স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের ৫ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ও বাংলা নববর্ষ উৎসব ভাতাসহ প্রদানসহ ১২ দফা দাবি তুলেছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি। অন্যদিকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা তাদের ১০টি সমস্যার কথা তুলে ধরে সমাধানের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
শুক্রবার রাজধানীর রাজধানীতে পৃথক পৃথক কর্মসূচীতে এসব দাবি জানিয়েছেন প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষক কর্মচারীরা। সকালে রাজধানীর মনি সিংহ-ফরহাদ স্মৃতি ট্রাস্ট ভবনে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভায় সরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের ৫ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ও বাংলা নববর্ষ উৎসব ভাতাসহ প্রদানসহ ১২ দফা দাবি জানিয়েছেন বেসরকারী স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ এম.এ. আউয়াল সিদ্দিকী সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভাপতির বক্তব্যে তিনি ১২ দফা দাবি অবিলম্বে মেনে নিয়ে তা বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।
শিক্ষকদের দাবির মধ্যে রয়েছে-পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা, বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষককে সরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের ন্যায় বেতন স্কেল, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের প্রভাষকদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে অনুপাত প্রথা বাতিল, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়/ কলেজ প্রভাষকদের চাকরি ৮ বছর পূর্তিতে বেতন গ্রেড ৯ থেকে ৭ গ্রেডে এবং পরবর্তী ৬ বছর পূর্তিতে বেতন গ্রেড ৭ থেকে ৬ গ্রেডে বেতন প্রদান।
দাবির মধ্যে আরও আছে- শিক্ষক ও কর্মচারীদের পারস্পারিক জ্যেষ্ঠতা ও অভিজ্ঞতা এমপিওভুক্তির তারিখের স্থলে প্রতিষ্ঠানে তাদের চাকরিতে যোগদানের তারিখ থেকে গণনা করা, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত সরকার অনুমোদিত প্রাথমিক শাখার জনবল কাঠামো ও বেতন স্কেল নির্ধারণ, মাধ্যমিক বিদ্যালয় উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উন্নীত হলে ও কর্মরত প্রধান শিক্ষকের কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলে অধ্যক্ষ পদে উন্নীত ও অধ্যক্ষের বেতন গ্রেড প্রাপ্তির বিধান এবং বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের আর্থিক সুবিধা প্রদানের পরিবর্তে অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ পেনশন ব্যবস্থা চালু।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পদক মিসেস বিলকিস জামান, সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ সমরেন্দ্র নাথ রায় সমর, মোঃ আব্দুল খালেক, মোঃ আব্দুল মজিদ, মোঃ শামসুল হুদা প্রামানিক, আালহাজ মোঃ ছফিউল্যাহ্ খান, মিসেস হাসিনা পারভীন, বাবু সুনীল চন্দ্র পাল, মোঃ শাহে আলম, মোঃ জহিরুদ্দিন বাবর, অধ্যাপক মোঃ ফজলুল হক খান, মোঃ শফিকুল আলম, অধ্যাপক বিপ্লব কুমার সেন, মোঃ মুজাম্মেল হক, অধ্যক্ষ মোঃ আবু তাহের প্রমুখ।
সরকারী প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের ১০ সমস্যা ॥ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের ১০টি সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন শিক্ষক নেতারা। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় সমস্যার কথা তুলে ধরেন তারা। মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নে অন্তরায়সমূহ চিহ্নিতকরণ ও সমাধান শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতি।
আলোচনা সভায় সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নূর মোহাম্মদ বলেন, প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত করতে হবে। কেউ কেউ প্রধানমন্ত্রীকে বুঝিয়েছেন এটা করার জন্য অতিরিক্ত শিক্ষক প্রয়োজন হবে। এটা ঠিক নয়, আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করে এ বিষয়টি তুলে ধরব।
সভায় যে ১০টি সমস্যার কথা তুলে ধরা হয় তার মধ্যে রয়েছে- ৯/৩/১৪ থেকে ১৪/১২/১৫ পর্যন্ত প্রাপ্য টাইম স্কেল বাস্তবায়ন সমস্যা, প্রধান শিক্ষকদের টাইমস্কেল, পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের টাইমস্কেল, প্রধান শিক্ষকদের পদোন্নতি, সেল্ফ ড্রয়িং ক্ষমতা বাস্তবায়ন, ১০ বছর পূর্তির গ্রেড, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সব উচ্চতর পদে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে আবেদন করার সুযোগ দান, প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত বাস্তবায়ন, দৈনিক টিফিন ভাতা বৃদ্ধিকরণ ও সহকারী শিক্ষক পদকে এন্ট্রি পদ ধরে প্রাথমিক শিক্ষা ক্যাডার সার্ভিস চালুকরণ।
প্রধান আলোচক মোঃ দেলোয়ার হোসেন কুসুম বলেন, নানা কৌশলে যারা বিরোধিতা করেছিলেন এবং যাদের কারণে আমাদের ভিন্ন প্লাটফর্ম থেকে কাজ করতে হয়েছে তাদের সু-বুদ্ধির উদয় হোক। আগামী দিনগুলোতে প্রধান শিক্ষকদের যে কোন সমস্যায় আমরা সক্রিয় ভূমিকা পালন করব। সমিতির সভাপতি বদরুল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষক নেতা মোঃ আমিনুল ইসলামসহ আরও অনেকে।