ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

চাঁপাইয়ে চার ইটভাঁটি বন্ধের নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৩:৫০, ৯ জুন ২০১৭

চাঁপাইয়ে চার ইটভাঁটি বন্ধের নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ শেষ পর্যন্ত পরিবেশ অধিদপ্তর শিবগঞ্জ সীমান্ত এলাকার তিনটি ইটভাঁটি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। এগুলো হচ্ছেÑ শ্যামপুর ইউনিয়নের মেসার্স সেভেন স্টার ব্রিক্স, মেসার্স সাথী ব্রিক্স, মেসার্স রনি ব্রিক্স-১ ও রনি ব্রিক্স-২। রাজশাহী পরিবেশ অধিদফতর এক মাসের সময় সীমা বেঁধে দিয়ে নোটিস জারি করে বলেছে ভাটা বন্ধ করা নতুবা এলাকা স্থানান্তর করতে হবে। এই চারটি ইটভাঁটির কারণে পরিবেশের মারাত্মক দূষেণ বেশ কিছু স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা ক্লাসে অনুপস্থিতসহ একাধিক আম বাগান ও ফসলের জমি নষ্ট হচ্ছিল। সাম্প্রতি এই চারটি ইটভাঁটি বন্ধের দাবিতে স্থানীয় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ এলাকার পাঁচ হাজার লোক মানববন্ধন করে স্মারকলিপি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ও স্থানীয় প্রশাসনকে দিয়েছিল। এসব ইটভাঁটির অধিকাংশের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও অবৈধভাবে চালু রেখেছিল। ইটভাঁটি মালিকরা এতটাই প্রভাবশালী ছিল যে প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে ইটভাঁটি চালিয়ে আসছিল। ইটভাঁটির কারণে ৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ১৬ কিলোমিটার রাস্তা ও সহস্রাধিক একর ফসলের জমি ও আম বাগান ধ্বংসের মুখে পড়েছিল। এলাকাবাসীর অভিযোগ সব চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর জেলা প্রশাসক উদ্যোগী হয়ে মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করলে তদন্তে নামে উর্ধতন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তারা তদন্তে দেখে যে কালো ধোঁয়ার কারণে ৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী শাসকষ্ট, এ্যাজমা, ঠা-াসহ নানান রোগে আক্রান্ত হয়েছে। পাশাপাশি ১৬টি আম বাগান ও সহস্রাধিক একর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। ইটভাঁটির পাশে খড়কপুর থেকে শাহবাজপুর পর্যন্ত ১৬ কিলো সড়ক একেবারে ভেঙ্গে চুরে গুড়িয়ে দিয়েছে শতাধিক ট্রলার, বটবটি ও ট্রাকটর চলাচলে ইট বহন এসব যানবাহন ব্যবহার করা হয়। শিবগঞ্জ এলাকায় ২৬টি ভাটার পাশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তা ও আম বাগান রয়েছে। জেলা প্রশাসক জানান শুধু শিবগঞ্জে নয়, জেলার কোথাও আইনসঙ্গত ভাবে ইটভাঁটি স্থাপন করা হয়নি। বার বার এসব ভাটা স্থানান্তরের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। ইটভাঁটি মালিকরা হাইকোর্টে রিট করে জেলার ১০৮টি ইটভাঁটির মধ্যে ৮৫টির স্থানান্তর স্থগিতের আদেশ আনায়নে প্রশাসন বেকায়দার মধ্যে পড়েছিল। তারপরেও উচ্চ আদালতের আদেশ বহাল রেখেছে এর বাইরে এখন পর্যন্ত ৪টি ইটভাঁটিকে বন্ধের নির্দেশ দিতে বাধ্য হয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এদিকে বৈধ ভাঁটির পাশাপাশি প্রভাবশালী ক্ষমতাধরদের প্রশ্রয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অবৈধ ভাটার পরিমাণ আরও শতাধিক রয়েছে জেলার অভ্যন্তরে। তারা ফসলের মাটি কেটে ইট বানাচ্ছে।
×