ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে তোলপাড় ॥ নিয়োগবিধি উপেক্ষা করে কর্মচারী নিয়োগ

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১৩ জানুয়ারি ২০১৬

ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে তোলপাড় ॥ নিয়োগবিধি উপেক্ষা করে কর্মচারী নিয়োগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিয়োগবিধি উপেক্ষা করে ১০ কর্মচারী নিয়োগ দেয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে তোলপাড় শুরু হয়েছে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে। শিক্ষাবোর্ড কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি হুমায়ূন কবির ও সাধারণ সম্পাদক লোকমান মুন্সির চাপ ও হুমকির কারণে বোর্ড চেয়ারম্যান ওই নিয়োগ দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে শিক্ষামন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন বোর্ডের ১৫১ জন কর্মচারী। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের নির্দেশে তদন্তে নেমেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তদন্তের অংশ হিসেবে বোর্ডের নিয়োগ সংক্রান্ত নথি তলব করে নিয়োগের সকল তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, ঘটনা জানান পর তথ্য যাছাই করে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ইতোমধ্যেই ওই নিয়োগ বন্ধ করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। নিয়োগের বিষয়টি সম্পর্কে বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেছেন, আমরা নিয়োগ দিয়েছিলাম বিধি অনুসারেই। তবে কর্মচারী নেতাদের একটি অংশ এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। একটি পক্ষ আবার নিয়োগের পক্ষে। কর্মচারী নেতাদের চাপ সম্পর্কে চেয়ারম্যান বলেন, চাপতো থাকেই। সব সময়েই এটা তারা করেন। তবে আমরা জানতামনা যে, নেতারা তাদের ভাই, ভাগ্নে আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে এসেছেন। এটা তারা ঠিক করেননি। এখন মন্ত্রণালয় আমাদের কাছে অবস্থান জানতে চেয়েছিল। আমরা মন্ত্রণালয়কে জবাব দিয়েছি। এখন মন্ত্রণালয় যেটা বলবে সে অনুসারে পদক্ষেপ নেয়া হবে। জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন বোর্ডের ১৫১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। তারা বলছেন, এই নিয়োগে টাকা লেনদেন হয়েছে। নিয়োগের পর পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একে জায়েজ করার চেষ্টাও হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দেয়া অভিযোগে বলা হয়, গত ২৫ জুন বিভিন্ন পদে ১০ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়। এর মধ্যে কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লোকমান মুন্সির আপন তিন ভাই রয়েছেন। তারা হলেন, জুলহাস মুন্সি, ফজলুল হক মুন্সি ও জসিম মুন্সি। সভাপতি হুমায়ূন কবিরেরও তিন জন ভাগ্নে আছেন তালিকায়। এরা হলেন, আসিফ আহমেদ, ওবায়েদুল হক পলাশ ও নজরুল ইসলাম। তালিকায় আছে সহ-সভাপতি মঞ্জুর আলী, জায়েদ হোসেন, মহিউদ্দিন মুহীতের পছন্দের লোকজন। আবেদনটি আমলে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সংশ্লিষ্ট শাখাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এর পর মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক-১ অধিশাখার উপসচিব মহিবুর রহমান শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানকে নোটিস করেন। এতে নিয়োগ সংক্রান্ত পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি, তথ্য-উপাত্ত জরুরী ভিত্তিতে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, অবৈধ নিয়োগের বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে বোর্ড কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এদিকে অভিযোগের বিষয়ে ঢাকা শিক্ষাবোর্ড কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি হুমায়ুন কবিরের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। সাধারণ সম্পাদক লোকমান মুন্সি তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে বলেন, আমাদের বিষয়ে আনা অভিযোগ সত্য নয়। আমরাতো নিয়োগ দিতে পারি না। এই ক্ষমতা আছে চেয়ারম্যান, সচিবের। তাদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দিলেন কর্মচারী নেতা। তবে নিয়োগের জন্য তদ্বির ও নিজেদের আত্মীয় নিয়োগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে লোকমান মুন্সি বলেন, আমরা তদ্বিরতো করতেই পারি। পারি না? স্কুল কমিটি নিয়ে বিরোধে রাজধানীর দুই সাংসদ ॥ রাজধানীর দোলাইরপাড় উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি) সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) সনজীদা খাতুনের সমর্থকরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিক থেকে স্কুলের অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা দুই পক্ষে বিভক্ত হয়ে মিছিল করেছেন। একপক্ষ প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমানের অপসারণ দাবি করছেন। অপরপক্ষ প্রধান শিক্ষকের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এতে ধোলাইপাড় উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জাপা সংসদ সদস্য আবু হোসেন বাবলার পক্ষে ৫১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান হাবু ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় ঘটনাস্থলে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করে ওয়ারি জোন। ওয়ারি জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার নুরুল আমিন বলেন, গবর্নিং বডি ও প্রধান শিক্ষকের অপরণকে কেন্দ্র করে দুই এমপির মধ্যে ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে। আবু হোসেন বাবলা বলছেন, এই কমিটি অবৈধ। আর সনজীদা ম্যাডাম বলছেন, কমিটি বৈধ। উভয়পক্ষ পাল্টা-পাল্টি সমাবেশ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমরা সকাল থেকে এখানে অবস্থান নিয়েছি। এক পক্ষ অভিযোগ করেছেন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন না করেই প্রধান শিক্ষক জালিয়াতির মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করেছেন। এতে একপক্ষ দাবি করছেন কমিটি অবৈধ। এই পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন স্থানীয় জাপা এমপি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন সংরক্ষিত আসনের এমপি সনজীদা খাতুন।
×