ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন

‘১৭ কর্নার থেকে গোল না পাওয়া দুঃখজনক’

প্রকাশিত: ০০:০৫, ২৮ জুন ২০২২

‘১৭ কর্নার থেকে গোল না পাওয়া দুঃখজনক’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দুই ম্যাচের সিরিজ (ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ, টায়ার-১)। সিরিজ শুরুর আগে ফুটবলপ্রেমীদের সংশয় ছিল বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল যত কম গোলে হারবে, ততই মঙ্গল। এই ভাবনার পেছনে যুক্তিসঙ্গত কারণও ছিল বৈকি। কেননা প্রতিপক্ষ মালয়েশিয়া জাতীয় নারী ফুটবল দল যে বাংলাদেশের তুলনায় খুবই শক্তিশালী। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে মালয়েশিয়া যেখানে ৮৫তম অবস্থানে, সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৬। কাজেই মালয়বাহিনীর সঙ্গে এই ফিফা প্রীতি লড়াইটা তো অসম শক্তির বিরুদ্ধে হবে, এমনটাই ভাবছিলেন বাংলাদেশী ফুটবলপ্রেমীরা। এমনকি এই ভাবনার বাইরে ছিলেন না ক্রীড়া সাংবাদিকরা। প্রথম ম্যাচের আগের দিন ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে তারা বাংলাদেশ দলের কয়েক নারী ফুটবলারকে সামনে পেয়ে বলেছিলেন, ‘তোমরা কি মালয়েশিয়ার সঙ্গে পারবে? ওরা তো অনেক শক্তিশালী। র‌্যাঙ্কিংয়ে ৬১ ধাপ এগিয়ে।’ নারী ফুটবলাররা এর জবাব দেননি। তবে সংবাদ সম্মেলনে কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন এবং অধিনায়ক সাবিনা খাতুন এই প্রশ্নের জবাবে যা বলেছিরেন, তার সারমর্ম চিল অনেকটা এরকম, ‘মালয়েশিয়া র‌্যাঙ্কিংয়ে আমাদের চেয়ে এগিয়ে থাকলেও ফিটনেস, টেকনিক্যালি-ট্যাকটিক্যালি আমরাও পিছিয়ে নেই। ওদের ঘরোয়া লীগ শেষ হয়েছে। ওরা খেলার মধ্যে থাকলেও লীগ ও জাতীয় দলের অনুশীলন এক নয়। এক্ষেত্রে আমরা কয়েক মাস ধরে জাতীয় দলের অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা মালয়েশিয়ার বিরুদ্ধে ভাল খেলাই উপহার দেয়ার চেষ্টা করব এবং ভাল রেজাল্টের জন্যই খেলব।’ বাংলাদেশ দলের আরেকটা মাইনাস পয়েন্ট ৯ মাস ধরে তারা কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেনি। এই দুটি ম্যাচ তাদের জন্য সাফের প্রস্তুতিস্বরূপ (আগামী আগস্টে নেপালে অনুষ্ঠিতব্য)। এই ছিল সিরিজ শুরুর আগের চিত্র। কিন্তু সিরিজ শুরু হলে দেখা যায় বিপরীত চিত্র। কমলাপুর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রথম ম্যাচে বাংলার বাঘিনীদের কাছে বিস্ময়করভাবে ৬-০ গোলে নাস্তানাবুদ হয় মালয়বাহিনী! ফুটবলপ্রেমীরা যত না অবাক হন, তার চেয়ে বেশি হন আনন্দিত। অবশ্য অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, এটা মালয়েশিয়ার আসল জাতীয় দল কি না। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এটাই তাদের আসল দল। ফলে দ্বিতীয় ম্যাচের আগে সাবিনাদের নিয়ে তাদের প্রত্যাশার পারদ তুঙ্গে ওঠে। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনিন মনিকারা। অবশ্য তাই বলে তারা হারেননি। আবারও জেতেনওনি। করেন গোলশূন্য ড্র। ম্যাচশেষে ‘জয়সম’ ড্র করে উল্লাসে মেতে ওঠেন স্টেফিরা। আর মাথায় হাত মারিয়াদের। দর্শকরাও আক্ষেপে পোড়েন। কারণ পুরো ম্যাচে প্রবল আধিপত্য বিস্তার করেও কাক্সিক্ষত গোলের সন্ধান পায়নি স্বাগতিক দল। যদিও ১-০ ব্যবধানে সিরিজ ও ট্রফি জেতে বাংলাদেশ। তারপরও কেন এমন হলো? এর কারণ কী? বাংলাদেশ কোচ ছোটন বলেন, ‘গত ম্যাচের মতোই মেয়েরা শুরু করেছিল। ৯০ মিনিটই তারা খেলার মধ্যে ছিল। আপনারা যদি পরিসংখ্যান দেখেন, আমরা ১৭টি কর্নার পেয়েছি। আজকের দিনটা খারাপ বলা যায়। খেলায় ভাল বা মন্দ দিন বলে একটা কথা আছে, আমাদের ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে।’ ছোটন আরও বলেন, ‘আমরা ম্যাচে কিছু সুযোগ মিস করেছি। মালয়েশিয়া অতিরিক্ত রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলায় ফলাফল আসেনি। তারা আমাদের চেয়ে ৬০ ধাপ এগিয়ে থাকা দল। সেই দল এতটা রক্ষণাত্মক খেলবে ভাবিনি।’ বাংলাদেশ অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের ভাষ্য, ‘আগের ম্যাচে হারের পর ওরা নিজেদের রক্ষণে মনোযোগ দেবে, সেটাই স্বাভাবিক।’
×