ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নাটোরে পরিত্যক্ত অডিটরিয়ামে তিন সরকারী অফিস

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ২০ জুন ২০১৫

নাটোরে পরিত্যক্ত অডিটরিয়ামে তিন সরকারী অফিস

সংবাদদাতা, নাটোর, ১৯ জুন ॥ বাগাতিপাড়ায় পরিত্যক্ত উপজেলা অডিটরিয়াম ভবনে ঝুঁকি নিয়ে চলছে তিনটি সরকারী দফতরের কার্যক্রম। ভবনটি পরিত্যক্ত হওয়ায় যেকোন সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা আর অবহেলার কারণে নিতান্ত বাধ্য হয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন তিন দফতরের কর্মকর্তা কর্মচারী। জানা গেছে, ১৯৮৫ সালে এ অডিটরিয়ামটি নির্মাণ করা হয়। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় প্রায় ১৯ বছর পূর্বে ভবনটিতে সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে ভবনটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিত্যক্ত ঘোষণার কোন তথ্যই প্রকৌশলী দফতরে নেই। অডিটরিয়ামে সকল কাজ বন্ধ ঘোষণা করা হলেও দ্বিতল ওই সরকারী ভবনে ঝুঁকি নিয়ে চলছে মাধ্যমিক শিক্ষা ও খাদ্য দফতর এবং মৎস্য অধিদফতরের কার্যক্রম। ভবনটির নিচতলায় মাধ্যমিক শিক্ষা, খাদ্য দফতর এবং উপরের তলায় রয়েছে মৎস্য দফর। জায়গা স্বল্পতাসহ আনুষঙ্গিক সমস্যা থাকা সত্ত্বেও দফতরগুলো থেকে মাসিক ভাড়া আদায় করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। যেকোন সময় ব্যবহার অনুপযোগী সরকারী এ ভবনটি ধসে প্রাণহানিসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন ভবনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এদিকে সাংস্কৃতিক ব্যক্তি, বিশেষজ্ঞ মহল দীর্ঘদিন ধরে অডিটরিয়ামটিকে দ্রুত পুনর্নির্মাণ করার দাবি জানিয়ে আসছেন। সূত্রে জানা যায়, জায়গার সংকুলান না হওয়ায় দফতর তিনটির কার্যক্রম পরিত্যক্ত অডিটরিয়ামে চালাতে হচ্ছে। প্রায় ১৯ বছর ধরে এভাবেই চলছে এসব বিভাগের কাজ। ভবনে জায়গার স্বল্পতা থাকায় আসবাবপত্রও ঠিকমত রাখা যায় না। ফলে অনেকটা অগোছালোভাবেই রাখতে হয় অফিসিয়াল এসব আসবাবপত্র। এমনকি সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বিন্যামূল্যে বিতরণের সরকারী বইগুলো উই পোকা খেয়ে নষ্ট করছে। অন্যদিকে ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কে কাটাতে হয় এসব দফতরের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। আহাদ আলী নামে একজন জানান, শিক্ষা অফিসের কোন গোডাউন না থাকায় এ দফতরের বইগুলো রাখা হয়েছে অডিটোরিয়ামের ভেতরে এবং দোতলার উপরে দর্শক বসার সিটের ওপর। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য মজুদকৃত বইগুলো নষ্ট হচ্ছে। খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা শেখ জাহিদুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন থেকে ব্যবহার অনুপযোগী অডিটরিয়াম ভবনের কক্ষ খাদ্য দফতরের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। অডিটোরিয়ামের এ ভবনটি বর্তমানে মাসিক তিনশ’ টাকা হারে বরাদ্দ নিয়ে এ দফতরের কাজ চালানো হচ্ছে। মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মিজবাহুল নুর আনোয়ার কবীর জানান, কিছুদিন পূর্বে ছাদের হুক খুলে সিলিং ফ্যান চলমান অবস্থায় পড়ে গিয়েছিল। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর ছাদের কিছু অংশ এবং দেয়াল সংস্কার করা হয়েছিল। অফিসারস ক্লাবের সঙ্গীত পরিচালক আরশাদ মাহমুদ জানান, ১৯৮৫ সালে অডিটোরিয়াটি নির্মাণ করা হয়। সে সময় ভবনটিতে অনেক জাতীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হত। ১৯৯৭ সালের ১৭ এপ্রিল সর্বশেষ তিনি সেখানে একটি অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করেছিলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন বলেন, আধুনিক উপজেলা পরিষদ ভবন পেলে অডিটরিয়াম এবং বই রাখার জন্য গোডাউন সমস্যার সমাধান হবে।
×