ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২১ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২

বোলিং-ফিল্ডিংয়ে দুর্বার তাসকিন-মুস্তাফিজ

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:৪৭, ২০ জুলাই ২০২৫

বোলিং-ফিল্ডিংয়ে দুর্বার তাসকিন-মুস্তাফিজ

সিরিজের প্রথম টি২০ ম্যাচে সফরকারী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে উইকেট শিকারের উল্লাস বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের

স্লো উইকেট আর লো স্কোরিং ম্যাচের জন্য এমনিতে আলোচনায় থাকে মিরপুরের উইকেট। তার ওপর সাম্প্রতিক বৃষ্টির কারণে অনেকটা সময় উইকেট ছিল কাভারে ঢাকা। রবিবার শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি২০তে টস জিতে বোলারদের হাতে বল তুলে দিতে দ্বিতীয়বার ভাবতে হয়নি অধিনায়ক লিটন দাসকে। সুযোগটা দারুণভাবে কাজে লাগালেন তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শেখ মেহেদি হাসান, তানজিম হাসান সাকিব।

টাইগারদের সাঁড়াশি বোলিংয়ের মুখে অষ্টম ওভারে ৪৬ রানে ৫ উইকেট হরানো পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত ১৯.৩ ওভারে গুটিয়ে গেল ১১০ রানে। টি২০তে বাংলাদেশের বিপক্ষে এটিই তাদের দলীয় সর্বনি¤œ রান। আগের সর্বনিম্ন ১২৯/৭, ২০১৬ সালে মিরপুরেই, এশিয়া কাপে। সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেছেন ওপেনার ফখর জামান। খুশদিল শাহ ১৭ ও আব্বাস আফ্রিদির ২২ ছাড়া বাকি সাত ব্যাটারের মধ্যে আর কেউ দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন তাসকিন। আরেক পেসার মুস্তাফিজের শিকার ২ উইকেট। 
২০তম ওভারে ৩ বলে ৩ উইকেট হারিয়ে অলআউট হয় পাকিস্তান। যেখানে দুই শিকার তাসকিনের। মাঝেরটি রানআউট; সেটিও তাসকিনের হাতে! ম্যাচে প্রতিপক্ষের তিন রান আউটের দুটিতেই ছিলেন তাসকিন। ৩.৩ ওভারে ২২ রান দিয়েছেন ডানহাতি এ পেসার। ৪ ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে মুস্তাফিজ নিয়েছেন ২ উইকেট। টি২০তে বাংলাদেশিদের মধ্যে বোলিংয়ে ৪ ওভারের কোটা পূর্ণ করা বোলারদের তালিকায় যা নতুন রেকর্ড। এর আগে রিশাদ হোসেন, তানজিম হাসান ও মোস্তাফিজ নিজে ৪ ওভারে ৭ রান দিয়েছিলেন।

পাওয়ার-প্লেতে পাকিস্তানকে রীতিমতো কাঁপিয়ে দেয় বাংলাদেশ। ৬ ওভারে ৪১ রানে সফরকারীদের ৪ উইকেট তুলে নেয়। চতুর্থ বলেই উইকেট নেওয়ার সুযোগ ছিল। শেখ মেহেদি বল স্লগ সুইপ করতে দিলে শর্ট ফাইন লেগে অনেক উপরে তুলে দেন ফখর জামান। বল হাতের তালুতে পড়লেও বন্দি করতে পারেননি তাসকিন। তবে দ্বিতীয় ওভারে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন তাসকিন। ব্যাক অব লেন্থের বল ফ্লিক করতে গিয়ে ডিপ ফাইন লেগে মুস্তাফিজের হাতে ধরা পড়েন সাইম আইয়ুব (৬)। উইকেট হারালেও পাকিস্তানের রানের গতি থাকে সাবলীল। তৃতীয় ওভারে মেহেদি হজম করেন ৩টি চার।

তবে ওভারের শেষ বলে ফেরান তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা মোহাম্মদ হারিসকে (৪)। মিডউইকেটে ক্যাচ নেন শামীম হোসেন পাটোয়ারী। প্রথম ৩ ওভারে ৩২ রান স্কোরে যোগ করে পাকিস্তান। তবে পঞ্চম ওভারে ২ ও ষষ্ঠ ওভারে ১ রান দিয়ে উইকেট নেন তানজিম ও মুস্তাফিজ। সাকিব ৩ রানে ফেরান অধিনায়ক সালমান আলী আঘাকে। মোস্তাফিজ ফেরান হাসান নওয়াজকে (০)। অষ্টম ওভারে ৩ রানে রানআউট হয়েছেন দেড় বছর পর দলে সুযোগ পাওয়া মোহাম্মদ নওয়াজ। ১০ম ওভারে আরও একবার মেহেদির বলে জীবন পান ফখর।

সোজাসুজি খেলেছিলেন, বল হাতে রাখতে পারেননি মেহেদি। বলের গতিও ছিল কিছুটা বেশি, উল্টো মাথার একপাশে লাগলে আঘাত পান তিনি। তবে ইনিংসের ১৩তম ওভারে এই তাসকিনের থ্রোতে, লিটনের দারুণ স্টাম্পিংয়ে রান আউট হয়ে ফেরেন ফখর। ৩৪ বলে ৪৪ রান আসে তাঁর ব্যাট থেকে। ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও ১টি ছক্কা। সপ্তম উইকেটে খুশদিল শাহ ও আব্বাস আফ্রিদির রানের জুটিতে ১০০ পেরোয় পাকিস্তান। ১৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মুস্তাফিজের স্লোয়ারে মিড-অফে রিশাদকে ক্যাচ দিয়ে খুশদিল আউট হলে ভাঙে জুটি। ২৩ বলে ১৭ রান আসে তাঁর ব্যাট থেকে। তিন ছক্কায় ২৪ বলে ২২ রান করেন আব্বাস আফ্রিদি। 
মিরপুরে হওয়া সর্বশেষ ১০ আন্তর্জাতিক টি২০র প্রথম ইনিংসের গড় রান ১২৫। ২০২১ সালের টি২০ বিশ্বকাপের আগে এই মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডকে যথাক্রমে ৪-১ ও ৩-২ ব্যবধানে হারিয়েছিল টাইগাররা। দীর্ঘ ১৪ মাস পর মিরপুরে টি২০ খেলতে নামা বাংলাদেশ এদিন মাত্রই শ্রীলঙ্কা থেকে ঐতিহাসিক সাফল্য (২-১এ) সঙ্গী করে ফেরা সিরিজে শেষ ম্যাচে একটি মাত্র পরিবর্তন এনে মাঠে নামে। কলম্বোতে বাজে বোলিং করা শরিফুল ইসলামের জায়গা নেন তাসকিন।

প্যানেল হু

×