুরে। নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হলে আগামীকাল রবিবার সন্ধ্যায় এই ঝড় আছড়ে পড়তে পারে বাংলাদেশের উপকূলে। আঘাত হানতে পারে পটুয়াখালীর খেপুপাড়া খুলনার মধ্যবর্তী এলাকায়। এর সর্বশেষ অবস্থান পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৩০ কিলোমিটার (কিমি) দক্ষিণে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, শনিবার থেকেই দেশের উপকূলসহ বিভিন্ন স্থানে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সমুদ্রবন্দরগুলোতে এরই মধ্যে জারি করা হয়েছে সতর্ক সংকেত। মাছধরা ট্রলার নৌকাগুলোর গভীর সমুদ্রে যেতে আরোপ করা হয়েছে বিধি-নিষেধ।

আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান জানান, শুক্রবার রাতে নি¤œচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে গভীর নি¤œচাপে পরিণত হবে। শনিবার দুপুর নাগাদ গভীর নি¤œচাপটি রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়রেমালে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার পর এর গতিপথ পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনাও জানিয়েছেন তিনি।

সহকারী আবহাওয়াবিদ জেবুন্নেসা জানান, শুক্রবার রাত ১২টায় সমুদ্রে নি¤œচাপ থেকে গভীর নিম্নচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শনিবার সকালেই ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হচ্ছে কী না তা আবহাওয়া অফিস থেকে জানিয়ে দেওয়া হবে। তবে এখন পর্যন্ত এই ঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনাই অনেক বেশি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান জানান, ওমানের দেওয়া নামরেমালপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রবিবার সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। খুলনা থেকে পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার মাঝামাঝি স্থানে ঝড় আঘাত হানবে। অপেক্ষাকৃত বেশি এলাকা ঘিরে ঝড়ের বিস্তৃতির কথা জানান তিনি।

ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রভাগ বা সামনের অংশের প্রভাব রবিবার সকাল থেকেই বোঝা যাবে বলে জানান আবহাওয়াবিদরা। শনিবার রাত থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি শুরু হবে। রবিবার থেকে বাড়বে বৃষ্টি। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার সম্ভাব্য সময় রবিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে। সময় ভাটা চলবে। তাই জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা কম রয়েছে। তবে রাত ১২টা বা এরপরে আঘাত হানলে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা বেড়ে যাবে।

আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক জনকণ্ঠকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সৃষ্ট বাতাসের গতিবেগ যদি ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিমি হয়, তখন তাকেঘূর্ণিঝড়বলা হয়। গতিবেগ যদি ৮৯-১১৭ কিমি হয়, তখন তাকে প্রবলঘূর্ণিঝড়বলা হয়। আর বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১১৮-২১৯ কিমি হয়, তখন সেটিকেঅতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়বলা হয়। গতিবেগ ২২০ কিমি বা তার বেশি হলে তা হয়সুপারসাইক্লোন রেমাল অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় হবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির ঘোষণা না দেওয়ায় এখনো কোনো ধরনের  প্রস্তুতি নেয়নি সরকারি সংস্থা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিসি) বিষয়ে সিপিসি কক্সবাজার আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক হাসানুল আমিন জনকণ্ঠকে বলেন, সাগরে এখন নম্বর সতর্ক সংকেত চলছে। নম্বর সতর্ক সংকেত দেওয়া হলে আমরা আমাদের কাজ শুরু করি। এরমধ্যে পাড়ায়-পাড়ায় মাইকিং, গণসংযোগ প্রচার অন্যতম।

এদিকে শুক্রবার বেলা তিনটার পর আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিম্নচাপটি উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে শুক্রবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮০৫ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৪০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৬৫ কিমি দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৩০ কিমি দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ঘনীভূত হতে পারে।

×