ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মণিরামপুরে ইটভাঁটিতে শ্রমিক নির্যাতন ॥ শিশুসহ ১২ জন উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ১৩ জানুয়ারি ২০১৬

মণিরামপুরে  ইটভাঁটিতে শ্রমিক নির্যাতন ॥ শিশুসহ ১২ জন উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ মণিরামপুরে ইটভাঁটিতে আটকে রেখে ইট তৈরির কাজ করানোর অভিযোগে ২ শিশুসহ ১২ জন ভাটা শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়েছে। এক অভিযোগের ভিত্তিতে মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলু সোমবার রাতে ভাঁটি থেকে আটক অবস্থায় তাদের উদ্ধার করেন। উদ্ধারকৃতরা হলো খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার ন’হাটী গ্রামের রাশিদা (৫০), একই গ্রামের আসমা খাতুন (২২), চম্পা (২০), জাহিদুল ইসলাম (২৪), সাইদ গাজী (৩৫) এবং একই উপজেলার সনাতনকাটি গ্রামের কুলছুম (৪৭), ফাতেমা (২৮), আজিজুল হক (৩৪), নজরুল ইসলাম (২৪) ও সুলতান গাজী (৫৮)। এছাড়া আসমা খাতুনের দেড় বছরের শিশু পুত্র হৃদয় ও ফাতেমা খাতুনের ২ বছরের কন্যা সাথীকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া শ্রমিক রাশিদা খাতুন জানান, ইটভাঁটিতে রাতে তাদের থাকার ঘরে তালা দিয়ে ও দিনের বেলা পাহারা দিয়ে কাজ করানো হতো। সপ্তাহে তিন দিন কিছু চাল আর অল্প সবজি দিত। আর অনেক দিন না খেয়ে থাকতে হয়েছে। ভাঁটি শ্রমিক নজরুল ইসলাম বলেন, তাদের রাতে শিকল দিয়ে বেঁধে এবং রাতে ঘরের দরজায় বিদ্যুত দিয়ে রাখা হতো। এছাড়া না খেয়ে কাজ করতে কষ্ট হলে একটু বিশ্রাম নিতে চাইলেই মারপিট শুরু করত তারা। নির্যাতনের শিকার হওয়া লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাইকগাছা উপজেলার ন’হাটী গ্রামের সবুর গাজী নামে এক শ্রমিক সর্দারের সঙ্গে চুক্তিতে পাইকগাছা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৫০ জন শ্রমিক মণিরামপুরের মেসার্স মুরাদ ব্রিকসে (সাবেক মদিনা ব্রিকস) যোগ দেন। এরপর থেকে ভাঁটি কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের চুক্তি মোতাবেক পারিশ্রমিক না দেয়ায় অনেকে কাজ ছেড়ে পালিয়ে যায়। বাকি শিশুসহ ১২ জনকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে কাজ করায় ভাঁটি মালিক। সোমবার রাতে এদের মধ্যে থেকে সাইদ গাজী পালিয়ে গিয়ে স্থানীয় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন। এ ব্যাপারে মেসার্স মুরাদ ব্রিকসের স্বত্বাধিকারী আবু সাঈদের ভাই মুরাদ হোসেন বলেন, তাদের অভিযোগ সত্য নয়। বরং আমরাই শ্রমিক সরদারের কাছে টাকা পাব। মণিরামপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলু জানান, অভিযোগ পেয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে।
×