নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ, ৩০ আগস্ট ॥ যৌন হয়রানির প্রতিবাদ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক আসা-যাওয়া নিশ্চিতকরণের দাবিতে রবিবার দুপুরে হবিগঞ্জের উপজেলা বাহুবলের ফয়েজাবাদ হাইস্কুল শিক্ষার্থীদের আহূত মানববন্ধন কর্মসূচীতে বখাটেদের সশস্ত্র হামলা এবং একই ঘটনার জের ধরে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, ভাঙচুর, পুলিশের লাটিচার্জ ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় শিক্ষার্থী-পুলিশসহ আহত হয়েছে অন্তত শতাধিক। এর মধ্যে গুরুতর আহত সুন্দ্রা টিকী গ্রামের প্রবাসী দুলন মিয়া (৩৫) কে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পুলিশ, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী জানায়, ওই স্কুলে অধ্যয়নরত ৮ম শ্রেণীর গুটিকয়েক ছাত্রীকে পূর্ব ভাদেশ্বর এলাকার কতিপয় বখাটে যুবক নিয়মিত যৌন হয়রানি করে আসছিল। এমন উৎপাতের কথা নানাভাবে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে জানিয়ে প্রতিকার পায়নি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী-এলাকাবাসী। এদিকে এই সমস্যা সমাধানে গতকাল শনিবার সংশ্লিষ্ট স্কুলে একটি সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও তা ব্যর্থ হয়। ফলে যৌন হয়রানির প্রতিবাদ, বখাটেদের গ্রেফতার ও স্বাভাবিক চলাফেরা নিশ্চিতকরণের দাবিতে ছাত্রছাত্রীরা রবিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে সংশ্লিষ্ট স্কুলসংলগ্ন সড়কে এক বিশাল মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশ নেয়। এ সময় একদল বখাটে লাঠিসোটা হাতে তাদের ওপর হামলে পড়ে। শুধু তাই নয়, এ সময় বখাটেদের হাতে গুটিকয়েক ছাত্রীকে শারীরিক লাঞ্ছনারও শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এমন পরিস্থিতি সইতে না পেরে পার্শ¦বর্তী সুন্দ্রাটিকী গ্রামের লোকজন ছাত্রছাত্রীদের পক্ষ নিয়ে বখাটেদের প্রতিরোধের চেষ্টা চালায়। এ খবর পেয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ভাদেশ্বর গ্রামের এক শ্রেণীর লোক বখাটেদের পক্ষ নিয়ে সুন্দ্রাটিকী গ্রামের সঙ্গে তুমুল সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে কলেজের কয়েক শিক্ষক-ম্যানেজিং কমিটির সদস্যসহ ছাত্রছাত্রীদের অবরুদ্ধ করে রাখে বখাটেরা। একই সময় স্কুলে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় বখাটেরা। এদিকে এমন ভয়াবহ সংঘর্ষের খবর পেয়ে এএসপি সাজ্জাদ ইবনে রায়হানের নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রথমে আলাপচারিতায় সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। এরই প্রেক্ষিতে প্রায় সোয়া ২ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই সংঘর্ষ থামাতে দাঙ্গাকারীদের ওপর ব্যাপক লাটিচার্জ এবং পরবর্তীতে অন্তত ৪২ রাউন্ড শটগানের গুলি ছুড়লে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: