ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কাঞ্চন রানী দত্ত

গল্প ॥ অবর্ষিত অশ্রু

প্রকাশিত: ০১:৪০, ২৯ এপ্রিল ২০২২

গল্প ॥ অবর্ষিত অশ্রু

নীলা আগের দিন রাতেই ঠিক করে রেখেছে, আজ একটি লাল শাড়ি পরে অফিসে যাবে। কিন্তু সকালে পত্রিকার একটি ফিচার পড়ে সিদ্ধান্ত পাল্টে ফেলল। ‘শরতে নীলাম্বরী শাড়ি’ শিরোনাম দেখেই নীল শাড়ি খুঁজতে লাগল। আলমারিতে না পেলেও ওয়ারড্রোবের দ্বিতীয় ড্রয়ারেই মিলে গেল নীল-সাদা জামদানিটা। এরপর খুব দ্রুত তৈরি হয়ে বেরিয়ে পড়ল। বাসা থেকে অফিসের দূরত্ব রিক্সায় ১৫ মিনিট। অফিসে সাড়ে ১০টায় মিটিং শুরু হয়ে চলল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। রুমে ফিরে এক কাপ কফি খেতে খেতেই দরজায় নক করলো কেউ। - ম্যাডাম, আসি? - ও ঋত্মিক, আসুন আসুন। - আপনাকে দেখতে এলাম, কেমন আছেন? - হ্যাঁ, ভালো আছি। - আপনাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে আপনি ভালো আছেন। ঋত্মিক নীলার জুনিয়র সহকর্মী। পরিচয় জানার পর দেখা গেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ঋত্মিক নীলার চেয়ে সিনিয়র ছিল। কিন্তু কর্মক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়রিটি আর প্রযোজ্য নয়। তাই ঋত্মিক নীলাকে যথাযথ সম্মান দেখিয়েই অফিসিয়াল প্রোটোকল মেনে চলে। ঋত্মিক প্রায়শই পারিবারিক কারণ দেখিয়ে অফিস থেকে ছুটি নেয়। নীলা এটা অনেক দিন ধরেই লক্ষ্য করছে। বিষয় যেহেতু পারিবারিক তাই নীলা কখনো জানতে চায়নি। নীলার ছোট কাকা ডিভি লটারি পেয়ে অনেক আগে থেকেই আমেরিকায় বসবাস করছেন। নীলাকে প্রায়ই বেড়াতে যাওয়ার জন্য বলেন। নীলা শুধু বেড়ানোর জন্য যেতে চায় না। যদি কখনও শিক্ষা ছুটি নিয়ে উচ্চতর পড়ালেখার জন্য যেতে পারে তাহলেই যাবে বলে মনে মনে ভাবে। তবে এই অভিপ্রায় কারও কাছেই কখনও প্রকাশ করেনি। ঋত্মিকের বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু সুজয়। হঠাৎ করেই আজ অফিসে এসে হাজির। - ঋত্মিক, তোর স্বাস্থ্য কিন্তু আগের মতো ভালো নেই। - না, ঠিকই আছে। - চল বাইরে গিয়ে দুপুরের খাবার খাই। - একটু ব্যস্ততা আছে, আজ বাইরে খাওয়া হবে না। ঋত্মিকের কাছে সুজয় নীলার কথা অনেকবার শুনেছে। তাই ঋত্মিককে অনুরোধ করল একবার তার ম্যাডামের সঙ্গে দেখা করানোর জন্য। - ম্যাডাম, আসব? - হ্যাঁ, ভেতরে আসুন। - আমার বন্ধু সুজয়। আপনার সঙ্গে পরিচিত হতে চায়। চা কফি আর গল্পে প্রায় ৩০ মিনিট কেটে গেল সবার। লাঞ্চ বিরতি হওয়ায় সুজয় আর ঋত্মিক দ্রুত বেরিয়ে এলো। সুজয় ছাত্রজীবন থেকেই ব্যবসা-বাণিজ্য করবে বলে স্থির করেছে। তাই ক্যারিয়ার সেদিকেই। এখন বেশ প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। স্বাধীন পেশা হিসেবে বেশ উপভোগ করে নিজের কর্মক্ষেত্র। সুজয়ের বাবা বেঁচে নেই। মা আর ছোট বোন- এই তিনজন মিলেই সংসার। সুজয়ের ছোট বোন নিশিতা চারুকলার ছাত্রী। সারাক্ষণ শিল্পকর্ম নিয়ে ব্যস্ত। মানুষের আবেগ অনুভূতিকে রং তুলিতে ফুটিয়ে তোলার ক্ষেত্রে ভীষণ দক্ষ। স্বপ্ন দেখে ভবিষ্যতে কোনদিন আন্তর্জাতিক কোন আর্ট এক্সিবিশনে শোভা পাবে তার চিত্রকর্ম। ভোরের কোলে তখনও সূর্য উঠেনি। এরই মধ্যে একটা স্বপ্ন দেখে ঘুম ভেঙ্গে গেল নীলার। বেশিরভাগ সময়ই স্বপ্নের কথা ভুলে যায় সে। তবে আজ কিছুটা মনে করতে পারলো। স্বপ্নটা এমন- বিমানের আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে কোথাও যাচ্ছে সে। কিন্তু কোথায় যাচ্ছিল? কেন যাচ্ছিল? সেসব কিছুই মনে পড়ল না! ওয়াশরুমে গিয়ে চোখে মুখে জল ছিটিয়ে আয়নায় এক মিনিট ধরে নিজেকে দেখল। জলের ছটা লেগে আয়নাটা ঝাপসা হয়ে গেছে। ওড়না দিয়ে খুব যতেœ আয়নাটা মুছে নিল। একাকী মুহূর্তে নীলার প্রিয় সঙ্গী আয়না। সম্মুখে দাঁড়ালেই মনে হয় সব থেকে বিশ্বস্ত সত্যবাদী বন্ধু। বিছানায় ফিরে নীলা আবার ঘুমানোর চেষ্টা করল। কিন্তু ঘুম আসল না। আলসেমি করেই অফিসে যাওয়ার সময় হয়ে গেল। অফিসে পৌঁছে টেবিলের উপর নামীয় খামে একটি চিঠি পেল নীলা। মাস্টার্স করার জন্য নিউইয়র্কের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেছিল সে। তারই জবাব। বেশ কয়েকদিন আগেই ইমেইলে সফট কপি পাঠিয়েছে ওরা। আজ কুরিয়ারের মাধ্যমে পেয়েছে হার্ড কপি। নীলার দেখা ভোরের স্বপ্নই তাহলে সত্যি হলো! আগামী জুলাই সেশনে মাস্টার্স করার সুযোগ পেয়েছে সে। দুই বছরের শিক্ষা ছুটি নিয়ে চলে যেতে হবে। খুশি খুশি আমেজেই দিনটা শেষ হয়ে গেল। অফিস থেকে বাসায় ফিরে বিশ্রাম নিয়ে পুরনো দিনের একটা মুভি দেখছিল। তখনই ফোনটা বেজে উঠল। - ম্যাডাম, আজ কি আগে আগে বাসায় ফিরেছেন? - কেন ঋত্মিক? - না, পাঁচটার দিকে আপনাকে রুমে পেলাম না। - হ্যাঁ, আজ সাড়ে ৪ টায় বেরিয়ে গেছি। - শরীরটা কি খারাপ? - না, একদম ঠিক আছে। ঋত্মিক প্রতিদিনই অন্তত একবার নীলার খোঁজ খবর রাখে। এভাবেই নীলার পছন্দ-অপছন্দ, ভাল-খারাপ সব কিছুর সম্পর্কেই ঋত্মিকের ধারণা স্বচ্ছ। শাড়ির রং দেখেই নীলার মনের অবস্থা বুঝতে পারে। নীলা সবসময় পেশাদারিত্ব, ক্যারিয়ার, পড়ালেখা নিয়েই ব্যস্ত। অন্যের মন-মনন নিয়ে ব্যস্ত থাকার মানুষ সে নয়। ঋত্মিক সেটা ভালভাবেই জানে। তবু নীলার ভাল-খারাপের খবর রাখার মাধ্যমে একটু প্রশান্তি খুঁজে পায়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে সুজয় ফোনে জানাল আজ রাতে ঋত্মিকের বাসায় থাকবে। শুনেই খুশিতে ডগমগ ঋত্মিক। ভাবল- বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পর আজই প্রথম দুই বন্ধু একসঙ্গে রাতে মন খুলে গল্প করার সুযোগ পাবে। হলও তাই। রাতের খাবার খেতে খেতেই গল্প জুড়ে দিল সুজয়। - আচ্ছা ঋত্মিক, তোর ঝামেলাটা কত দূর? - এখনো লম্বা পথ বাকি। - ভাগ্য যে তোকে কোথায় টেনে আনল, ভাবতেই কষ্ট লাগে। - কী আর করব বল। আচ্ছা, নিশিতাকে বলিসতো একটা ছবি আঁকতে? - কি নিয়ে আঁকতে বলব? - ঠিক আছে আমিই আগামী শুক্রবার ওর ক্যাম্পাসে গিয়ে ছবি আঁকার থিম বলে দেব। সুজয়ের ব্যবসাবাণিজ্যে প্রতিনিয়ত উন্নতি হচ্ছে। মা আর ছোট বোনকে নিয়ে বেশ ভালই কাটছে দিন। যদিও মায়ের ইচ্ছা- বিয়ে করে সংসারী হোক সুজয়। কিন্তু সুজয় চায় আগে নিশিতার বিয়ে হোক। আর নিশিতা চায় তার কোন চিত্রকর্ম আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আগে প্রদর্শিত হবে, তবেই বিয়ের পিঁড়িতে বসবে। একে অন্যের প্রদত্ত শর্তের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে ওরা তিনজন। নীলার স্কলারশিপ নিয়ে নিউইয়র্ক চলে যাওয়ার সংবাদে ঋত্মিকের ঠোঁটের কোণে হাসি ঝুলে থাকলেও নিরবে চোখের কোণে জমল জল। কিন্তু কাউকে কিছু বলতে পারল না। পারিবারিক কারণজনিত ছুটি নিয়ে বাড়ি যাওয়ার আগে এবার নীলার সঙ্গে দেখা করতে এলো সে। - ম্যাডাম, আমি তিনদিনের ছুটি নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। আগামী রবিবার অফিস করব। -ঋত্মিক, আমার কিন্তু এই বৃহস্পতিবার শেষ অফিস। শনিবার রাতে ফ্লাইট। - ঠিক আছে ম্যাডাম, সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করি। খুব দ্রুত বিদায় নিয়ে নীলার রুম থেকে বেরিয়ে এলো ঋত্মিক। ভেবেছিল আজ সে তার পারিবারিক কারণটা নীলাকে বলবে। কিন্তু সাহস হলো না। নীলাও মানুষের ব্যক্তিগত বিষয়ে অযথা কথা বলা পছন্দ করে না, তাই সেও আজ পর্যন্ত এটা নিয়ে ঋত্মিকের কাছে কিছু জানতে চায়নি। অফিস শেষে রাতের বাসেই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিল ঋত্মিক। এবারের ভ্রমণটা কেমন যেন বেদনাদায়ক লাগছে। চোখের দুই পাতার মিলন ঘটছে না। হেডফোনে গান শুনতেও ভালো লাগছে না। এক ধরনের অস্থিরতা নিয়েই ভ্রমণ শেষ হয়ে গেল। সূর্য রং ছড়িয়ে প্রশস্ততা নিয়ে আকাশে উদীয়মান, এমন সময় বাস স্ট্যান্ডে পৌঁছাল ঋত্মিক। উদীয়মান সূর্য দেখার পরও ঋত্মিকের মনে হচ্ছে তার পথ চলার শক্তি হারিয়ে অস্তগামী সূর্যের মতোই অন্ধকারে নিমজ্জিত হতে যাচ্ছে জীবনটা। সেদিন দুপুরেই সুজয়ের ফোন এল। - ঋত্মিক একটা দারুণ খবর আছে। - কী খবর? - ফোনে বলবো না। ঢাকায় আসলে সরাসরি বলবো। দারুণ কোন খবরের আভাস পেয়েও ঋত্মিকের মনে মোটেও উচ্ছ্বাস জাগল না। পারিবারিক প্রয়োজন শেষে শনিবার বিকেলে ঢাকায় পৌঁছে সন্ধ্যায় সুজয়দের বাসায় এল ঋত্মিক। এবার দারুণ খবর শোনার সময়। নিশিতা চানাচুর-মুড়ি আর কফির ট্রে নিয়ে ড্রয়িং রুমে ঢুকলো। সবাই চুপচাপ, কে শুরু করবে আগে সেই নিয়ে ভাবনা। - ঋত্মিক দা, আমার আঁকা ছবি নিউইয়র্কের আর্ট এক্সিবিশনে প্রদর্শনের জন্য মনোনীত হয়েছে। দুই মাস পর প্রদর্শনী। - আসলেই দারুণ খবর তো। - তোমার দেয়া থিমে আঁকা ছবিটাও এর মধ্যে রয়েছে। ঋত্মিক যেন কথাটা শুনেও শুনলো না। অন্যমনষ্ক হয়ে ভাবলো- এত দিনে নিশিতার মনের চাওয়াও পূরণ হলো। একে একে সবার চাওয়াই পূরণ হচ্ছে। কিন্তু তার মনের চাওয়াটা আজ পর্যন্ত কারও কাছে প্রকাশই করতে পারল না। নিজস্ব নিয়মেই সময় বয়ে চলছে, কিন্তু ঋত্মিকের জীবনের কোন পরিবর্তন ঘটছে না। দেখতে দেখতে নিশিতার যাওয়ার সময়ও হয়ে এলো। বাংলাদেশ থেকে এবার তিনজন প্রতিযোগী যাচ্ছে। নিউইয়র্কে ওদের কারোরই পরিচিত কেউ নেই। হঠাৎ নীলার কথা মনে পড়ল নিশিতার। তাই ঋত্মিকের কাছ থেকে নীলার ঠিকানা, ফোন নম্বর সংগ্রহ করল। নীলা নিউইয়র্কে পৌঁছে ঋত্মিককে একটা ইমেইলে তার বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছে। এরপর আর কোন যোগাযোগ হয়নি। সকাল হলেই নিশিতার ফ্লাইট। লম্বা ভ্রমণ, কিন্তু সীমাহীন আনন্দ। ট্রানজিটসহ দীর্ঘ যাত্রা শেষে নিউইয়র্কে পৌঁছালো নিশিতা। আগেই নীলার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। কথামতো এয়ারপোর্টে নীলা এলো নিশিতাকে রিসিভ করতে। নীলা আরও চৌকস হয়েছে নিউইয়র্কে এসে। পরদিন প্রদর্শনী। প্রদর্শনীর দিন নীলা ও তার কাকাও এলো প্রদর্শনী দেখতে। এর আগে কখনও নিশিতার আঁকা ছবি নীলা দেখেনি। টানা তিনদিন প্রদর্শনী শেষে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রতিযোগীদের মধ্য থেকে নিশিতার একটি ছবি বিচারকদের রায়ে এ বছরের সেরা চিত্রকর্ম নির্বাচিত হলো। আনন্দের ঘোর কাটার পর ছবিটি নিয়ে গল্প জুড়ল নিশিতা। - নীলা দি, তুমি কি জানো আমার যে ছবিটি সেরা হয়েছে তার থিম কোথায় পেয়েছি। - কোথায় পেয়েছ? - ঋত্মিক দা দিয়েছিল। - তোমরা তো শিল্পী মানুষ, আমি তোমাদের চিত্রকর্মের ভাষা বুঝি না। - আজ সন্ধ্যায় কফিসপে আমি তোমাকে বোঝাব। সন্ধ্যায় দুজনে নীলার বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের একটি কফিসপে বসে গল্প করছিল। ‘সেরা ছবিতে একজন ব্যক্তি রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে। পেছন থেকে একটি অস্পষ্ট মূর্তি তার বাম হাত ধরে টানছে। সামনে একজন নীলাম্বরী শাড়িতে হাত বাড়িয়ে ডাকছে তাকে।’ ছবিটার দৃশ্যপট ব্যাখ্যা করার পর নিশিতা এবার যা বললো, তাতে টলে উঠল নীলা। - দিদি এটা হলো ঋত্মিক দার জীবন কাহিনী। - কী বলছ তুমি? - ঋত্মিক দা আমাকে সব বলেছিল। - আমাকে তো কিছু বলেনি কখনও। - বলতে চেয়েছে কিন্তু পারেনি। নীল শাড়ি পড়া মানুষটি তুমি। আর অস্পষ্ট মূর্তি হচ্ছে তার মৃত স্ত্রী। পারিবারিকভাবে ঋত্মিকের বিয়ে হয়েছিল। ভাইদের সঙ্গে জমিজমার বিরোধে ঋত্মিকের শ্বশুরকে খুন করা হয়। সেই থেকে ঋত্মিকের স্ত্রী মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিয়ের তিন মাসের মধ্যেই এই ঘটনা। অনেক ডাক্তার দেখিয়েও কোন উন্নতি হয়নি। ঋত্মিকের স্ত্রী তখন গ্রামের বাড়িতে। ঋত্মিক কর্মস্থলে ঢাকায়। অতিরিক্ত ঘুমের ঔষুধে ঋত্মিকের স্ত্রী মারা যায়। ঋত্মিকের শাশুড়ি আত্মহত্যার প্ররোচনায় ঋত্মিকের বিরুদ্ধে মামলা করে। এজন্যই পারিবারিক কারণ দেখিয়ে মামলায় হাজিরা দিতে ঋত্মিক ছুটি নিত। নীলা এসবের কিছু জানতো না। নিশিতার কাছ থেকে আজ সব জানল। বাংলাদেশে গভীর রাত হওয়া সত্ত্বেও বাসায় ফিরেই ঋত্মিককে ফোন দিল সে। - ঋত্মিক কেমন আছ? - হ্যাঁ ভালো, আপনি। - আমাকে তুমি বলে সম্বোধন কর প্লিজ। - একি বলছেন? - প্লিজ ঋত্মিক তুমি করে বল। তোমার চাপা কষ্টগুলো কেন আমায় একবারও বলোনি? - আমিতো বলতে চেয়েছি কিন্তু তুমিতো জানতে চাওনি। - স্যরি ঋত্মিক, নিশিতার কাছে সব শুনে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। - না নীলা, তুমি কেন কষ্ট পাবে? তোমার তো কোন দোষ নেই। - এখন রাখছি, পরে কথা বলবো। ফোনটা রেখে হাউমাউ করে কাঁদতে চাইল নীলা। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে শত চেষ্টাতেও চোখে জল দেখতে পেল না।
×