ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়-

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ২৮ জুন ২০১৫

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়-

মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জনকারী দেশের সেনাবাহিনীর দায়িত্ব ও কর্তব্য অপরাপর দেশের তুলনায় আরও উন্নত, বহুমুখী ও ব্যতিক্রম হবে এটাই কাক্সিক্ষত। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধকালে প্রতিষ্ঠিত সেনাবাহিনীর কাছে দেশ ও জাতির প্রত্যাশা থাকে বিরাট। আমাদের মুক্তিযুদ্ধকালে সেনাবাহিনীর অকুতোভয় অবদানের কথা জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। তাদের অবদান চিরকাল বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে খচিত থাকবে। চরম পরিতাপের বিষয়, এই দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে নিয়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত হয়েছে বহুবার। সামান্য ক’জন বিপথগামী সৈনিকের চরম হঠকারিতার বিশাল মূল্য দিতে হয়েছে জাতিকে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতি হারিয়েছে চিরতরে। যদিও মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিবের চেতনা অপরাজেয়, চিরঅম্লান। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মানোন্নয়নে বেশকিছু গঠনমূলক পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। আমাদের দুর্ভাগ্য, সেসব বাস্তবায়নের সুযোগ তিনি পাননি। তবে এর বহু বছর পর তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে আবারও উন্নয়নের ধারায় ফিরিয়ে আনা হয়। সেই থেকে দেশে ও বিদেশে নানা কল্যাণমুখী দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গৌরব আরও উজ্জ্বল হতে থাকে। বৃহস্পতিবার নবনিযুক্ত সেনাপ্রধান আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হককে র‌্যাঙ্কব্যাজ পরিয়ে দেয়ার পর তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বক্তব্য দেন তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দেশবাসীর গর্ব হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রেখে সামনে এগিয়ে যাবে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে আমরা বিজয়ী জাতি। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।’ স্বাধীনতার প্রায় সাড়ে চার দশক পেরিয়ে গেলেও এখনও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করার চেষ্টা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কর্মকা- চালিয়ে যাওয়ার কোন কোন মহলের দুঃসাহস প্রত্যক্ষ করে জাতি। অত্যন্ত বেদনা ও লজ্জার সঙ্গে বলতে হয়, মুক্তিযুদ্ধের বিপরীত চেতনাধারী শক্তি তথা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তিকে রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদারিত্ব দেয়া হয়েছিল এক সময়। দেশের অর্থনীতি যখন বেগবান, দেশের মানুষ মর্যাদাপূর্ণভাবে ভবিষ্যত নির্মাণে প্রয়াসী, ঠিক সে সময়ে চিহ্নিত অপশক্তি রাজপথে মানুষ পুড়িয়ে দেশে আবার নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা চালিয়েছে। জাতি কি এই অন্যায় সহ্য করে যাবে? বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণœ রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা পালন করছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক, যুগোপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানের পেশাদার বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে তাঁর সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নে প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, দেশের গৌরব বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সব সময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
×