ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চিলি-পেরু লড়াইয়ে টানটান উত্তেজনা

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ২৯ জুন ২০১৫

চিলি-পেরু লড়াইয়ে টানটান উত্তেজনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বে আসরে সেরা চার দল নিশ্চিত হয়েছে। সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে, চিলি ও পেরু। প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হওয়ার অপেক্ষায় স্বাগতিক চিলি ও পেরু। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার ভোর ৫টা ৩০ মিনিট থেকে চিলির রাজধানী সান্টিয়াগোতে মাঠে গড়াবে ফাইনালে ওঠার এই লড়াই। ম্যাচ নিয়ে দু’দলের মধ্যেই বইছে টানটান উত্তেজনা। কেননা দেশ দুটির মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আছে চরম মতবিরোধ ও রেষারেষি। চিলি-পেরুর মুখোমুখি লড়াইয়ে অবশ্য স্পষ্ট ব্যবধানেই এগিয়ে আছে চিলি। এ পর্যন্ত দল দুটি মুখোমুখি হয়েছে ৭৬ বার। এতে চিলির ৪১ জয়ের বিপরীতে পেরুর জয় ২১টিতে। বাকি ১৪ ম্যাচ ড্র হয়। অবশ্য কোপার লড়াইয়ে হাড্ডাহাড্ডি অবস্থান দু’দলের। মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের আসরে দল দুটি মুখোমুখি হয়েছে ১৯ বার। এতে চিলির জয় ৭ ম্যাচে, আর পেরুর ৬ ম্যাচে। বাকি ৬ ম্যাচ ড্র হয়। ২০১১ সালে সর্বশেষ আসরে গ্রুপ পর্বে দেখা হয়েছিল দল দুটির। সেখানেও ১-০ গোলে পেরুকে হারিয়েছিল চিলি। প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে চিলি ১-০ গোলে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়েকে পরাজিত করে। দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে পেরু ৩-১ গোলে হারায় বলিভিয়াকে। উরুগুয়ের বিপক্ষে বিতর্কিত ম্যাচে জয় পায় স্বাগতিক চিলি। ম্যাচটিতে স্বাগতিকদের হয়ে জয়সূচক গোল করেন মাউরিসিও ইসলা। এই ম্যাচের ৬৩ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন উরুগুয়ের তারকা ফরোয়ার্ড এডিনসন কাভানি। ৮৮ মিনিটে একই কারণে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন লেফটব্যাক জর্জ ফুসিলে। যোগ করা সময় (৯৩ মিনিট) লালকার্ড দেখেন দলটির কোচ অস্কার তাবারেজও। ফলে বিদায়ের জ্বালার পাশাপাশি বহিষ্কারের জ্বালাতেও জ্বলতে হয় উরুগুয়েকে। ম্যাচের রেফারিং নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়। যে অভিযোগে কাভানিকে লালকার্ড দেখানো হয় সেটার ভিত্তি ছিল না বলে দাবি উরুগুয়ের। পরে ছবিতে বিষয়টি প্রমাণও হয়েছে। শেষ আটের আরেক ম্যাচে পাওলো গুয়েরেরোর দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে সেমিফাইনালের টিকেট পায় পেরু। পেরুর জয়ের মধ্য দিয়ে চিলির সঙ্গে লড়াই নিশ্চিত হয়। দু’দেশের লড়াই নিয়ে আগাম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। কেননা দল দুটিকে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বলা হয়ে থাকে। ফুটবল মাঠের লড়াই ছাড়াও জাতিগতভাবেও দেশ দুটির মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিরোধ আছে। দুই দলের মধ্যে ১৯৩৫ সাল থেকে শুরু হওয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরেকবার উপভোগ করতে পারবে দর্শকরা। প্রতিবেশী দুই দেশের লড়াইকে বলা হয় ‘ক্ল্যাসিকো ডেল প্যাসিফিকো’। ১৮৭৯ থেকে ১৮৮৩ সাল পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে চলা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের কারণে তাদের মধ্যে বৈরী সম্পর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ঐতিহাসিক ওই যুদ্ধকে ওয়ার অব প্যাসিফিক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। শুধু তাই নয়, চিলি ও পেরুর মধ্যে মেরিটাইম সীমান্ত নিয়েও চরম বিরোধ আছে। যেটি নিয়ে বর্তমানে দেশ দুটির মধ্যে চলছে আইনী লড়াই। চিলি ও পেরুর লড়াই তাই উপভোগ্য হবে বলে মনে করছে ফুটবল বিশেষজ্ঞরা।
×