ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত

ইবি সংবাদদাতা 

প্রকাশিত: ১৮:১৯, ২৪ জানুয়ারি ২০২৩; আপডেট: ১৮:৫৫, ২৪ জানুয়ারি ২০২৩

ইবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ছবি: জনকণ্ঠ। 

শিক্ষক সমিতি, শাপলা ফোরাম ও শাখা ছাত্রলীগের আশ্বাস পেয়ে আন্দোলন স্থগিত করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ল’ এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা। 

মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে আন্দোলন স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে সকাল ১০টার দিকে প্রশাসন ভবনের সামনে তারা অবস্থান নেন। পরে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তবে এতে কোনো সমাধান হয়নি বলে জানান শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে তারা কর্তৃপক্ষের অসৌজ্যমূলক আচরণের অভিযোগ তুলেন।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, মীর মশাররফ হোসেন একাডেমিক ভবনের চতুর্থ তলার নির্মাণকাজ  সম্পন্ন হলে তাদের বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে জানা যায়। কিন্তু নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ার পর চতুর্থ তলার একটি অংশে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অফিস করা হবে বলে জানতে পারেন শিক্ষার্থীরা। ফলে গত ১৮ জানুয়ারি চতুর্থ তলার দুই পাশে (উত্তর ও পূর্ব) আসবাবপত্র স্থানান্তর করেন। পরদিন বুধবার থেকে তারা বিভাগীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে সেখানে অবস্থান নেন। সেখানে অবস্থানকালে শিক্ষার্থীরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিভিন্ন হুমকির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেন। এসব ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে গত শনিবার মানববন্ধন ও উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

উপাচার্য ক্যাম্পাসে না থাকায় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান স্মারকলিপি নেন। ফলে উপাচার্য ক্যাম্পাসে না আসা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা অপেক্ষা করেন এবং রবিবার ও সোমবার মীর মশাররফ হোসেন একাডেমিক ভবনের চতুর্থ তলায় দিনব্যাপী অবস্থান নেন। পরে মঙ্গলবার উপাচার্য ক্যাম্পাসে ফিরলে শিক্ষার্থীরা সকাল ১০টার দিকে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেন। এরপর সোয়া ১১টার দিকে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করেন। এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান না হলে দুপুর ১২টার দিকে প্রশাসন ভবনের সামনেই শিক্ষার্থীরা অনশনের ঘোষণা দেন। পরে বেলা একটার দিকে শাপলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার, শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত ও সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় এসে ‘যৌক্তির দাবি' উল্লেখ করে সমাধানের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা এতদিন ভিসি স্যার আসার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। তিনি আজকে (মঙ্গলবার) ক্যাম্পাসে আসার পর আশা নিয়ে গিয়ে হতাশ হয়েছে। তিনি আমাদের দাবির বিষয়ে কোনো সমাধান দিতে পারেননি। সাক্ষাতের সময় কর্তৃপক্ষের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আমাদের কথাগুলো ভালোমতো বলতে দেওয়া হয়নি। উল্টো আমাদের মেন্টাল টর্চার করা হয়েছে।’

শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, ‘দুইজন শিক্ষক প্রতিনিধি ও ইবি ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা আমাদের বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা মেনে নিয়ে আন্দোলন স্থগিত করেছি। আমরা আগামীকাল (বুধবার) থেকে ক্লাসে ফিরবো। তবে আমাদের দেওয়া আশ্বাস বাস্তবায়ন না হলে ফের আন্দোলনে ফিরবো।’

শাপলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক। দাবির বিষয়ে আশ্বস্ত করে আমরা তাদের ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরতে বলেছি এবং তাদের দাবির সাথে একমত পোষণ করেছি। তারা আমাদের কথা মেনে নিয়ে আন্দোলন স্থগিত করেছে।’

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে আমরা একমত। ভবনটির চতুর্থ তলার কাজ সম্পন্ন হলে চাহিদা অনুযায়ী যেন তারা বরাদ্দ পায় এ বিষয়টি আমরা দেখবো।’

উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘ভবনটির চতুর্থ তলার কাজ এখনও শেষ হয়নি। ঠিকাদার কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার পর ইকুয়িটির ভিত্তিতে যত দ্রুত সম্ভব কক্ষ বন্টন করা হবে।’

এমএইচ

×