ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এমএমইএবির বিবৃতি

স্থানীয় মোটরসাইকেল শিল্প রক্ষায় বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ২৬ জুন ২০১৫

স্থানীয় মোটরসাইকেল শিল্প রক্ষায় বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সিকেডি মোটরসাইকেল আমদানিকারকদের সংগঠন বিমামার সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে মোটরসাইকেল ম্যানুফ্যাকচারার্স এবং এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশন (এমএমইএবি)। সংগঠনের সভাপতি হাফিজুর রহমান খানের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৫ জুন সিকেডি মোটরসাইকেল আমদানিকারকদের সংগঠন (বিমামা) কর্তৃক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত বিষয়সমূহ আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, যাতে বাংলাদেশের মোটরসাইকেল শিল্প দেশের স্বার্থ ও প্রকৃত বিনিয়োগ সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সংস্থাটির বক্তব্য হচ্ছে, ২০১০ সালে সরকার স্থানীয় উৎপাদনকে উৎসাহিত করায় দেশে ইতোমধ্যেই ৫টি মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারী কারখানা (ওয়ালটন, রানার, যমুনা, রোড মাস্টার ও গ্রামীণ মোটরস) স্থানীয়ভাবে উৎপাদন শুরু করেছে এবং আরও বৃহৎ ৩/৪টি প্রতিষ্ঠান স্থাপনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ সকল প্রতিষ্ঠান থেকে কারিগরি সহায়তা নিয়ে এই শিল্পেও ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ খাতে আরও ৭/৮টি ‘আমদানি বিকল্প পণ্য’ উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যেই তাদের কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে। যার ফলে ঢাকাসহ ফরিদপুর, দিনাজপুর ও বগুড়া জেলায় বিপুল বিনিয়োগের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে শিল্প সহায়ক যন্ত্রাংশ (মোটরসাইলের সিট, সিট কভার, চেন, স্পকেট, হেডলাইট, ব্যাকলাইট ও সাইড কভারসহ যাবতীয় প্লাস্টিক আইটেম, ফিল্টার, লুকিং গ্লাস, টায়ার ও টিউব ইত্যাদি) উৎপাদিত হচ্ছে। সম্প্রতি শিল্পমন্ত্রী নতুন আরও একটি সর্বাধুনিক ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ পেইন্ট কারখানার শুভ উদ্বোধন করেছেন যা একাই বছরে কমপক্ষে ৫ লাখ মোটরসাইকেলের যন্ত্রাংশ রং করতে সক্ষম এবং বর্তমান বাজারের মোট চাহিদা (প্রায় ২.৫ লাখ) পূরণসহ আগামী কয়েক বছরের বাড়তি চাহিদা পূরণে যথেষ্ট। এ সকল প্রতিষ্ঠান একদিকে যেমন দেশে ‘আমদানি বিকল্প পণ্যের’ বিকাশ ঘটাচ্ছে তদ্রƒপ গ্রামীণ জনপদে কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। প্রস্তাবিত বাজেটে এ সকল আমদানি পণ্যের শুল্ক বৃদ্ধিসহ ‘ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অর্গানাইজেশন’ এর নীতিমালা অনুসরণ করে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সিকেডি সংজ্ঞা মোতাবেক প্রথমবারের মতো সিকেডি বলতে রংবিহীন যন্ত্রাংশ আমদানির বাধ্যবাধকতা প্রতিষ্ঠিত করার যে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে তা অত্যন্ত সময়োপযোগী বলে আমরা মনে করি। আগামী দিনগুলোতে একই সংজ্ঞার আওতাধীন অন্যান্য বাধ্যবাধকতা পূরণে স্থানীয়ভাবে ওয়েলডিং এবং ইঞ্জিন ও গিয়ারবক্স সম্পূর্ণ সংযোজনের আবশ্যিক নির্দেশনা প্রদান করে দেশীয় উৎপাদন শিল্প ও ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ খাতকে পুরোপুরিভাবে গড়ে উঠতে সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন করা জরুরী হয়ে পড়েছে। প্রতিবছর বাজেটের পূর্বে সিকেডি আমদানিকারকগণের চাপে শত শত কোটি টাকার স্থানীয় বিনিয়োগ শিল্প হুমকির সম্মুখীন হয় ও নতুন বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হয়। এরূপ পরিস্থিতিতে দেশে শিল্প বিকাশের লক্ষ্যে মোটরসাইকেল শিল্পের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট দীর্ঘ বা মধ্যম মেয়াদী নীতিমালা প্রণয়ন করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। সদ্য বিকশিত এই শ্রমঘন শিল্প খাত আগামী দিনে পোশাক শিল্পের মতো আন্তর্জাতিক বাজারে সুনাম অর্জনের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক বিকাশে অবদান রাখতে সক্ষম হবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। দেশীয় শিল্প এবং ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ খাতে নিয়োজিত প্রায় ২৫ হাজার কর্মসংস্থানের এই শিল্প খাত যাতে আমদানিকারক ব্যবসায়ীদের প্রভাব ও প্রতিপত্তির জোয়ারে ভেসে না যায় তা নিশ্চিত কল্পে সংশ্লিষ্ট সকলের দেশপ্রেমী দৃষ্টি একান্তভাবে কাম্য।
×