ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মধ্য আয়ের দেশ

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ৪ জুলাই ২০১৫

মধ্য আয়ের দেশ

তাহলে কতদূর এগোল বাংলাদেশ? গৌরব আর অহঙ্কার নিয়ে সামনের সব প্রতিবন্ধকতা ভেঙ্গে অগ্রসরমান দেশটি আর নিম্ন আয়ের দেশ নয়। এখন মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে বিশ্বসভায় পেয়েছে ঠাঁই। ২০২১ সালের মধ্যে বা তারও আগে দেশটি আরও একধাপ উন্নীত হওয়ার সকল সম্ভাবনা ও প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পথে। এবার গৃহীত পরিকল্পনা ও সূচিত কর্মসূচীর ধারাবাহিকতা রক্ষা ও তা বেগবান করে দেশকে আরও এগিয়ে নেয়ার কাজটি করাই হবে মূল লক্ষ্য। বিশ্বব্যাংকের হিসেবে বাংলাদেশ এখন নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশের কাতারে প্রবেশ করেছে। কিন্তু প্রবেশের মাত্রাটা খুবই প্রান্তিক। বাংলাদেশকে এই ইতিবাচক পরিবর্তনকে কাজে লাগাতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতেই হবে। মধ্য আয়ের দেশের তকমা পাওয়ার পর বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হয়েছে। অর্থনৈতিক সূচকগুলো আরও উন্নত করতে এই ভাবমূর্তিকে কাজে লাগানোটা জরুরী। এর ফলস্বরূপ বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ঋণপ্রাপ্তিতে সুবিধা পাবে। বিদেশী বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও এই সূচক ইতিবাচক বার্তা নিয়ে এসেছে। নতুন অর্থবছরে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিকভাবে যে স্বীকৃতি দিয়েছে, তাতে মুছে গেছে দারিদ্র্যের গ্লানি। এই স্বীকৃতি জাতি হিসেবে বাঙালীর জন্য গর্বের ও আনন্দের। দেশের উৎপাদনশীল জনগোষ্ঠী এক্ষেত্রে অবদান রেখেছেÑ এক কথায় বলা যায়, তাদের শ্রম, মেধা ও অধ্যবসায়ের ফসল এই অর্থনৈতিক উত্তরণ। তার সঙ্গে শেখ হাসিনার সরকারের অদম্য প্রচেষ্টা আন্তর্জাতিক মানদ-ে বাংলাদেশকে দাঁড়াতে সহযোগিতা করেছে। স¦াধীনতার চার বছর পর ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। চল্লিশ বছর পর অবশেষে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নিজস্ব সম্মানজনক অবস্থান দাঁড় করাতে পেরেছে। রাজনৈতিক হানাহানি, সন্ত্রাস, পেট্রোল বোমাবাজির পরও দেশটি জিডিপিতে অনেক দূর এগিয়েছে। বাংলাদেশকে যারা তলাবিহীন ঝুড়িতে রেখে দেয়ার ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছিল, তাদের জন্য এটা দুঃসংবাদ বৈকি। তাদের বাংলাদেশকে আর হতদরিদ্র দেশ বলে বিদ্রƒপ করার দিন শেষ। বাংলাদেশ নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হলেও চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে স্বল্পোন্নত দেশের সুবিধাগুলো পাবে। মধ্য আয়ের দেশের সুবিধা পাওয়ার প্রক্রিয়াটি শেষ হতে আরও বছরতিনেক লাগতে পারে। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করতে প্রতিবছর ৭ দশমিক ৫ থেকে ৮ শতাংশ জিডিপি অব্যাহত রাখতে হবে। প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান বেশ সুবিধাজনক স্থানে রয়েছে। ২০১৫ সালে সমাপ্ত হতে যাওয়া সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও বাংলাদেশের সাফল্যের হার তৃতীয় বিশ্বের যে কোন দেশের জন্য ঈর্ষণীয় প্রায়। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দেশ আরও উন্নতির পথে এগিয়ে যাবেÑ বর্তমান সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো যথাযথভাবে সচল রাখা গেলে।
×