ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘ভবিষ্যতে আরও চমক থাকবে পেস এ্যাটাকে’

প্রকাশিত: ০৭:১০, ২৩ জুন ২০১৫

‘ভবিষ্যতে আরও চমক থাকবে পেস এ্যাটাকে’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ থেকেই নিয়মিত তিন পেসার নিয়ে খেলা শুরু করেছে বাংলাদেশ দল। সেটা অব্যাহত থেকেছে সাফল্য পাওয়ার কারণে। আর সাবেক জিম্বাবুইয়ান পেসার হিথ স্ট্রিক বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই মূলত পেসারদের ওপর আস্থা পেতে শুরু করেছে টিম বাংলাদেশ। যা এখনও অব্যাহত আছে। সর্বশেষ চমক হিসেবে হিথ স্ট্রিক মোড়ক খুলেছেন সাতক্ষীরার তরুণ পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের। ক্যারিয়ারের প্রথম দুই ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়ে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন ফেলে দিয়েছেন। কারণ বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন, এর আগে ওয়ানডে ইতিহাসে কোন বোলারই অভিষেক ও পরের ম্যাচে এত বেশি উইকেট নিতে পারেনি। তবে স্ট্রিক মনে করছেন মুস্তাফিজকে দীর্ঘদিন এভাবেই পেতে চাইলে তার প্রতি যতœবান হওয়ার পাশাপাশি সতর্কতার সঙ্গে সার্বিক সহায়তা দিয়ে যেতে হবে। আর মুস্তাফিজের বিস্ময়কর নৈপুণ্যে ভারতের বিপক্ষে টানা দুই ওয়ানডে জিতে সিরিজ নিশ্চিত করলেও দল আত্মতৃপ্তিতে না ভুগলেই ভাল হবে বলে মনে করেন স্ট্রিক। তিনি দাবি করেন এখন বাংলাদেশ দলের মধ্যে উপলব্ধি এসেছে তারা কি করতে সক্ষম এবং আরও সাফল্যের জন্য ক্ষুধার্ত। বদলে গেছে বাংলাদেশ। বদলের হাওয়াটা লেগেছে গত বছর ডিসেম্বর থেকেই। তার আগে পর্যন্ত বাংলাদেশ দল একাদশ গড়তে বাঁহাতি স্পিনারের আধিক্যে। আর বিষয়টি প্রতিষ্ঠা পেয়ে গিয়েছিল বাঁহাতি স্পিনারে সমৃদ্ধ টাইগাররা যে কোন প্রতিপক্ষের জন্য ত্রাস। কিন্তু জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে সেই অবস্থা পাল্টে যায়। পেস ব্যাটারি সমৃদ্ধ দলে পরিণত হতে শুরু করে বাংলাদেশ। নিয়মিত এরপর থেকে তিন পেসার খেলেছে। আর ভারতের বিপক্ষে চার পেসার খেলানোর দারুণ পরিকল্পনাটা প্রথমে সবাইকে হকচকিয়ে দিলেও তা সফল হয়েছে। দারুণ খুশি তাই পেস বোলিং কোচ স্ট্রিক। তিনি বলেন, ‘আমি খুবই খুশি। অবশ্যই মুস্তাফিজ বিস্ময়কর। দুই খেলায় এ ধরনের নৈপুণ্য করা এবং এমন রেকর্ড গড়া বিশেষ কিছু। আমরা কোচিং বিভাগ এ জন্য খুব খুশি। কিন্তু অভিনন্দন অবশ্যই খেলোয়াড়দের দেয়া উচিত। জিম্বাবুইয়ে সিরিজ থেকে এবং বিশ্বকাপের পর আমরা তাদের ধীরে ধীরে শক্তিধর হয়ে বেড়ে উঠতে দেখেছি।‘ কিন্তু মুস্তাফিজকে এভাবেই নিয়মিত দেখতে চাইলে বাংলাদেশকে আরও সতর্ক হতে হবে। মুস্তাফিজকে ধরে রাখতে হবে। স্ট্রিক দাবি করেছেন তার এমন বিস্ময়কর নৈপুণ্য দেখানোর পেছনে কোন জাদুকরী কৌশল নেই। তিনি বলেন, ‘মুস্তাফিজ খুব ভাল বোলিং করছেন। আমি মনে করি বেশি প্রশিক্ষণ দেয়ার বিষয়ে আমাদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে এবং সহায়তা করতে হবে একইভাবে চলার জন্য। তিনি এখনও যথেষ্ট তরুণ। আমরা তাকে কিভাবে সামাল দেব সে বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। এখানে কোন জাদুকরী কৌশল নেই। শুধু নিশ্চিত করতে হবে তারা যেন দীর্ঘসময় ধরে উচ্চপর্যায়ের অনুশীলন করে। তিনি ১১ উইকেট নিয়েছেন। কিন্তু আমরা সবসময় তার কাছ থেকে ৫ উইকেট প্রত্যাশা করতে পারি না। তিনি তার যোগ্যতা দেখিয়েছেন। আমরা যদি তার প্রতি যতœবান হই এবং যথেষ্ট সমর্থন যোগাই তিনি আমাদের জন্য অনেক বড় ম্যাচ উইনার হয়ে উঠবেন।’ এখন মুস্তাফিজ চমক দেখেছে বিশ্ব। কিন্তু স্ট্রিকের দাবি ভবিষ্যতে আরও চমক যোগ হবে বাংলাদেশ দলের পেস বিভাগে। তিনি বলেন, ‘এখন এইচপি অবকঠামোয় সব খেলোয়াড়ই ভাল সুযোগ পাবে নিজেদের প্রকাশ করার। আবুল হাসান, শুভাশিষ রায় ও শহীদের মতো অনেক তরুণ খেলোয়াড়ই আসছেন। সবারই ভাল সমর্থন প্রয়োজন। বিসিবি আবারও এইচপি শুরু করেছে এবং আশা করছি সেটা চালু থাকবে। যখন রুবেল-মাশরাফিরা অবসরে যাবেন তখন আমরা পরবর্তী গ্রুপ পেয়ে যাব।’ ভারতের বিপক্ষে এই সাফল্যে একটুও অবাক হননি স্ট্রিক। এ বিষয়ে স্ট্রিক বলেন, ‘আমি একটুও আশ্চর্য হইনি। বিশ্বকাপ থেকেই আমরা ভিন্নরকমের টাইগার টিম দেখেছি। তারা আত্মবিশ্বাসী এবং এখন বিশ্বাস করে যে ধারাবাহিকভাবে তারা জিততে পারে। এই সিরিজে তারা সত্যিই দারুণ কিছু লড়াই দেখিয়েছে। তারা শুধু একটি খেলায় জিতে খুশি নয়, বরং সম্ভব হলে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিততে চায়। তারা সবে সত্যটা বুঝতে শুরু করেছে নিজেদের সামর্থ্য। সুতরাং এখনও অনেক পথ পাড়ি দেয়া বাকি। আমি তাদের এখনও আত্মতৃপ্ত দেখতে চাই না। অবশ্যই কোচিং বিভাগ থেকে সেটা ঘটতে দেয়া হবে না। তারা আরও সাফল্যের জন্য ক্ষুধার্ত। তারা জয়গুলো উপভোগ করছে এবং বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে গর্বিত হচ্ছে।’
×