জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ চীনের চাং’ই-চার মহাকাশযানে করে চাঁদে নিয়ে যাওয়া তুলা বীজের অঙ্কুরোদগম হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির ন্যাশনাল স্পেস এ্যাডমিনিস্ট্রেশন (সিএনএসএ)। মঙ্গলবার এ ঘোষণা দিয়ে চীনের গবেষকরা চন্দ্রযান থেকে এর ছবিও প্রকাশ করেছেন। এতে দেখা গেছে, যানটির এক কোণে একটি পাত্রে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে ছোট্ট এ চারাগাছ। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস )এর আগে বিজ্ঞানীরা লেটুস উৎপাদনসহ ফুলও ফুটিয়েছেন। কিন্তু চাঁদে গাছ জন্মানোর এমন ঘটনা এটিই প্রথম। খবর বিবিসির।
এতে চাঁদে উদ্ভিদ জন্মানোর মতো পরিবেশ আছে বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। আর তাই বিষয়টিকে দীর্ঘমেয়াদী মহাকাশ গবেষণায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসাবেই দেখছেন বিজ্ঞানীরা। গত ৩ জানুয়ারি চীনের একটি রোবোটিক চন্দ্রযান সফলভাবে চাঁদের ‘অন্ধকার পিঠে’ অবতরণ করে। ওইদিন বেজিং সময় সকাল ১০টা ২৬ মিনিটে মনুষ্যবিহীন চাং’ই-৪ চাঁদের দক্ষিণ মেরুর এইটকেন বেসিন স্পর্শ করে বলে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ পেয়েছিল। মহাকাশযানটি চাঁদের ‘উল্টো পিঠের’ ভূতাত্তি¡ক বিষয় বিশ্লেষণ করবে। চা’ই-৪ মহাকাশযানের একটি কার্গোতে বায়ুরোধক কয়েকটি কন্টেইনারের মধ্যে মাটিতে তুলা ও আলুর বীজ এবং ইস্ট ও মাছির ডিম পাঠানো হয়েছে। মহাকাশযানটির সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সরাসরি কোন সংযোগ না থাকায় চাং’ই-৪কে ছবি ও তথ্য প্রথমে অন্য একটি কৃত্রিম উপগ্রহে পাঠাতে হয়, সেখান থেকে পরে সেগুলো পৃথিবীতে আসে। এখন পর্যন্ত মহাকাশযানটি প্রায় ১৭০টি ছবি তুলে তা পৃথিবীতে পাঠিয়েছে। চাঁদে উদ্ভিদ জন্মানোর মতো পরিবেশ থাকার মানে হচ্ছে, মানুষ চাঁদে ভবিষ্যত কলোনির জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস উৎপাদন করতে পারবে। মহাকাশচারীরা মহাকাশেই তাদের খাদ্য উৎপাদন করতে পারলে রসদের জন্য তাদের পৃথিবীতে ফিরে আসার প্রয়োজনও কমবে। ‘অস্ট্রেলিয়ান অ্যাস্ট্রোনমিকাল অবজারভেটরি’র কর্মকর্তা ফ্রেড ওয়াটসন নতুন অগ্রগতিকে ‘ভালো খবর’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটা মহাকাশচারীদের অপ্রতিরোধ্য একটি সমস্যা আর না থাকার ইঙ্গিতই দিচ্ছে। হয়তো ভবিষ্যতে মহাকাশচারীরা চাঁদে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে নিজেদের খাবারের জন্য প্রয়োজনীয় শস্য নিজেরাই চাষ করতে পারবে। ‘আমার বিশ্বাস এর মাধ্যমে নিশ্চিতভাবেই মহাকাশ যাত্রায় চাঁদকে বিরতির স্থান হিসেবে ব্যবহারের দারুণ সুযোগ তৈরি হবে, বিশেষ করে মঙ্গল গ্রহের দিকে যাত্রা পথে। কারণ, তুলনামূলকভাবে চাঁদ পৃথিবীর অনেক নিকটে।’
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: