ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ, যা নিয়ন্ত্রণের অন্যতম প্রধান পদক্ষেপ হলো খাদ্য ব্যবস্থাপনা। শুধু তাই নয় ডায়াবেটিস হওয়ার পেছনেও খাদ্যের ভূমিকা ব্যাপক। সেজন্যই ডায়াবেটিস রোগের সুস্বাস্থ্যের ভিত্তি তৈরি হবে তার প্রতিদিনের খাদ্য গ্রহণ, খাদ্যের উপাদান নির্ধারণ ও পরিমাণের উপর।
ডায়াবেটিসের রোগীরা প্রধানত মিষ্টি লাগে এমন খাবারের প্রতি আগ্রহী থাকে। এটি সব সময় ইচ্ছাকৃত নাও হতে পারে; কেননা রক্তে গ্লুকোজ কমতে থাকলে দেহের মিষ্টি খাবার গ্রহণের প্রতি বিশেষ আকর্ষণ থাকে; সেটি রসগোল্লা, চমচম, জিলাপি, পায়েশ, সেমাই, পাকা আম, পাকাকলা থেকে শুরু করে কোমল পানীয় (কোলড্রিংকস্) পর্যন্ত বিস্তৃত। এখন পর্যন্ত ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞগণই শুধু নন, সকল চিকিৎসা গবেষক ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞগণ ডায়াবেটিসে কোমল পানীয় গ্রহণের বিপক্ষে তাদের গবেষণা ভিত্তিক দৃঢ় অবস্থান প্রকাশ করে আসছেন। এ কোমল পানীয়গুলো শুধু ডায়াবেটিসের রোগীই নন, শিশু-কিশোর ও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দৈহিক স্থ’লতার অন্যতম প্রধান কারণ। কোমল পানীয়গুলো আরও অনেক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। ডায়েট ড্রিংকস্ (কম গ্লুকোজ পানীয় বলে দাবি করা হয়) অনেকের কাছেই গ্রহণযোগ্য কোমল পানীয় বলে মনে হয়ে থাকে, ডায়াবেটিসের রোগীরাও এটির প্রতি বেশ আগ্রহী। কিন্তু এটি মোটেও সুস্বাস্থ্যকর পানীয় হিসেবে বিবেচিত হওয়ার সুযোগ নেই। ডায়েট ড্রিংকস্গুলোতে যে পরিমাণ ক্যালরি থাকে তা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য কাক্সিক্ষত নয়। তদুপরি এ পানীয়গুলোকে কম ক্যালরিযুক্ত পানীয়তে রূপান্তরিত করার জন্য যে সকল মিষ্টিকারক দ্রব্য ব্যবহার করা হয় তা দৈহিক ওজন বৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের ডায়াবেটিস নেই তারাও নিয়মিত ডায়েট ড্রিংকস্ পানের ফলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবার অতিরিক্ত ঝুঁকিতে পড়ে যাচ্ছেন। এ কোমল পানীয়গুলো ডায়াবেটিস রোগীর বিষণ্ণতা বৃদ্ধির কারণ হতে পারে, এসিডিটির সমস্যা তৈরি করে এবং বদ হজমের কারণ হতে পারে।
অতএব, সাধারণ কোমল পানীয় ও ডায়েট ড্রিংকস্ উভয়ই বর্জনীয়।
লেখক : এমবিবিএস, এমডি (এন্ডোক্রাইনোলজি ও মেটাবলিজম), এফএসিই (ইউএসএ), এফআরএসএম (লন্ডন)
মোবাইল : ০১৯১৯০০০০২