ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

আগোরার চেয়ারম্যান নিয়াজ রহিমের জেল, পরে জামিন

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭

আগোরার চেয়ারম্যান নিয়াজ রহিমের জেল, পরে জামিন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভেজাল ঘি বিক্রির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আগোরা চেয়ারম্যান নিয়াজ রহিমকে জেল দিয়েছে আদালত। পরে আপিল করার শর্তে তিনি জামিন পান বলে আদালত সূত্র নিশ্চিত করেছে। বৃহস্পতিবার একই অভিযোগে দুই মামলায় ঢাকার বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতের বিচারক বিশেষ মহানগর হাকিম মাহবুব সোবহানী এই রায় দেন। হাকিম জানান, এদিন ঢাকা দক্ষিণের নগর ভবনের দশ তলায় বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতে রায় ঘোষণার পরপরই নিয়াজ রহিমকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি জানান, ভেজাল খাদ্য বিক্রির অভিযোগে মামলা দুটি হয়েছিল ২০০৮ সালে। দুটি মামলাই হয়েছে ঘিয়ে ভেজাল পাওয়ার অভিযোগে। মামলার বাদী ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের স্যানিটারি ইনস্পেক্টর ফখরুদ্দীন মোবারক জানান, নয় বছর আগে করা ভেজাল পণ্য বিক্রির অভিযোগে দুই মামলায় চেইন সুপার শপ আগোরার চেয়ারম্যান নিয়াজ রহিমকে কারাদণ্ড দিয়েছে বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত। দুটি মামলাতেই তার এক বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা হয়েছে। ইনস্পেক্টর ফখরুদ্দীন মোবারক জানান, ২০০৮ সালে আগোরার মগবাজার শাখা থেকে ‘অনীল ঘোষের স্পেশাল গাওয়া ঘি’ এবং ‘কুষ্টিয়া গাওয়া ঘি’ নামে দুটি ব্র্যান্ডের ঘিয়ের নমুনা জব্দ করেন তারা। এরপর পরীক্ষায় পাঠান হলে দুটি নমুনাতেই ভেজাল পাওয়া যায়। এতে দুইটি মামলা হয়। বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতে করা এই মামলার বিরুদ্ধে আগোরার চেয়ারম্যান বিচারিক আদালতে আবেদন করে হেরে যান। এরপর তিনি উচ্চ আদালতে রিট করলে সেখানেও হাইকোর্ট এই মামলা চলবে বলে নির্দেশ দেন। এরপর আগোরা মালিক আপীল বিভাগে যান। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালতও তার বিরুদ্ধে রায় দেয়। এরপর মামলাটি চলে বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতে। বৃহস্পতিবার শুনানি চলাকালে আদালতে উপস্থিত ছিলেন আগোরা চেয়ারম্যান নিয়াজ রহিম। বিচারক আদেশ দেয়ার পর তাকে সেখান থেকেই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এই মামলায় নিয়াজ রহিমের আইনজীবীরা আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল করা হবে বলে জানান। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, আগোরার চেয়ারম্যান নিয়াজ রহিম ব্যবসায়ী গ্রুপ রহিমআফরোজ গ্রুপের একজন পরিচালক। এই গ্রুপের আরও কয়েকটি কোম্পানির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন তিনি। তবে আগোরার ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ এখন রয়েছে ইক্যুইটি ফান্ড ব্রামার এ্যান্ড পার্টনারস এ্যাসেটস ম্যানেজমেন্ট বাংলাদেশের হাতে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, দীর্ঘ দেড় যুগে নগরবাসীর বাজার করার অভ্যাস পাল্টে দিয়েছে সুপার শপগুলো। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দোকান, দামদরের ঝক্কি নেই। এক জায়গায় অনেক ধরনের নিত্যপণ্যের পাশাপাশি ঘরের প্রয়োজনীয় অনেক জিনিসপত্র পাওয়া যায় বলে সুপার শপগুলো জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে। রাজধানীর পাশাপাশি এই ধরনের দোকান এখন বিভাগীয় শহরের পাশাপাশি জেলা শহরগুলোতেও চালু হচ্ছে। তবে প্রায়ই সুপার শপগুলোতে মেয়াদোত্তীর্ণ ও ভেজাল পণ্য বিক্রি, ওজনে কারচুপিসহ নানা অভিযোগ উঠে। ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে নামী-দামী প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরিমানা, কারাদণ্ডসহ সাজাও দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। একাধিকবার সাজা পেয়েছে আগোরাও। তবে কোন প্রতিষ্ঠানের মালিককে এই প্রথম সাজা দেয়া হলো নিয়াজ রহিমকে। রাজধানী যে কয়েকটি সুপার শপ পণ্য বিক্রি করে তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আগোরা। নিত্য প্রয়োজনীয় ও মানসম্পন্ন পণ্য একই ছাদের নিচে পৌঁছে দেয়ার স্লোগানকে সামনে রেখে ২০০১ সালের ২৪ আগস্ট ধানমন্ডির রাইফেলস স্কয়ারে যাত্রা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে রাজধানীতে প্রতিষ্ঠানটির ১৫টি বিক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। ২০১৫ সালে ‘শ্রেষ্ঠ ব্র্যান্ড এ্যাওয়ার্ড পায় প্রতিষ্ঠানটি।
×