ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এলাকাবাসীর ক্ষোভ

যমুনার তীরে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ বন্ধ

সংবাদদাতা, চৌহালী, সিরাজগঞ্জ

প্রকাশিত: ২১:৩৫, ৬ ডিসেম্বর ২০২২

যমুনার তীরে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ বন্ধ

ছয় শ’ কোটি টাকার স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরের দক্ষিণে যমুনার ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বিস্তীর্ণ এলাকা

এনায়েতপুরে সাড়ে ছয় কিলোমিটার স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ ছয় মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। কাজ শুরু করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠাকে বারবার চিঠি দেওয়া হলে চলতি ডিসেম্বরের শুরুতেও কাজ শুরু হয়নি। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। চৌহালী উপজেলাধীন এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে শাহজাদপুর উপজেলার পাচিল পর্যন্ত সাড়ে ছয় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সাড়ে ছয়শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য এ বছরের ফেব্রয়ারি মাসে প্রকল্প অনুমোদন দেয় একনেক।

এর পর টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে ১৭টি প্যাকেজে গত মার্চ মাস থেকে কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে যমুনা নদীতে পানি বাড়তে থাকে। পানি বাড়ার কারণে গত জুন মাস থেকে প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
জানা যায়, যমুনা নদীতে পানি বাড়ার কারণে গত জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে সিরাজগঞ্জে বন্যার সতর্কবার্তা জারি করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে নদীর চরাঞ্চলে বন্যা দেখা দেয়। চলতি বছরে যমুনা নদীতে দফায় দফায় পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেলকুচি, এনায়েতপুর ও চৌহালী উপজেলার দক্ষিণে নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে।

জালালপুর এলাকার আব্দুস সালাম বলেন, নদীভাঙনে এলাকার মানুষ নিঃস্ব হয়ে গেছে। এভাবে নদী ভাঙতে পারে তা আগে কখনো দেখিনি। এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল এই এলাকায় স্থায়ী বাঁধের। প্রধানমন্ত্রী দাবি পূরণ করেছেন। কাজ শুরু হওয়ার মাঝপথে চলে যায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যে কারণে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে। বসতভিটা হারিয়ে অনেকে এখন পথে বসেছে।

১১নং প্যাকেজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এআরসি কনস্ট্রাকশনের ম্যানেজার আকরাম হোসেন বলেন, এনায়েতপুরে বাঁধের কাজ শুরু করার জন্য আমাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। কাজের জন্য ইতোমধ্যে জমি নেওয়া হয়েছে। পাথর নিয়ে একটু ঝামেলা ছিল। পাথরের দাম বেড়েছে। সেই ঝামেলা শেষ হয়েছে। নদীতে বালুর বস্তা ফেলার কাজ শেষ হয়েছে।

পাথর আসলে ব্লক তৈরি করে নদীর তীরে বসানো হবে। চলতি মাসে কাজ শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার বলেন, চলতি বছরের মার্চ মাসে এনায়েতপুরে সাড়ে ছয় কিলোমিটার স্থায়ী বাঁধের নির্মাণকাজ শুরু হয়। কিন্তু জুন মাসের শুরুতে যমুনা নদীতে পানি বাড়ায় কাজ বন্ধ রাখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

কাজ শুরু করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, নদীতে ড্রেজিং করে তীরে মাটি ফেলা হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্লক নির্মাণকাজ শুরু হবে। আশা করছি, চলতি মাসেই কাজ শুরু হবে এবং আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারব।

×