ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হোয়াইটওয়াশই টাইগারদের লক্ষ্য

মো. মামুন রশীদ

প্রকাশিত: ০০:২০, ১০ ডিসেম্বর ২০২২; আপডেট: ০০:২৮, ১০ ডিসেম্বর ২০২২

হোয়াইটওয়াশই টাইগারদের লক্ষ্য

..

এবারই মোক্ষম সুযোগ বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ইতিহাস রচনার। এভাবে ভারতীয় ক্রিকেট দলকে আগে কখনো বাগে পায়নি বাংলাদেশ দল। ইতোমধ্যেই ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে টাইগারদের দারুণ সুযোগ ভারতকে হোয়াইটওয়াশ করার। আজ চট্টগ্রামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে জিতে স্বাগতিকরা সেই গৌরবময় অর্জনের জন্য ঘোষণাও দিয়েছে ইতোমধ্যে। দিবারাত্রির ম্যাচটি দুপুর ১২টায় শুরু হবে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। ইতোমধ্যেই সিরিজ খুঁইয়ে বসা ভারত সম্মান রক্ষার লড়াইয়ে নামছে আরও শক্তি হারিয়ে। অধিনায়ক রোহিত শর্মাসহ পেস অলরাউন্ডার দীপক চাহার ও স্পিনার কুলদীপ সেন দেশে ফিরে গেছেন ইনজুরির কারণে। তাই দুর্বল হয়ে পড়া ভারতের জন্য আজ আরও বড় চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় তুলে নেওয়ার। আর উজ্জীবিত বাংলাদেশ চায় আরেকটি জয়ে ভারতের বিপক্ষে প্রথমবার ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিততে। এই ভেন্যুতে ২০১৫ সালে সর্বশেষ বাংলাদেশ সফরে এসে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারে ভারত। সেবারই প্রথম তাদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। কিন্তু টানা দুই ম্যাচ জেতার পর তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ভারতের কাছে ৭৭ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে। সব ম্যাচই সেবার মিরপুরে হয়েছে। এবারও সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে। টানা দুই ম্যাচ জিতে আগেভাগেই সিরিজ নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ দল। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচটি এবার হবে চট্টগ্রামে। চট্টগ্রামে ১২ বছর পর আবার পা রেখেছে ভারতীয় দল। অধিনায়ক রোহিত ইনজুরির কারণে ছিটকে যাওয়ায় ঘুরে দাঁড়ানোর ম্যাচে শক্তি হারিয়ে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে সফরকারীরা। লোকেশ রাহুলের নেতৃত্বে আজ খেলবে তারা প্রায় অপরিচিত মাঠে।

কারণ ১২ বছর আগে এই মাঠে তারা একটি টেস্ট খেলেছে। কিন্তু ওয়ানডে খেলার সুযোগ পায়নি। ২০০৭ সালে ওয়ানডে খেলতে আসলেও ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়। সেদিক থেকে ১৮ বছরেরও বেশি সময় পর আবার চট্টগ্রামে কোনো ওয়ানডে খেলতে নামবে ভারত। ২০০৪ সালে যে ওয়ানডে খেলেছে তারা সেবার এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে খেলেছে। এবার খেলতে হবে সাগরিকার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। এই মাঠেও বাংলাদেশের অতীত বেশ ভালো। সেখানেই এবার বিপর্যস্ত ভারতকে আরেকবার হারানোর দারুণ সুযোগ। প্রথমবার ভারতকে হোয়াইটওয়াশ করার এই সুযোগটি নিয়ে বাংলাদেশের ফিল্ডিং কোচ শন ম্যাকডারমট বলেছেন, ‘কাজটা এখনো শেষ হয়নি। আমরা কখনোই আন্তর্জাতিক ম?্যাচ হালকাভাবে নেই না। এই দলটা ৩-০ ব্যবধানে কখনো ভারতকে হারায়নি। এটাই আমাদের বড় লক্ষ?্য। আমরা যখন ৩-০ ব্যবধানে জিতব তখন অবশ্যই নিজেরা গর্ব খুঁজে পাব।’ সেই গৌরব অর্জনের খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে লিটন দাসের দল।
এই সিরিজেই প্রথমবার বাংলাদেশ দলকে ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন লিটন। ব্যাট হাতে ফর্মের তুঙ্গে থাকা লিটন ইতোমধ্যেই অধিনায়ক হিসেবে সবার মন জয় করে ফেলেছেন। এখন নিজেকে সফলতম হিসেবে প্রমাণের সুযোগ তার। কারণ বাংলাদেশের আর কোনো অধিনায়ক ভারতের বিপক্ষে টানা ৩ জয় আনতে পারেননি। এর আগে পাকিস্তান এবং নিউজিল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দলকেও ঘরের মাঠে ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ দল। তবে ভারতের বিপক্ষে কখনোই এমন আধিপত্যের স্বাদ নিতে পারেননি টাইগাররা। এবার সিরিজের শেষ ম্যাচ জিতে সেটাই করতে চায় বাংলাদেশ। সেজন্য যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস ইতোমধ্যেই পেয়ে গেছে স্বাগতিকরা। কিন্তু ব্যাটিং পারফর্মেন্স বেশ হতাশার দুই ম্যাচেই। কারণ উভয় ম্যাচে টপঅর্ডার চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। প্রথমটির চেয়েও বাজে অবস্থা দেখা গেছে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে।

কারণ ৬৯ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বিপর্যস্ত হয়েছে। উভয় ম্যাচে অসাধারণ ব্যাটিং নৈপুণ্যে দলকে বাঁচিয়েছেন এবং জয়ের অন্যতম নায়ক হয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। তার বিস্ময়কর পারফর্মেন্সে সঙ্গী হয়েছেন অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। আর এটাই ব্যাটিং বিভাগে নিজেদের ফিরে পাওয়ার একটা ইঙ্গিত। এবার আরেক অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমের রানে ফেরার চ্যালেঞ্জ। ব্যর্থ এনামুল হক বিজয়, নাজমুল হোসেন শান্ত ও আফিফ হোসেন ধ্রুবদেরও এবার মেলে ধরার সুযোগ। বোলিং পারফর্মেন্স উভয় দলেরই বেশ ভালো। ভারতীয় দলে এবার চাহার থাকছেন না। স্পিনার কুলদীপ সেনের জায়গায় অবশ্য টেস্ট দলে থাকা রিস্ট স্পিনার কুলদীপ যাদব এসেছেন। তিনি হয়তো আজ একাদশে জায়গা করে নেবেন। তার বিপক্ষে বাংলাদেশী ব্যাটারদের পরীক্ষা দিতে হবে। তবে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা আছেন চাপমুক্ত অবস্থায়।

 

×