ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশালের পান চাষীদের মাথায় হাত!

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ২৭ জুন ২০১৫

বরিশালের পান চাষীদের মাথায় হাত!

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ জেলার দশ উপজেলাসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের পান চাষীদের পান চাষ করে লাভের পরিবর্তে এখন ব্যাপক লোকসান গুনতে হচ্ছে। গত বছর এ জেলায় একগাদি পানের দাম ছিল ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা। এ বছর তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার টাকায়। পূর্বে খুচরা মূল্যে যে পানের প্রতিবিরা ৫০ টাকায় বিক্রি করা হতো, এখন সেই পান বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১০ টাকায়। সূত্র মতে, ঘূর্ণিঝড় সিডরের পর দক্ষিণাঞ্চলের পান চাষে ধস নেমেছিল। তখন শত শত একর জমির পানের বরজ মাটির সঙ্গে মিশে গিয়েছিল। প্রাকৃৃতিক দুর্যোগ ও পান বিক্রিতে চরম অব্যবস্থাপনার কারণে তাদের প্রায়ই এ ব্যবসায় লোকসান হতো। প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং একাধিক রোগবালাই মোকাবেলা করে এক বছরের ব্যবধানে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল দক্ষিণাঞ্চলের পান চাষীরা। তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে পানের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিদেশেও রফতানি করত দক্ষিণাঞ্চলের উৎপাদিত পান। সূত্রে আরও জানা গেছে, চাষী ও পাইকারদের সমন্বয়ে গত তিন বছর পূর্বে বরিশাল শহরের নথুলাবাদ টেম্পোস্ট্যান্ড সংলগ্ন স্থানে সেন্টার পয়েন্ট সুপার মার্কেটে পানের বাজার নির্ধারণ করা হয়। এ পানেরহাটে সপ্তাহে পাঁচদিন শনি, রবি, মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শুক্রবার পানের হাট বসত। এ হাটের ৭টি আড়তে মোট ১৫জন আড়তদার ছাড়াও মূল পাইকার রয়েছে ১০ জন। আড়ত মালিক দুলাল রায় দুলু জানান, জেলার টরকী, গৌরনদী, মাহিলাড়া, বাটাজোর, ভুরঘাটা, কুড়ালিয়া, বোয়ালিয়া, চরমোনাই, সাহেবেরহাট, মুলাদী, উজিরপুর, গুঠিয়া, নারায়ণপুর, বাবুগঞ্জ, রহমতপুর, মাধবপাশা, বাকেরগঞ্জ ও দাড়িয়াল থেকে এ হাটে ছোট-বড় মিলিয়ে সাড়ে ৩শ’ ব্যবসায়ী পান সরবরাহ করেন। প্রান্তিক চাষীরা সরাসরিও এ হাটে পান নিয়ে আসেন। এখান থেকেই ট্রাকযোগে প্রতিহাটে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার পান ঢাকা, সিলেট, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার, চাঁদপুর, সুনামগঞ্জ, নোয়াখালী, কুমিলায় রফতানি করা হয়। তিনি আরও জানান, সর্বত্রই বরিশালের পানের কদর থাকায় দেশের সীমানা পেরিয়ে এ অঞ্চলের উৎপাদিত পান কুয়েত, দুবাই, সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক দেশে রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা হতো। বানারীপাড়া উপজেলার উদয়কাঠী এলাকার পান চাষী সঞ্জয় মিস্ত্রী জানান, ৩ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে সে পানের বরজ করেছেন। হঠাৎ করে পানের দাম কমে যাওয়ায় এখন সে ঋণের টাকা পরিশোধ করা নিয়ে মহাদুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
×