ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন আজ

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ২৫ জুলাই ২০১৮

নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন আজ

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন আজ। এবারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে গোলযোগপূর্ণ ও অনিশ্চিত এক পরিবেশে। প্রার্থীরা এবার একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে অনেক কাদা ছোড়াছুড়ি করেছেন। প্রচারাভিযানের জন্য প্রার্থীরা সম্ভাব্য সব মাধ্যমই ব্যবহার করেছেন। খবর ডন ও এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের। খবরে বলা হয়, এবারের নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে ইসিপি। দেশটিতে এবারের সাধারণ নির্বাচনে সামরিক বাহিনী প্রভাব খাটাচ্ছে বলে অনেক পর্যবেক্ষক মনে করেন। নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রগুলো থাকবে সেনা ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর অধীনে। করাচীর ভোটকেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। করাচীতে গত তিন দশক ধরে এমকিউএম শক্তিশালী হলেও এবার প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের কারণে তারা নিজেদের ইচ্ছা মতো প্রচারাভিযান চালাতে পারেনি। প্রচুর নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন ছাড়াও সেখানকার ভোটকেন্দ্রগুলোতে ২০ হাজার সিসিটিভি বসানো হয়েছে। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ব্যালট পেপারসহ অন্যান্য নির্বাচনী সামগ্রী ভোটকেন্দ্রগুলোতে পাঠান হয়েছে। ৬৫ শতাংশ ভোটকেন্দ্র স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত করেছে কর্র্তৃপক্ষ। বিভিন সূত্রে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী হামলা সত্ত্বেও প্রার্থীরা ব্যাপকভাবে প্রচারাভিযান চালিয়েছেন। প্রায় প্রতিটি মিছিল ও সমাবেশেই প্রচুর লোক হয়। প্রার্থীরা সবাই নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় ভোটারদের সঙ্গে জনসংযোগ করেন। প্রচারাভিযানকালে সন্ত্রাসী ও আত্মঘাতী হামলায় দুই শতাধিক মানুষ মারা গেছে। তেহরিক-ই ইনসাফ দলের প্রার্থী ইশরামুল্লাহ গান্দপুর রবিবার ডেরা ইসমাইল খানে আত্মঘাতী হামলায় নিহত হয়েছেন। মাত্র কয়েকদিন আগেই বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির (বিএপি) প্রার্থী সিরাজ রাইসানির মিছিলে বোমা হামলায় দেড় শতাধিক ব্যক্তি প্রাণ হারান। ওই হামলায় রাইসানি নিজেও নিহত হন। পেশোয়ারে আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টির (এএনপি) প্রার্থী হারুন বিলোরও হামলায় নিহত হন। অন্যদিকে জমিয়ত উলামা ইসলাম-ফজলের প্রার্থী আকরাম খান দুররানি প্রচারাভিযানকালে সন্ত্রাসী ও আত্মঘাতী হামলা বেঁচে গেছেন। এবারের নির্বাচন আগের যে কোন নির্বাচনের চেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন প্রচার ও সোশ্যাল মিডিয়াকে পুরোপুরি কাজে লাগান হয়েছে। সারাদেশ জুড়ে মূলধারার টিভি নেটওয়ার্কে পরিকল্পিতভাবে তৈরি এ্যাড প্রচার করা হয়েছে। ইলেকশন কমিশন অব পাকিস্তান (ইসিপি) অবশ্য ইলেকট্রনিক মিডিয়ার জন্য আচরণবিধি ঠিক করে দিয়েছিল। তবে এক্ষেত্রে স্পষ্ট কোন সীমারেখা ছিল না। তবে সোশ্যাল মিডিয়া হয়ে উঠেছিল আসল যুদ্ধক্ষেত্র। পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন), পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) মধ্যে মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। পিপিপি এর আগে একাধিকবার ক্ষমতায থাকলেও এবারের নির্বাচনে তাদের অবস্থান ততটা শক্তিশালী নয় বলেই মনে হচ্ছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের নেতৃত্বাধীন পিএমএল-এন এবং সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পিটিআইর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। দুই দলই একে অন্যের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়েছে, ভোটারদের দুর্নীতি মুক্ত দেশ গড়ার এবং জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির নেতৃত্বে পিপিপি পাঞ্জাবে নির্বাচনী সমাবেশ করেছে। প্রদেশটিতে পিপিপির অবস্থান ঐতিহাসিকভাবেই দুর্বল বলে ধারণা করা হয়। মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর বাইরে ছোট আঞ্চলিক দলের মধ্যে রয়েছে মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট (এমকিউএম) এবং পাকিস্তান সারাজমিন পার্টি উল্লেখযোগ্য। এই দলগুলোও তাদের মতো নির্বাচনী প্রচারাভিযান চালিয়েছে। খাইবার পাখতুনখোয়া এলাকায় প্রভাবশালী এএনপি এবং মুত্তাহিদা মজলিশ-ই আমলকেও (এমএমএ) প্রচারাভিযান চালাতে দেখা গেছে। প্রদেশটি যথেষ্ট নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকার পরও বান্নু, করক, ডেরা ইসমাইল খান ও মার্দানসহ প্রদেশের উত্তরাংশেও দল দুটির উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
×