ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অভিষেকেই হ্যাটট্রিকের আনন্দ ফারিহার

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:৩৩, ৭ অক্টোবর ২০২২

অভিষেকেই হ্যাটট্রিকের আনন্দ ফারিহার

ফারিহা ইসলাম তৃষ্ণা

ফারিহা ইসলাম তৃষ্ণা, পঞ্চগড় থেকে উঠে আসা ২০ বছর বয়সী বাঁহাতি পেসার। এবার টি২০ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের মূল দলে প্রথমে জায়গা হয়নি। পরবর্তীতে জাহানারা আলমের ইনজুরিতে স্কোয়াডে ডাক পেলেও খেলা হয়নি। তবে এবার এশিয়া কাপের দলে ঠিকই জায়গা করে নিয়েছেন। অবশেষে টি২০ অভিষেক হয়েছে তার বৃহস্পতিবার সিলেট স্টেডিয়ামে। অভিষেকেই গড়েছেন এক দুর্দান্ত কীর্তি, করেছেন হ্যাটট্রিক। ৪ ওভারে মাত্র ১২ রান দিয়ে হ্যাটট্রিক তুলে নিয়েছেন মালয়েশিয়া মহিলা ক্রিকেট দলের বিপক্ষে।

আর এতে দলও জিতেছে ৮৮ রানের বিশাল ব্যবধানে। ফাহিমা খাতুনের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশী হিসেবে টি২০-তে হ্যাটট্রিক করেছেন ফারিহা। বাংলাদেশের হয়ে আগেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন ফারিহা। ৫টি ওয়ানডে খেলে ৫ উইকেটও নিয়েছেন। গত বছর নবেম্বরে তার ওয়ানডে অভিষেক হয়।
অপেক্ষায় ছিলেন টি২০ ম্যাচেও অভিষেকের। অবশেষে সেটি হয়েছে বৃহস্পতিবার সিলেটে মালয়েশিয়ার বিপক্ষে। আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ ৫ উইকেটে ১২৯ রান তোলে এবং জবাবে মালয়েশিয়া গুটিয়ে যায় ১৮.৫ ওভারে ৪১ রানে। বাংলাদেশের পক্ষে সেরা বোলিং পারফর্মেন্স দেখান বাঁহাতি পেসার ফারিহা। দ্বিতীয় বোলার হিসেবেই বোলিং শুরু করেন তিনি। তবে সাফল্য পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে নিজের তৃতীয় ওভার পর্যন্ত।

দুর্ধর্ষ ফারিহা ইনিংসের পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে উইনিফ্রেড দুরাইসিংগামকে (৫) বোল্ড, তৃতীয় বলে ম্যাস এলিসাকে (০) এলবিডব্লিউ এবং চতুর্থ বলে মাহিরাহ ইসমাইলকে (০) বোল্ড করে অবিস্মরণীয় হ্যাটট্রিক করেন। নারী ক্রিকেটের ইতিহাসে আন্তর্জাতিক টি২০ অভিষেকে হ্যাটট্রিক করা মাত্র দ্বিতীয় বোলার ফারিহা। অভিষেকে হ্যাটট্রিকের আগের একমাত্র কীর্তি গড়েছিলেন নেপালের অঞ্জলি চাঁদা।

২০১৯ সালে মালদ্বীপের বিপক্ষে ২.১ ওভারে ০ রানে ৬ উইকেট নেওয়ার পথে এই স্পিনার করেন হ্যাটট্রিক। আর বাংলাদেশের হয়ে এই ফরম্যাটে প্রথম হ্যাটট্রিক করেন লেগস্পিনার ফাহিমা। ২০১৮ সালে আরব আমিরাতের বিপক্ষে ৮ রানে ৪ উইকেট নেয়ার পথে সেই কীর্তি গড়েনন তিনি।
গৌরবময় কীর্তর পর ফারিহা বলেন, ‘অভিষেক ম্যাচ ছিল, চেষ্টা করেছি নিজের ভালটা দেয়ার। হ্যাটট্রিক হয়েছে, এতে অনেক খুশি অভিষেক ম্যাচেই স্মরণীয় কিছু করতে পারছি।’ গত বছর ঘরোয়া ক্রিকেটে ১৪ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ফারিহা আলোচনার জন্ম দেন। এরপরই ওয়ানডে অভিষেক হয় তার।

সিলেটের মাঠে নিয়মিত খেলা হয় মেয়েদের ক্রিকেট, তাই এদিন টি২০ অভিষেকে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন ফারিহা। তিনি বলেন, ‘আত্মবিশ্বাস অনেক বেশি ছিল। এনসিএলে কিছু ভাল ম্যাচ খেলেছি। এই উইকেটটা আমার জন্য সৌভাগ্যের। কারণ যখনই আমি খেলি, ভাল কিছু চেষ্টা করি অথবা হয়। অভিষেক ম্যাচেই বিশ্বাস ছিল ভাল কিছু হবে বা করতে হবে।’ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ক্রিকেট খেলাটা মেয়েদের জন্য বেশ খানিকটা কঠিন। সেই কঠিন পথ পাড়ি দিয়েও পঞ্চগড় থেকে উঠে এসেছেন ফারিহা।

নিজের ক্রিকেটে আসার গল্প বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘পঞ্চগড়ে ক্রিকেটটা মেয়েদের জন্য অনেক কঠিন। ক্রিকেট বলতে ছেলেদের ছাড়া মেয়েদের কিছুই নেই। আমাদের মাঠ আছে অথচ অনুশীলন করা যাচ্ছে না। সমর্থনের কথা যদি বলেন, তাহলে বাবা-মায়ের অনেক সমর্থন পেয়েছি। ক্রিকেটে আসার পেছনে আমার স্কুলের শিক্ষক আমিনুদ্দিন স্যারের অনেক সাহায্য ছিল।’

×