ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২০ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২

শিরোপার আরও কাছে বাংলাদেশ

ফয়সাল আহমেদ

প্রকাশিত: ০০:৫৯, ২০ জুলাই ২০২৫

শিরোপার আরও কাছে বাংলাদেশ

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গোলের পর পূজা, তৃষ্ণা ও কাননের উদ্যাপন

সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে দারুণ ছন্দে রয়েছে বাংলাদেশ। ঢাকার বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় শনিবার ফিরতি ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করে টানা পাঁচ ম্যাচ জয় পায় বাংলার বাঘিনীরা। জোড়া গোল করেছেন পূজা দাস, একটি করে গোল করেন কানন রানী বাহাদুর, শ্রী মতি তৃষ্ণা রানী ও আফঈদা খন্দকার। এই জয়ে শিরোপার আরও কাছে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। প্রথম দেখায় লঙ্কানদের ৯-১ গোলে হারিয়েছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
শিরোপা ধরে রাখতে যত বেশি সম্ভব গোল চাই। এই লক্ষ্য নিয়েই লঙ্কানদের বিপক্ষে খেলতে নামে স্বাগতিকরা। প্রথমার্ধে গোলের জন্য একের পর এক আক্রমণ করেও ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় ব্যবধান বাড়াতে পারেনি বাংলাদেশ, তবে বিরতির পর ৩ গোলের দেখা পেয়েছে। ম্যাচের ২৫ তম মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে দারুণ শটে বাংলাদেশকে এগিয়ে দেন কানন রানী বাহাদুর। ৩৮ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ এসেছিল। কিন্তু সুরমা জান্নাতের শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে দ্বিতীয় গোল করেন পূজা দাস।
বিরতির পর ব্যবধান বাড়াতে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে থাকে বাংলাদেশ। ম্যাচের ৭৩তম মিনিটে দলের তৃতীয় ও নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন পূজা। ম্যাচের ৮২ মিনিটে আরও একটি গোল করার সম্ভাবনা দেখিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু লঙ্কান গোলরক্ষকের দারুণ দক্ষতায় সেটি ঠেকিয়ে দেন। ৮৬তম মিনিটে চতুর্থ গোল করেন শ্রী মতি তৃষ্ণা রানী। ডি বক্সের  ভেতর থেকে আলতো টাচে বল জালে জড়ান তিনি। শেষ মুহূর্তের যোগ করা সময়ে পেনাল্টি পায় বাংলাদেশ। সুযোগ মিস করেননি আফঈদা। গোলরক্ষক লাফিয়ে চেষ্টা করলেও হাত স্পর্শ করে বল জড়ায় জালে।
এই ম্যাচে বাংলাদেশ কোচ পিটার বাটলার একাদশে এনেছেন পাঁচটি পরিবর্তন। নিয়মিত একাদশের বাইরে থাকা বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়কে প্রথম একাদশে সুযোগ দেন তিনি। মূল একাদশে ছিলেন না আফঈদা, স্বপ্না  রানী, উমেহলা ও মুনকি আক্তারের মতো নিয়মিত মুখ। গোলপোস্টের নিচে প্রথমবারের মতো দায়িত্ব পান ফেরদৌসী আক্তার। একাদশে জায়গা পান রুপা আক্তার, পূজা দাস, নাদিয়া আক্তার, কানন রানীরা। সুরমা জান্নাত অধিনায়কের বাহুবন্ধনী পরে দলকে নেতৃত্ব দেন।
দারুণ এ জয়ে বয়সভিত্তিক সাফে শিরোপা ধরে রাখার মিশনে শক্ত অবস্থান করে নিল বাংলার বাঘিনীরা। নিয়মে পরিবর্তন আসায় এবার আর সেমিফাইনাল বা ফাইনাল নেই। চার দলের আসরে রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে প্রতিটি দল দুবার করে একে অপরের মুখোমুখি হচ্ছে। শীর্ষ দল হবে চ্যাম্পিয়ন। টানা পাঁচ ম্যাচে ৫ জয়ে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে নেপালকে টপকে টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। পাঁচ ম্যাচে চার জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে নেপাল। এক জয়ে ৩ পয়েন্ট নিয়ে তিনে ভুটান।

চারে জয়শূন্য শ্রীলঙ্কা। সোমবার টুর্নামেন্টের শেষ ম্যাচটি অলিখিত ফাইনালে পরিণত হয়েছে। এই ম্যাচে নেপালের মুখোমুখি হবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। সেই ম্যাচে ড্র করলেই চ্যাম্পিয়ন হবে স্বাগতিকরা। যদি হেরে যায়, তাহলে হেড টু হেড বা মুখোমুখি লড়াইয়ের হিসাব আসবে বিবেচনায়। সেখানেও সমতা থাকলে দেখা হবে গোল পার্থক্যের হিসাব। প্রথম দেখায় নেপালকে ২-৩ ব্যবধানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ‘ডিফেন্ডিং’ চ্যাম্পিয়ন। ২০২৩ সালে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম সংস্করণে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। শামসুন্নাহার জুনিয়রদের দারুণ পারফরম্যান্সের সৌজন্যে নেপালকে ৩-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা মুকুট পরে তারা। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ এবার পরিষ্কার ফেভারিট। গতবার ভারত থাকলেও এবার পারিপার্শ্বিক রাজনৈতিক ইস্যুতে বাংলাদেশে দল পাঠায়নি তারা। সুযোগ পেয়েছে শ্রীলঙ্কা।

প্যানেল হু

×