ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত

বাজার মনিটরিংয়ে ভিজিল্যান্স টিম মাঠে

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ২০ জুন ২০১৫

বাজার মনিটরিংয়ে ভিজিল্যান্স টিম মাঠে

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ ভোগ্যপণ্যে ক্ষতিকারক রাসায়নিক দ্রব্য মেশানোসহ ভেজাল খাদ্যদ্রব্য বাজারজাতকরণের সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছে তাদের পাকড়াও করতে অভিযানে নেমেছে জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের তিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে খাদ্য দ্র্রব্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা এ অভিযানে সহায়তা করছে। কোন অসাধু ব্যবসায়ী কিংবা মজুতদারকে উল্লিখিত বিষয়ে কোন ধরনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক গ্রেফতারসহ জরিমানা ও দ-াদেশের মুখোমুখি হতে হবে। অভিযোগ রয়েছে, শুধুমাত্র রমজান এলেই অসাধু ব্যবসায়ীরা ভেজাল খাদ্য বাজারজাত করে অতি মুনাফা হাতিয়ে নেয়ার অপচেষ্টা চালায়। শুধু তাই নয়, মজুতদাররাও কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারায় লিপ্ত হয়। উল্লেখ্য, এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে গত ২৭ মে সার্কিট হাউসে মোবাইল টিম গঠন করা হয়েছিল। সচেতন নাগরিকদের পক্ষ থেকে ও মোবাইল টিমের বাজার পর্যবেক্ষণের ওপর ভিত্তি করে এ ধরনের অভিযান পরিচালিত হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি), বাংলাদেশ সেম্পল টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই), মৎস্য সম্পদ অধিদফতরসহ খাদ্য প্রস্তুতকারক ও বিতরণ বিভাগের সদস্যদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির মূল লক্ষ্য হচ্ছে আসন্ন রমজান উপলক্ষে ভোগ্যপণ্যের ওপর ব্যাপক মনিটরিং ও অসাধু ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া। জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে গত ২৭ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস মিলনায়তনে ভোগ্যপণ্য অধিকার ও সঠিক মান নিয়ন্ত্রণ বিষয়ের ওপর ব্যাপক আলোচনা হয়েছে ওই সভায়। কনজুমার এ্যাসোসিয়েন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা ও গবেষকগণ এ সভায় উপস্থিত থেকে স্ব স্ব বক্তব্য উপস্থাপন করেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আসন্ন রমজান উপলক্ষে বাজার মনিটরিংয়ের জন্য তিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে তিনটি পৃথক ভিজিল্যান্স টিম গঠন করা হয়েছে। এ টিমে রয়েছে বিএসটিআই, টিসিবি ও ক্যাব প্রতিনিধিরা। এছাড়াও বিভিন্ন বাজার ও শপিং মলের পরিচালনা কমিটির সভাপতিরাও মোবাইল টিমের কার্যকারিতার পক্ষে মতবাদ ব্যক্ত করায় বাজার পর্যবেক্ষণ চলমান আছে। এদিকে, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পর্যাপ্ত মজুত ও সরবরাহ রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী অতিরিক্ত পরিমাণে ক্রয় করে বাজারে সঙ্কট সৃষ্টি না করাসহ জেলা প্রশাসনকে ভেজাল পণ্যের তথ্য দিয়ে সহায়তা করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, বাজারে ক্রেতাদের কাছে মেয়াদোত্তীর্ণ ও অননুমোদিত পণ্য বিক্রির পাঁয়তারা করে ব্যবসায়ীরা। নকল ও ভেজাল খাদ্যদ্রব্য বিক্রির মধ্য দিয়ে অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা নিজেদের আখের গোছানোর অপপ্রয়াস চালায়। এছাড়াও নকল খাদ্যদ্রব্য আমদানির মধ্য দিয়ে আমদানিকারকরা পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে পণ্য সরবরাহের পাঁয়তারার কারণে বাজারে ভেজাল পণ্যে সয়লাব হয়ে যায়। পণ্য মজুদের মাধ্যমে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে রমজান মাসেও অসাধু ব্যবসায়ীরা ভোক্তাদের হয়রানির চেষ্টা করে। বিশেষ করে ভেজাল সেমাই ও ঘিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় মসলা জাতীয় ভোগ্য পণ্যে ক্ষতিকারক কেমিক্যাল মিশিয়ে নিজেদের মুনাফা আদায়ের মধ্য দিয়ে মানব দেহের ক্ষতিসাধনে ব্যস্ত থাকে। এরই ভিত্তিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজার মনিটরিংয়ের জন্য তিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভিজিল্যান্স টিম গঠন করা হয়েছে। জনগণকে সচেতন করে ও নাগরিকদের পক্ষ থেকে ভেজাল পণ্যের প্রস্তুত ও বিতরণকারীদের পাকড়াওয়ের জন্য তিনটি মোবাইলে তথ্য জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুল আলম-০১৭১৬১৮৫৯০৫, আসিফ ইমতিয়াজ ০১৭৮৮৫৫০৭১০ ও হাবিবুল হাসান ০১৭১৬৯৭৩০৩৬ এ নম্বরগুলোতে যোগাযোগ করে অভিযোগ দায়ের করা যাবে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা রাজিব উল আহসান জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিএসটিআই ও টিসিবিসহ সংশ্লিষ্ট দফতরের সমন্বয়ে ভিজিল্যান্স টিম কার্যকর রয়েছে। এছাড়াও প্রত্যক্ষদর্শী অথবা ক্ষতির মুখে পড়াদের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
×