ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ১৪ জানুয়ারি ২০১৬

মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা

ফয়জুন্নেসা মণি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের সুনাম আছে। মানুষ মানুষের পাশে এগিয়ে আসার বড় ধরনের উদাহরণও আছে। ঝড়-জলোচ্ছ্বাস মোকাবেলার অভিজ্ঞতাও আছে। কিন্তু সুনামি ও ভূমিকম্পের মতো বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবেলায় পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা নেই। সাভারের রানা প্লাজা ধস প্রমাণ করেছে দ্রুততম সময়ে বিপর্যয় সামলানোর মতো প্রযুক্তি, দক্ষতা আর অভিজ্ঞতা আমাদের একেবারেই নেই। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এ অঞ্চলের বিশাল জায়গা জুড়ে ৮ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পেরও আশঙ্কা আছে। ফলে ইন্দোনেশিয়ার মতো বাংলাদেশের উপকূলেও ভয়াবহ সুনামি দেখা দিলে পরিণতি কি হতে পারে ভাবা যায়? মনে রাখা দরকার, কয়েক বছর আগে ভূমিকম্পে তুরস্কের একটি অঞ্চল ব্যাপক ধ্বংসলীলার শিকার হয়। দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কটি দেশ যেমন- ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, ভারত, থাইল্যান্ড, মাল™^ীপ উপকূলে যে ভূমিকম্প ও জলোচ্ছ্বাস হয় তাতে হাজার হাজার কোটি ডলারের ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াও বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এ ভূমিকম্প ও জলোচ্ছ্বাস ছিল স্মরণকালের মারাত্মক বিপর্যয়। শক্তিশালী একটা ভূমিকম্প ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে যে কোন সময়। এ বিষয়ে প্রায়ই সতর্ক করা হচ্ছে। কিন্তু কতটুকু সতর্ক হচ্ছে বাংলাদেশ? প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবেলায় কতটা প্রস্তুত আমরা? ভূমিকম্প ঝুঁকি থেকে বাঁচতে বাড়িঘর নির্মাণের সময় স্থপতি-প্রকৌশলীদের দিয়ে নকশা তৈরি, তত্ত্বাবধান ও জাতীয় বিল্ডিং কোড অনুসরণের কিছু পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে- ১. ভূমিকম্পের পরে ভেঙ্গে পড়া ভবনের নিচে আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধার ও আগুন নেভানোর জন্য দমকলকে প্রস্তুত রাখতে হবে। ২. বিদ্যুত, পানি সরবরাহ ইত্যাদি সার্ভিসকে নিয়ে সমন্বি^ত ভূমিকম্প ব্যবস্থাপনা, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা। ৩. ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় পাড়ায়, মহল্লায় স্বেচ্ছাসেবক কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়া। সেখানে জনসাধারণের পাশাপাশি ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, নার্স, টেকনিশিয়ান, মিস্ত্রি ইত্যাদি পেশায় নিয়োজিত পেশাজীবীদের অন্তর্ভুক্ত করা। ৪. স্থানীয় সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, পূর্ত বিভাগ, বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড, পানি উন্নয়ন বোর্ড, গ্যাস, টিএ্যান্ডটি বোর্ড, অগ্নিনির্বাপণ বিভাগ ইত্যাদি সংস্থাগুলোর উদ্ধারকারী দল, প্রয়োজনীয় লোকবল ও সরঞ্জামাদিসহ সার্বক্ষণিকভাবে প্রস্তুত এবং সমন্বিত থাকা। ৫. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস ও বাসাবাড়ির জনসাধারণকে ভূমিকম্প মোকাবেলায় সচেতন করে তোলার লক্ষ্যে প্রস্তুতিমূলক মহড়া অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা। ৬. দক্ষ জনবল তৈরিতে প্রয়োজনে বিদেশি বিশেষজ্ঞ টিমের সাহায্য নেয়া উচিত। ধর্মপাশা, সুনামগঞ্জ থেকে
×