নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট, ২৯ জুন ॥ দলে অনুপ্রবেশকারী জেলা আওয়ামী লীগ নেতার টর্চার সেলে যুবলীগ নেতা বুলেটকে হাত-পা বিচ্ছিন্ন করে হত্যার ঘটনায় তোলপাড় চলছে। বেরিয়ে আসছে টর্চার সেলের নির্মম কাহিনী। মহেন্দ্রনগরে আমিনুল খান ও বংশধর জ্যাঠা বিএনপি নেতা মোহাম্মদ আলী খানদের হাতে সরকারী সম্পদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জিম্মি হয়ে রয়েছে। কেউ ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলে না। এমন কি আইন-কানুন পর্যন্ত অসহায়।
আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল ইসলাম খান তার টর্র্চার সেলে শনিবার যুবলীগ নেতা ও থানা ছাত্রলীগ কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফকরুল ইসলাম বুলেটকে (৩৩) ডেকে নিয়ে গিয়ে হাত-পা বিচ্ছিন্ন করে হত্যার ঘটনায় বুলেটের বাবা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক এনামুল হক বাদী হয়ে ১৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। আমিনুল ইসলাম খানসহ তার বাহিনীর দুর্বৃত্তরা গা ঢাকা দিয়েছে।
এদিকে লোকমুখে টর্চার সেলের লোমহর্ষক নির্যাতনের নানা খবর লোকমুখে চাউর হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিন সন্ধ্যায় টর্চার সেলের ভিতর হতে কান্নার শব্দ বাজারের লোকজন শুনতে পেত। কেউ দুর্বৃত্তদের ভয়ে টর্চার সেলের ভিতরে কি ঘটছে খোঁজ নিত না। সকলের জানা সেখানে নিরীহ লোকজন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ ধরে নিয়ে এসে নির্যাতন করা হতো। আমিনুল ও তার পরিবারের সদস্যরা সবসময় পেশীশক্তি ব্যবহার করে চলাফেরা করে। তাই সবাই তাদের সমীহ করে চলে। একমাস আগে মহেন্দ্রনগরের শিবনাথ নামের এক হিন্দু পরিবারকে আমিনুল খান টর্চার সেলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে। তাদের বাড়িঘর ফেলে ভারতে চলে যেতে বলে।
নিরুপায় শিবনাথ সপরিবারে লালমনিরহাট প্রেসক্লাবে এসে আশ্রয় নেয়। এ বিষয়ে সেই সময় জনকণ্ঠে সংবাদ প্রকাশ হলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে হিন্দু পরিবারটি বাড়িতে ফিরে যায় এবং পরে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আঁতাত করতে বাধ্য হয়।
আমিনুল ইসলাম খান পরিবার মহেন্দ্রনগরে সরকারী সম্পদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জিম্মি করে রেখেছে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মোসলেম উদ্দিন জানান, কাজীর চওড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ওই স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সম্পর্কে পিতা-পুত্র। এ ঘটনা বহু বছর ধরে চলে আসছে। স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ খান স্থানীয় প্রভাবশালী বিএনপি নেতা। তিনি আমিনুল ইসলাম খানের জ্যাঠা।
