
বল হাতে ৩ উইকেট ও দু’টি রানআউট করে জয়ের ভিত গড়ে দেন পেসার তাসকিন
কলম্বোয় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাওয়া স্মরণীয় সাফল্যের (২-১ সিরিজ জয়) রেশ নিজ আঙিনাতেও ধরে রাখল বাংলাদেশ। মিরপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টি২০তে ৭ উইকেটের দাপুটে জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল টাইগাররা। রবিবার হোম অব ক্রিকেট শেরেবাংলায় টস জিতে ফিল্ডিং নেন লিটন দাস। অধিনায়কের সিদ্ধান্তের যথার্থতা প্রমাণ করে জয়ের ভিত গড়ে দেন বোলাররা। ১৯.৩ ওভারে মাত্র ১১০ রানে গুটিয়ে যায় সালমান আলি আগার পাকিস্তান।
সফরকারীদের হয়ে ফখর জামান ৪৪, খুশদিল শাহ ১৭ ও আব্বাস আফ্রিদির ২২ ছাড়া আর কেউ দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। তাসকিন আহমেদ ৩, মুস্তাফিজুর রহমান ২, শেখ মেহেদি ও তানজিম সাকিব নিয়েছেন ১টি করে উইকেট। রান তাড়ায় বাংলাদেশের হয়ে মাত্র ৩৯ বলে ৩ চার ও ৫ ছক্কায় অপরাজিত ৫৬ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরা ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন। এছাড়া ৩৬ রান করেছেন তাওহিদ হৃদয় ও জাকের আলি অপরাজিত ১৫। একই ভেন্যুতে দ্বিতীয় টি২০ মঙ্গলবার। ছোট লক্ষ্য তাড়ায় অবশ্য ৭ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারিয়ে ধাক্কা খেয়েছিল বাংলাদেশ।
১ রান করে সাজঘরে ফেরেন তানজিদ হাসান তামিম। ঠিক ১ রানেই কাটা পড়েন অধিনায়ক লিটন। দুটি উইকেটই নেন সালমান মির্জা। এরপরই হাল ধরেন ইমন ও হৃদয়। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৬২ বলে ৭৩ রান যোগ করেন দুজনে। ২ চার ও ২ ছক্কায় ৩৭ বলে ৩৬ রান করে আউট হন হৃদয়। ৩৯ বলে ৩ চার ও ৫ ছক্কায় ৫৬ রানে অপরাজিত থেকে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন ইমন। জাকের ১০ বলে ৩ চারে করেন অপরাজিত ১৫ রান। ১১০/১০- বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তানের দলীয় সর্বনি¤œ রানের রেকর্ড।
আগের সর্বনিম্ন ১২৯/৭, ২০১৬ সালে মিরপুরেই, এশিয়া কাপে। সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেছেন ওপেনার ফখর জামান। প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পথে তাসকিন-মুস্তাফিজের কথা আলাদা করে বলতে হবে। ২০তম ওভারে ৩ বলে ৩ উইকেট হারিয়ে অলআউট হয় পাকিস্তান। যেখানে দুই শিকার তাসকিনের। মাঝেরটি রানআউট; সেটিও তাসকিনের হাতে! ম্যাচে প্রতিপক্ষের তিন রান আউটের দুটিতেই ছিলেন তাসকিন। ৩.৩ ওভারে ২২ রান দিয়েছেন ডানহাতি এ পেসার। ৪ ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে মুস্তাফিজ নিয়েছেন ২ উইকেট। টি২০তে বাংলাদেশিদের মধ্যে বোলিংয়ে ৪ ওভারের কোটা পূর্ণ করা বোলারদের তালিকায় যা নতুন রেকর্ড। এর আগে রিশাদ হোসেন, তানজিম হাসান ও মোস্তাফিজ নিজে ৪ ওভারে ৭ রান দিয়েছিলেন।
আগে ব্যাট করতে নেমে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে পাকিদের ব্যাটিং লাইন। কেবল তিনজন ছাড়া কেউই ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্কের ঘর। দ্বিতীয় ওভারে ওপেনার সাইম আইয়ুবকে (৬) ফিরিয়ে শুরুটা করেন তাসকিন। পরের ওভারে তিনে নামা মোহাম্মদ হারিসকে (৪) ফেরান স্পিনার শেখ মাহেদি। অধিনায়ক সালমান আলি আগাও পারেননি টিকতে। তানজিম সাকিবের বল লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন স্রেফ ৩ রানে। ষষ্ঠ ওভারে শূন্য রানে ফেরেন হাসান নওয়াজও।
ছয়ে নামা মোহাম্মদ নওয়াজ ৩ রান করে রান আউট হন। লড়তে থাকা ফখর জামান যদিও ফিফটির দিকে এগোচ্ছিলেন। তবে পারেননি পূর্ণ করতে। রান আউট হয়ে ৩৪ বলে ৪৪ রান করে ফেরেন তিনি। সপ্তম উইকেটে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন খুশদিল শাহ ও আব্বাস আফ্রিদি। কিন্তু সপ্তদশ ওভারে খুশদিলকে ফিরিয়ে ৩৩ রানের জুটি ভেঙে দেন মোস্তাফিজুর রহমান। ১১০ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে শেষ ওভার খেলার প্রস্তুতি নেয় পাকিস্তান।
তাসকিনের ওভারের প্রথম তিন বলে ৩ উইকেট হারিয়ে গুটিয়ে যায় তারা। শর্ট বলে থার্ড ম্যানে শেখ মেহেদির তালুবন্দি হন ফাহিম আশরাফ। ৫ রান করতে তার লাগে ১০ বল। এরপর রানআউট হয়ে অভিষেকে গোল্ডেন ডাকের তেতো স্বাদ পান সালমান মির্জা। টপ এজ হয়ে লিটনের গ্লাভসে জমা পড়েন আব্বাস।
সংক্ষিপ্ত স্কোর : পাকিস্তান ১১০/১০ (১৯.৩ ওভার; ফখর ৪৪, সাইম ৬, হারিস ৪, সালমান আগা ৩, হাসান নাওয়াজ ০, মোহাম্মদ নাওয়াজ ৩, খুশদিল ১৭, আফ্রিদি ২২, আশরাফ ৫, সালমান মির্জা ০, আবরার ০*; শেখ মেহেদি ১/৩৭, তাসকিন ৩/২২, তানজিম ১/২০, মুস্তাফিজ ২/৬)। বাংলাদেশ ১১২/৩ (১৫.৩ ওভার; তানজিদ ১, পারভেজ ইমন ৫৬*, লিটন ১, হৃদয় ৩৬, জাকের ১৫*; সালমান মির্জা ২/২৩, আব্বাস আফ্রিদি ১/১৬। ম্যাচ সেরা ॥ পারভেজ ইমন (বাংলাদেশ)।
প্যানেল হু