ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পরিবারে কান্নার রোল বাবা দিবসে বাবা হলেন অপহৃত বিজিবি নায়েক রাজ্জাক

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ২২ জুন ২০১৫

পরিবারে কান্নার রোল  বাবা দিবসে বাবা  হলেন অপহৃত  বিজিবি নায়েক  রাজ্জাক

সংবাদদাতা, নাটোর, ২১ জুন ॥ বিশ্ব বাবা দিবসে বাবা হলেন মিয়ানমারে আটক বিজিবি নায়েক আব্দুর রাজ্জাক। এই সুসংবাদ সত্ত্বেও আব্দুর রাজ্জাকের নাটোরের সিংড়ার বাড়িতে এখন শুধু কান্নার রোল। ছেলের ছবি বুকে জড়িয়ে ধরে রাজ্জাকের মায়ের কান্নায় এলাকার বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। বাবা দিবসে নতুন পুত্রসন্তানের বাবা হলেও সদ্যজাত সন্তানের মুখ দেখতে পারছেন না মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) হাতে অপহৃত আব্দুর রাজ্জাক। রাজ্জাকের পরিবারের সদস্যদের একটিই দাবি তাকে দ্রুত উদ্ধার করা হোক। এদিকে, রবিবার ১১টার দিকে রাজ্জাকের স্ত্রী আসমা বেগম আর একটি ফুটফুটে পুত্রসন্তান প্রসব করেন অথচ এই খুশির মুহূর্তে তার বাবা কাছে নেই। অপহৃত রাজ্জাকের বাবা তোফাজ্জল হোসেন, বোন তসলিমা খাতুনসহ পরিবারের সবাই কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। মা বুলবুলি বেগম কাঁদতে কাঁদতে মূর্ছা যাচ্ছেন। ছেলে রাকিবুল ইসলাম, মেয়ে ফারিয়া জাহান রিতু ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। জানা যায়, জেলার সিংড়া উপজেলার বলিয়াবাড়ি গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন তারা মোল্লার ছেলে আব্দুর রাজ্জাক দেশমাতৃকার সেবায় আত্মনিয়োগ করতে ২১ বছর আগে তৎকালীন বিডিআর-এ যোগ দেন। বার্মা সীমান্তে কর্মরত থাকা অবস্থায় বুধবার মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ খবর পাওয়ার পর থেকে পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ রাজ্জাক অপহৃত হওয়ার পর বিজিবি তাদের কিছু জানায়নি। গণমাধ্যমে ছেলের হাত-পা বাঁধা ছবি দেখে তাঁরা এ ঘটনা জানতে পারেন। অপহরণের পর বিজিবির সিও ফোন করে তাঁদের জানান, পতাকা বৈঠক করে একদিনের মধ্যেই রাজ্জাককে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু এখনও সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে উদ্ধারের কোন ব্যবস্থাই তাঁরা দেখতে পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় তাঁরা উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় দিন কাচ্ছেন। আব্দুর রাজ্জাকের বাবা তোফাজ্জল হোসেন জানান, গত সোমবারে তাঁর সঙ্গে ছেলে রাজ্জাকের শেষ কথা হয়। এরপর আর কোন খবর পাননি। ফেসবুকে বিদেশী গণমাধ্যমে ছবি দেখে তারা রাজ্জাক অপহরণের খবর জানতে পারেন। সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছেলে রাকিবুল ইসলাম ও চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ুয়া মেয়ে ফারিয়া জাহান রিতু বাবার অনুপস্থিতি সহ্য করতে পারছে না। তারা জানে না তাদের বাবার কী হয়েছে। আর কোনদিন তাঁকে দেখতে পাবে কিনা। তাদের এ অবস্থায় প্রতিবেশীরাও স্তব্ধ হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে নাটোর জেলা প্রশাসক মশিউর রহমান জানান, এ ধরনের কোন তথ্য তাঁর কাছে নেই বা সরকারী কোন দফতর থেকে তাকে জানানো হয়নি। এদিকে এ ব্যাপারে সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা খাতুন বলেন, এ বিষয়ে আমরা কোন সরকারী বার্তা পাইনি। তবে অন্য একটি কাজে আমি ওই এলাকায় অবস্থান করছি আমি ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করে আসব। আর এর জন্য কিছু করার থাকলে সেটা সরকারের উচ্চমহলে জানানো হবে।
×