ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২

ওয়েব ব্রাউজারে অদৃশ্য সাইবার হামলার নতুন ফাঁদ

প্রকাশিত: ১৪:৪০, ১৯ জুলাই ২০২৫

ওয়েব ব্রাউজারে অদৃশ্য সাইবার হামলার নতুন ফাঁদ

ভাবুন তো, আপনার ওয়েব ব্রাউজার নিরাপত্তা ব্যবস্থাগুলোর চোখে তুলে ধরে নিরীহ একটি পেজ,কিন্তু আপনার অজান্তেই তা করতে পারে আপনার সমস্ত নিরাপত্তা  হ্যাক ।

এখন এই প্রযুক্তি বাস্তবে চলে এসেছে। এর নাম Cloaking-as-a-Service—এবং এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহার করে এমনসব সাইবার হামলা চালাচ্ছে যা আগেভাগে বুঝে ওঠা সম্ভব নয়।

সাধারণত, ওয়েব ব্রাউজার নিরাপত্তা ঝুঁকি, সন্দেহজনক এক্সটেনশন বা অ্যাড-অন ইত্যাদি নিয়ে আপনি সচেতন হতেই পারেন, কিন্তু এই নতুন ধরনের ব্রাউজার আক্রমণ সম্পর্কে হয়তো শোনেননি। একে বলা হচ্ছে ‘ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট’ ব্রাউজার আক্রমণ। এখানে AI ব্যবহার করে এমনভাবে দুটি আলাদা ওয়েবপেজ দেখানো হয়—সাধারণ ব্যবহারকারীর জন্য একটি ব্ল্যাক (ক্ষতিকর) পেজ আর নিরাপত্তা টুল বা স্ক্যানারের জন্য একটি হোয়াইট (নিরীহ) পেজ।

আগে এই ধরনের ক্লোকিং (অন্যরকম কনটেন্ট দেখানো) কৌশল shady অনলাইন বিজ্ঞাপনদাতারা ব্যবহার করত কনভার্সন বাড়াতে। এখন এই কৌশলকে AI-এর মাধ্যমে আরও শক্তিশালী করে হ্যাকারদের হাতে তুলে দিচ্ছে Cloaking-as-a-Service প্ল্যাটফর্ম। সামান্য সাবস্ক্রিপশন ফি দিয়ে এখন যেকেউ (অর্থাৎ সাইবার অপরাধীরাও) AI ও জাভাস্ক্রিপ্টের সমন্বয়ে তৈরি এসব ক্লোকিং টুল ব্যবহার করে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে ব্যবহারকারীদের টার্গেট করতে পারছে।

কিভাবে কাজ করে এই কৌশল?

SlashNext নামক সাইবার নিরাপত্তা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ১৭ জুলাই প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই আক্রমণের বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছে। তারা বলছে, মূলত দুই ধরনের পেজ তৈরি করা হয়—একটি হোয়াইট পেজ যা স্ক্যানার বা রোবট সিস্টেম দেখে, এবং একটি ব্ল্যাক পেজ যা সাধারণ ব্যবহারকারীদের দেখানো হয়।

এই Cloaking-as-a-Service প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে জাভাস্ক্রিপ্ট ফিঙ্গারপ্রিন্টিং, ডিভাইস ও নেটওয়ার্ক প্রোফাইলিং, মেশিন লার্নিং অ্যানালাইসিস এবং ডায়নামিক কনটেন্ট সোয়াপিং—সবকিছুই একত্রে সহজ ইউজার ইন্টারফেসে এনে দেওয়া হয়েছে, যেন অপরাধীরাও সহজেই এগুলো ব্যবহার করতে পারে।

প্রতিরোধের উপায় কী?

Qualys Threat Research Unit-এর সিকিউরিটি রিসার্চ ম্যানেজার মায়ূরেশ দানি এটিকে সাইবার হুমকির এক গুরুতর রূপান্তর বলে উল্লেখ করেছেন, যা তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ দাবি করে।

তিনি নিচের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন—

  • বিহেভিওরাল ও রানটাইম অ্যানালাইসিস টুল: যাতে ডায়নামিক কনটেন্ট রিয়েল টাইমে চিহ্নিত করা যায়।
  • AI-চালিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা: যেন AI-নির্ভর আক্রমণের সঙ্গে খাপ খাইয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায়।
  • জিরো-ট্রাস্ট নিরাপত্তা মডেল: যাতে প্রতিটি নেটওয়ার্ক কার্যকলাপের সত্যতা বারবার যাচাই হয়, কেবলমাত্র বাইরের আক্রমণ ঠেকানোর চেষ্টা না করে।
  • AI-সহায়ক হামলার জন্য তৈরি ইনসিডেন্ট রেসপন্স পরিকল্পনা: যেন দ্রুত ও নির্ভুল প্রতিক্রিয়া দেওয়া যায়।

 

সানজানা

×