ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বেহাল সড়কে খানাখন্দ

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ৩০ জুন ২০১৫

বেহাল সড়কে খানাখন্দ

দেশজুড়ে সড়ক-মহাসড়কগুলো বেহাল অবস্থা। যান চলাচলের উপযোগিতা হারিয়ে ফেলছে সড়কগুলো। খানাখন্দে ভরে গেছে প্রায় প্রতিটি সড়ক। সংস্কার করা রাস্তাটির কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। বর্ষার মৌসুমে বৃষ্টির পানিতে রাস্তাঘাটগুলোর করুণ দশা। কার্পেটিং করা সড়কগুলোতেই বেশি ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। টানা বৃষ্টিতে অবস্থা এমন যে, যানবাহন চলাচল অনেকটা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। তাছাড়া যেসব সড়কে বৃষ্টির আগে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কাটাকাটি করছিল সেসব সড়কের বেহাল অবস্থা তৈরি হয়েছে। কোথাও কোথাও সদ্য নির্মাণ কাজ শেষ হওয়া সড়কও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোন কোন সড়কের মুখে বিশাল গর্ত তৈরি হয়ে সে স্থানটি পানিতে থৈ থৈ করছে। রাজধানীর সড়কগুলোর অবস্থা গত ক’দিনের বৃষ্টিতে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আর ঢাকার সঙ্গে বিভিন্ন জেলার যোগাযোগের মহাসড়কগুলোর অবস্থাও অনুরূপ। মানুষের নির্বিঘœ ও আরামদায়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার লক্ষ্যে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ যেটুকু করা হয়েছে তার অবস্থাও সন্তোষজনক নয় আর। প্রত্যেকটি সড়ক মেরামত ও মেরামত কাজের গুণগতমান নিয়ে জনমনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। যে সকল অংশে মাত্র ১৫ দিন বা এক মাস পূর্বে কার্পেটিং সম্পন্ন করা হয়েছে, চলতি বর্ষায় সামান্য বৃষ্টিতেই তা উঠে গিয়ে গুঁড়ো পাথর বেরিয়ে পানি জমে গর্ত হয়ে যাচ্ছে। ভাল রাস্তার ওপর নিম্নমানের কার্পেটিং করা হয়েছে। যে কারণে নতুন কার্পেটিং এখনই উঠে যাচ্ছে। কোন ধরনের ব্রাশ না করেই নিম্নমানের ইট দিয়ে কাজ করে সঙ্গে সঙ্গে কার্পেটিং করা হয়েছে। ফলে জায়গাটা মজবুত হয়নি। সড়ক পুনর্নির্মাণে পরিত্যক্ত খোয়াসহ নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার অভিযোগ মিলেছে। সড়কে পুরনো সড়কের পরিত্যক্ত খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া নতুন যে খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে, তাও নিম্নমানের। বালিও দেয়া হয় না ঠিকমতো। এমনভাবে কার্পেটিং করা হয়েছে যে, ভ্যান চলাচল করলেও সড়ক দেবে যায়। আবার একটু বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় পানি আর কাদায় রাস্তাটি। এই ভাঙ্গাচোরা সড়কে তবু চলছে নানা ধরনের যানবাহন। অনেক জায়গায় পুরনো কার্পেটিং তুলে এখনও রাস্তায় মাটি, বালি, সুরকি ও পাথর ভরাট চলছে। কার্পেটিং করা রাস্তার সিংহ ভাগ অংশে ভালভাবে রোলার না দেয়ায় রাস্তার পাকা অংশ এখনই উঠে যাওয়ার উপক্রম। ঢাকা মহানগরীর অধিকাংশ রাস্তাই এখন ভাঙ্গাচোরা ও খানাখন্দকবলিত হয়ে পড়েছে। জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। ফুটপাথগুলো সরু হওয়ায় এবং বিভিন্নভাবে রাস্তাঘাট দখল, যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা ইত্যাদি কারণে নগরবাসীর ভোগান্তি চরমে। একদিকে তীব্র যানজটের কারণে নগরবাসীর যখন নাকাল দশা ঠিক সেই মুহূর্তেই বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই শুরু করা হয় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। রাস্তাঘাট দীর্ঘদিন কেটে রাখার কারণে প্রতিনিয়ত কাদা-নোংরা পানি ও ধুলার সঙ্গে বসবাস করতে হচ্ছে। বৃষ্টির পানি জমে গর্তগুলো কাদা আর নোংরা পানিতে ভরপুর। নামমাত্র সংস্কার করায় বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার পরে পুরনো চেহারায় ফিরে যায় রাস্তা। আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরের ছুটিতে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ যে বাড়বে তা সড়কের বেহাল অবস্থাই স্পষ্ট করে। সরকারের উচিত সড়কগুলোর মেরামত ও নির্মাণ কাজে দুর্নীতি, গাফিলতি বন্ধে সর্বাত্মক পদক্ষেপ গ্রহণ করা। জনগণ আর দুর্ভোগ পোহাতে চায় না।
×