ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মার্জিন ঋণ সমন্বয়ে আরও ছয় মাস সময় বাড়ল

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ৩০ জুন ২০১৫

মার্জিন ঋণ সমন্বয়ে আরও ছয় মাস সময় বাড়ল

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ মার্জিন ঋণ সমন্বয়ে আরও ছয় মাস সময় পেল ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। কারণ মার্জিন রুলস, ১৯৯৯-এর রুলস ৩ (৫)-এর কার্যকারিতা আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত স্থগিত করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ফলে আরও ছয় মাসের জন্য বিনিয়োগকারীরা ঋণ পরিশোধ বা সমন্বয়ের চাপ থেকে রেহাই পাচ্ছেন। বর্তমান মন্দাবাজার পরিস্থিতি ও ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে দিক বিবেচনা করে সোমবার অনুষ্ঠিত বিএসইসির ৫৫০তম সভায় এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সূত্র জানায়, এতদিন এ আইন স্থগিত থাকায় বিনিয়োগকারীরা এতদিন ফোর্সসেলের মুখে পড়েননি। এছাড়া ডেবিট ব্যালেন্সের ১৫০ শতাংশের নিচে নেমে আসা পোর্টফলিওগুলো লেনদেনের সুযোগ পেয়েছে। সে সুযোগ আরও ছয় মাস পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে বিএসইসি। প্রসঙ্গত, মার্জিন রুলস, ১৯৯৯-এর রুলস ৩ (৫) ধারায় বলা হয়েছে, যখনই ইক্যুইটি ক্লায়েন্টের মার্জিন এ্যাকাউন্ট ডেবিট ব্যালেন্সের ১৫০ শতাংশের নিচে নেমে আসে তখন হাউজগুলো ঋণ সমন্বয়ের জন্য ক্লায়েন্টকে অবহিত করবে। যাতে কোনভাবেই ইক্যুইটি মার্জিন ঋণের ১৫০ শতাংশের কম না হয়। হাউজ কর্তৃপক্ষের ক্লায়েন্টের প্রতি এ সংক্রান্ত চিঠির তিন দিনের মধ্যে নগদ অর্থ কিংবা মার্জিনেবল সিকিউরিটিজ দিয়ে অতিরিক্ত ঋণ সমন্বয় করবে। যে পর্যন্ত ইক্যুইটি সন্তোষজনক অবস্থায় না আসে সে পর্যন্ত ক্লায়েন্টের লেনদেন বন্ধ থাকবে। ধরা যাক, কোন বিনিয়োগকারীর ১ লাখ টাকা ডিপোজিটের বিপরীতে আরও ১ লাখ টাকা মার্জিন ঋণ সুবিধাসহ মোট ২ লাখ টাকার শেয়ারে কিনেছে। বাজার মন্দার কারণে তার বর্তমান শেয়ারের মূল্য ৫০ হাজারে দাঁড়িয়েছে। এক্ষেত্রে তার ইক্যুইটির ডেবিট ব্যালেন্স মার্জিন ঋণ থেকে ১৫০ শতাংশ কমে গেছে। মার্জিন রুলসের উল্লিখিত ধারা অনুযায়ী হাউজ কর্তৃপক্ষ তাকে চিঠির মাধ্যমে অতিরিক্ত ঋণ পরিশোধের চাপ প্রয়োগ করার পাশাপাশি লেনদেন বন্ধ করে দেবে। তথ্যানুসন্ধ্যানে জানা যায়, ২০১৩ সালের ৪ মার্চ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পক্ষ থেকে পুঁজিবাজার স্থিতিশীল করতে মাইনাসে থাকা পোর্টফলিও পুনর্বিন্যাস এবং ১৯৯৯ সালের মার্জিন রুলসের ৩(৫) ধারা স্থগিত করার দাবি জানানো হয়। তাই ওই বছরের ৯ এপ্রিল বিএসইসির ৪৭৫তম সভায় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ, পুঁজিবাজারের বর্তমান অবস্থা বিবেচনা এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর রুলস ৩ (৫)-এর কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়। অর্থাৎ যেসব বিনিয়োগকারীর পোর্টফলিওর ইক্যুইটিতে ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত মাইনাস রয়েছে বা মার্জিন ঋণ তার ইক্যুইটির ডেবিট ব্যালেন্সের ১৫০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে তাদের ঋণ পরিশোধের চাপ স্থগিত করে লেনদেনের সুযোগ করে দেয়া হয়। সর্বপ্রথমে এ সুবিধা ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখ পর্যন্ত রাখা হয়। পরবর্তীতে এ সময় শেষ হলে পুঁজিবাজারের অবস্থা মন্দা থাকায় এ সুবিধার মেয়াদ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখ থেকে ৩১ মার্চ ২০১৪ তারিখ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। পরবর্তীতে গত ৩১ মার্চ পুঁজিবাজার তথা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে এর মেয়াদ আরও ৬ মাস পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়া হয়। অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ পর্যন্ত এই আইন স্থগিত রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়। পরবর্তীতে গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর এ আইন স্থগিতের সময় আরও ৬ মাস বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। কিন্তু এ সময়ের মধ্যেও বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি মার্জিন ঋণের ওই আইন আরও ৬ মাস অর্থাৎ ৩০ জুন ২০১৫ পর্যন্ত স্থগিত করা হয়। এদিকে ৩০ জুন ২০১৫ পর্যন্ত অর্থাৎ চলতি মাস এ আইনটির স্থগিতের সময় শেষ হচ্ছে।
×