রুমেল খান ॥ প্রথমবার অংশ নিয়েই শিরোপা জেতার উল্লাস। পরের আসরেই সেই চিত্তসুখ মিলিয়ে গিয়েছিল ফাইনালে হেরে। এবার আবারও সুযোগ এসেছে সেই একই প্রতিপক্ষকে ফাইনালে হারিয়ে বদলা নিয়ে শিরোপা পুনরুদ্ধারের। পারবে কি লাল-সবুজের বাংলার বাঘিনীরা?
সেটার উত্তর জানতে হলে আজ সন্ধ্যা ৬টায় চোখ রাখতে হবে অনলাইনভিত্তিক মাইকুজো টিভির পর্দায়। যেখানে সাফ অনুর্ধ-১৫ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে ভারতের। ভুটানের চাংলিমিথান স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে জমজমাট এই খেলাটি।
মজার ব্যাপারÑ সাফ অনুর্ধ-১৫ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের এই আসরে বাংলাদেশ-ভারত উভয় দলই এ নিয়ে টানা তৃতীয়বার ফাইনালে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। উভয় দলই শিরোপা জিতেছে একবার করে। ২০১৭ আসরে ঢাকায় ফাইনালে বাংলাদেশ ১-০ গোলে এবং ২০১৮ আসরে ভুটানে ফাইনালে ভারত একই ব্যবধানে হারায় বাংলাদেশকে। চলতি আসরে দু’দলই অপরাজিত দল হিসেবে ফাইনাল খেলবে।
‘ফাইনাল খেলাটি যথেষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। যে কোন দলই জিততে পারে। সবার জন্য ফিফটি ফিফটি চান্স।’ জনকণ্ঠের সঙ্গে ফেসবুক আলাপচারিতায় বাংলাদেশ দলের কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটন এমনটাই জানান। সেই সঙ্গে একটি দুঃসংবাদও দেন, ‘দলে একটি ইনজুরি সমস্যা আছে। আমাদের অধিনায়ক ফরোয়ার্ড শামসুন্নাহার জুনিয়র গ্রোয়েন ইনজুরিতে পড়েছে। আমাদের হাতে এখনও বেশ কয়েকঘণ্টা সময় আছে ফাইনালের আগে। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি শামসুন্নাহারকে ফিট করে তোলার জন্য। ওর জন্য শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করব। দেখা যাক কি হয়।’
ভারত নিঃসন্দেহে শক্তিশালী দল। বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। কাজেই তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ আক্রমণাত্মক ধাঁচেই খেলবে। সবশেষে ছোটন জানান, তার দলের মেয়েদের মনোবল খুব ভাল আছে এবং সোমবার দলের সবার রিকভারি ট্রেনিং হয়েছে। শিরোপা জেতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।
এ পর্যন্ত দু’দল মুখোমুখি হয়েছে চারবার। জিতেছে বাংলাদেশ ২ বার, ১ বার জয় ভারতের। ১টি ম্যাচ ড্র হয়। ২০১৭ আসরে রাউন্ড রবিন লীগ পদ্ধতিতে গ্রুপপর্বে ভারতকে ৩-০ গোলে হারায় লাল-সবুজরা। ফাইনালে আবারও মুখোমুখি হয় দু’দল। ফাইনালে আবারও ভারতকে হারায় স্বাগতিক বাংলাদেশ, এবার ১-০ গোলে। পরের আসরটি হয় ২০১৮ সালে ভুটানে। ফাইনালে বাংলাদেশকে ১-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা জেতার পাশাপাশি বদলাও নিয়ে নেয় ভারত। সর্বশেষ চলতি আসরে লীগপর্বে দু’দল ১-১ গোলে ড্র করে।
এই আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভুটানকে ২-০ গোলে হারিয়ে শুভ সূচনা করেছিল বাংলাদেশ। পরের ম্যাচে নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ। পক্ষান্তরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারত ৪-১ গোলে উড়িয়ে দেয় নেপালকে। পরের ম্যাচে ভুটানকে বিধ্বস্ত করে ১০-১ গোলে।
এবার লীগপর্বে দু’দলই পরস্পরের মুখোমুখি হলেও কেউ কাউকে হারাতে পারেনি। তবে ভারত গোল করেছে বেশি (১৫টি, এই আসরের সর্বাধিক), বাংলাদেশ করেছে কম (৫টি)। তবে গোল হজমের ক্ষেত্রে এগিয়ে বাংলাদেশই (২টি, ভারত ৩টি)।
এই আসরে তিন দেশ পাকিস্তান, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা অংশ নেয়নি। ফলে দলের সংখ্যা কম (৪টি) হওয়াতে লীগ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে তৃতীয়বারের মতো আয়োজিত এই আসর। যাতে এক ম্যাচ হাতে রেখে ফাইনাল খেলা নিশ্চিত করে ফেলে বাংলাদেশ ও ভারত। ওই ম্যাচে উভয় দলই তাদের সেরা খেলোয়াড়দের বিশ্রামে রেখে রিজার্ভ বেঞ্চকে খেলায়। আজ অবশ্য সেরা একাদশই খেলাবে উভয় দল।
বাংলাদেশ কি পারবে ভারতকে হারিয়ে বদলা নেয়ার পাশাপাশি শিরোপা পুনরুদ্ধার করতে?