ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

কখনও মুষলধারে কখনও মাঝারি মাত্রায় বৃষ্টি

প্রকাশিত: ১০:৫২, ৯ আগস্ট ২০১৯

কখনও মুষলধারে কখনও মাঝারি মাত্রায় বৃষ্টি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিম্নচাপের প্রভাবে সারাদেশে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। এর প্রভাবে রাজধানী ঢাকায় বুধবার রাত থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়। থেমে থেমে বৃহস্পতিবার সারাদিনই চলে। কখনও মুষলধারে আবার কখনও মাঝারি মাত্রায় এই বৃষ্টিতে নাকাল ছিলেন ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রীরা। রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকার সড়ক ও অলিগলি পানিতে তলিয়ে যায়। দেখা দেয় ব্যাপক জলাবদ্ধতা। এদিকে মুষলধারার বৃষ্টির কারণে কোথাও পরিবহন সঙ্কট দেখা দেয়। আবার কোথাও যানজটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে দেখা গেছে পরিবহনগুলো। এদিকে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকায় ৭৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা এই বছরের এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এরপরেই সাতক্ষীরায় ৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানায়, গত জুনে দেশে মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করলেও পুরো বর্ষা মৌসুম রাজধানী প্রায় বৃষ্টিহীন থেকেছে। তবে মাঝে মাঝে বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টির দেখা মিললেও উল্লেখ করার মতো বৃষ্টি এর আগে রেকর্ড হয়নি। বৃহস্পতিবার রেকর্ড করা বৃষ্টিই এ বছরের সর্বোচ্চ বলে তারা উল্লেখ করেন। বলেন, মৌসুমি নি¤œচাপের কারণে শুরু হয়েছে। আজও তা অব্যাহত থাকবে বলে জানা গেছে। ফলে বৃষ্টির দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে ঈদে মানুষের ঘরে ফিরতে হবে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে রাজধানীর প্রতিটি রুটে। সকালে রাস্তায় বের হয়েই তারা ভিজেপুরে একাকার হয়েছেন। পরিবহন স্বল্পতার কারণে ব্যাগ পেটরা নিয়ে বৃষ্টি মধ্যে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ভিজতে হয়েছে প্রায় সবাইকে। ঘরে ফেরা লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে বাড়ি ফিরতে আগেই টিকেট সংগ্রহ করেছেন। এখন সময়মতো বাস কাউন্টারে পৌঁছাতে না পারলে বাড়ি ফেরা হবে না। এ কারণে ভিজেপুরেই সবাইকে বাস কাউন্টারে হাজির হতে হয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ভারতের উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে অবস্থানরত মৌসুমি নি¤œচাপের প্রভাবেই এই বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। তাদের রেকর্ড অনুযায়ী সারাদেশে কমবেশি বৃষ্টি হচ্ছে। জেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ জনকণ্ঠকে বলেন মৌসুমি নি¤œচাপের কারণে আজ শুক্রবারও বৃষ্টিপাত হবে। তবে শনিবার থেকেই বৃষ্টি কমে আসতে পারে। এরপর দুদিন বিরতি দিয়ে আবার বৃষ্টি শুরু হতে পারে। ফলে সোমবার পবিত্র ঈদ-উল-আজহার দিনে সারাদেশে বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টিপাত হবে পারে। এরপর ধারাবাহিকভাবে আগস্টে আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মৌসুমি নি¤œচাপটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ভারতের ঝাড়খ- ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশ দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে এবং গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত আছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। এদিকে সারাদিন বৃষ্টির কারণে রাজধানীর বেশিরভাগ সড়ক ও অলিগলি পানিতে তলিয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে সাধারণ পথচারীদের ব্যাপক ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করতে হয়েছে। সরেজমিন রাজধানীর মিরপুর এক নম্বর এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে ওভারব্রিজের আশপাশের সব রাস্তা প্রায় হাঁটুসমান পানিতে তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন পরিবহনের যাত্রী এবং পথচারীদের পানির মধ্যে ভিজেপুরে চলাচল করতে দেখা গেছে। এদিকে এই জলাবদ্ধতার কারণে মিরপুর চিড়িয়াখানা থেকে গুলিস্তানগামী অনেক সিএনজি চালিত পরিবহন চলাচল করতে পারেনি। ফলে ওই এলাকায় দেখা দেয় ব্যাপক পরিবহন সঙ্কট।
×