ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

হ্যাটট্রিকের হ্যাটট্রিক করে হালান্ডের ইতিহাস

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২১:৩৭, ৩ অক্টোবর ২০২২

হ্যাটট্রিকের হ্যাটট্রিক করে হালান্ডের ইতিহাস

ম্যানচেস্টার সিটির হ্যাটট্রিক করা দুই ফরোয়ার্ড আর্লিং হালান্ড ও ফিল ফোডেন

এই মুহূর্তে মুগ্ধতার আরেক নাম আর্লিং হালান্ড। নরওয়ের এই উঠতি তারকা এবারই জার্মান ক্লাব বরুসিয়া ডর্টমুন্ড থেকে ইংলিশ চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটিতে এসেছেন। অথচ দলবদলের শেষ সময় পর্যন্ত তিনি স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। কিন্তু গ্যালাক্টিকোরা হালান্ডকে না নেয়ায় সুযোগটা লুফে নিয়েছে সিটিজেনরা।
আর সেটা যে তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে সেরা সিদ্ধান্ত হয়ে থাকবে তা দিবালোকের মতো স্পষ্ট। নতুন ক্লাবে সিটিতে স্বল্প সময়েই একের পর এক গৌরবময় গোলের রেকর্ড ভেঙ্গে চলেছেন ২২ বছর বয়সী হালান্ড।

উঠতি এই যুবার বিধ্বংসী মূর্তি দেখে রিয়াল কর্তারা আপসোসে নিজেদের মাথার চুল ছেঁড়া শুরু করে দিয়েছেন হয়তো! রবিবার রাতে হালান্ড আরও একটি দুর্দান্ত ম্যাচ খেলেছেন। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের ‘ম্যানচেস্টার ডার্বি’তে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে করেছেন রেকর্ডগড়া হ্যাটট্রিক। ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেছেন ইংলিশ স্ট্রাইকার ফিল ফোডেনও। দুজনের জোড়া হ্যাটট্রিকে ভর করে ম্যানইউকে ৬-৩ গোলে বিধ্বস্ত করেছে স্বাগতিক ম্যানসিটি। ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ম্যানইউর হয়ে জোড়া গোল করেন অ্যান্থনি মার্শিয়াল। অপর গোলটি করেন ডস সান্টোস।
এই জয়ে আট ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দুইয়ে আছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানসিটি। সমান ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে অবস্থান করছে আর্সেনাল। সাত ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে ম্যানইউ আছে ছয় নম্বরে। ম্যাচে হালান্ড হ্যাটট্রিক পূরণ করেন ৩৪, ৩৭ ও ৬৪ মিনিটে তিন গোল করেন। ফোডেন গোলগুলো করেন ৮, ৪৪ ও ৭৩ মিনিটে। রেড ডেভিলসদের উড়িয়ে দেয়ার ম্যাচে একাধিক রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন হালান্ড।

প্রিমিয়ার লীগে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ঘরের মাঠে (ইতিহাদ স্টেডিয়াম) টানা তিন ম্যাচে হ্যাটট্রিকের রেকর্ড গড়েছেন তিনি। এর ফলে ১৯৭০ সালে ফ্রান্সিস লি’র পর সিটির প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিকের কৃতিত্ব দেখিয়েছেন সময়ের এই সেরা তারকা। শুধু তাই নয়, ইতিহাসের মাত্র তৃতীয় সিটি খেলোয়াড় হিসেবে হালান্ড ম্যানচেস্টার ডার্বিতে হ্যাটট্রিক করেছেন। ১৯২১ সালে সর্বপ্রথম হোরাসে বার্নেস এই কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন।

ওলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্সের বিরুদ্ধে সিটির ৩-০ ব্যবধানের জয়ের ম্যাচে গোল করে হালান্ড প্রিমিয়ার লীগে প্রথম সাত ম্যাচে সর্বোচ্চ ১১ গোল করার নতুন রেকর্ড গড়েছিলেন। এ তালিকায় তিনি পেছনে ফেলেছেন কভেন্ট্রি সিটির ফরোয়ার্ড মিক কুইন্সকে। অপ্রতিরোধ্য ছন্দে এগিয়ে চলা হালান্ড এখন পর্যন্ত নতুন ক্লাব সিটির জার্সিতে প্রিমিয়ার লীগে আট ম্যাচে গোল করেছেন ১৪টি। এ্যাসিস্ট করেছেন ৩টি। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে দুই ম্যাচে করেছেন ৩ গোল। সবমিলিয়ে সবধরনের প্রতিযোগিতায় এখন পর্যন্ত সিটির হয়ে ১১ ম্যাচে ১৭ গোল করেছেন হালান্ড।
আর আট বছর পর নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে আবারও ইপিএলে টানা তিন ম্যাচ জয়ের রেকর্ড গড়েছে সিটি। ২০১৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৪ সালের নবেম্বর পর্যন্ত টানা চারটি ডার্বি জিতেছিল সিটিজেনরা। ম্যাচ শেষে ইতিহাস গড়া হ্যাটট্রিক প্রসঙ্গে হালান্ড বলেন, আমরা ছয় গোল করেছি এটা দারুণ ব্যাপার। অসাধারণ অনুভূতি। আমার রেকর্ডের চেয়ে দলের সাফল্য বড়। ফোডেনের সাথে দারুণ বোঝাপড়া প্রসঙ্গে বলেন, আমরা একে ওপরকে যেভাবে পাস দিয়ে থাকি তা দেখতে পারেন। আমরা সবসময় এগিয়ে যেতে এবং আক্রমণ করতে চাই। দলের এই ব্যাপারটা আমি ভালবাসি।

শেষ পর্যন্ত বলব এটা অসাধারণ। এছাড়া আর কিছু বলার নেই। ফুটবলে হ্যাটট্রিক করলে ম্যাচ বল ওই খেলোয়াড়ের পাওয়ার একটা রীতি আছে। তবে এ ম্যাচে দুজন হ্যাটট্রিক করায় ম্যাচ বল কে নেবেন তা নিয়ে কৌতূহল ছিল। এ বিষয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে আরেক হ্যাটট্রিকম্যান ফোডেনকে জড়িয়ে ধরে মজা করে হালান্ড বলেন, আমরা প্রথমার্ধের জন্য একটি বল নিতে পারি এবং দ্বিতীয়ার্ধের জন্য আরেকটি!
আরেক তারকা ফোডেন বলেন, ডার্বিতে খেলার মধ্য দিয়ে আমার একটা স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। সেটা সিটির একজন ভক্ত হিসেবেও। এই দলের অংশ হতে পারা দারুণ ব্যাপার।

×