ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘নতুনরা এখনও আমার জন্য হুমকি নয়’

প্রকাশিত: ০৭:০৪, ১৯ জুন ২০১৫

‘নতুনরা এখনও আমার জন্য  হুমকি নয়’

রুমেল খান ॥ যে কোন বিষয়ে সাফল্য লাভের জন্য দরকার পূর্ব পরিকল্পনা, প্রয়োজনীয় উপাদান এবং দীর্ঘ প্রস্তুতি। গোলাবারুদের খেলা শূটিংয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চূড়ান্ত সাফল্য পাওয়ার জন্য বাংলাদেশ শূটিং স্পোর্টস ফেডারেশনের টার্গেট হচ্ছে ২০১৬ রিও অলিম্পিক গেমস। এই গেমসকে ঘিরেই ব্যক্তিগত সাফল্য লাভের জন্য সুনীল স্বপ্নের জাল বুনছেন তৃপ্তি দত্ত। দেশের মেয়েদের শূটিংয়ে প্রতিভাময়ী শূটারদের একজন। আগে ছিলেন বিকেএসপির শূটার। এখন খেলেন কুমিল্লা রাইফেলস ক্লাবের হয়ে। সম্প্রতি শেষ হলো জাতীয় শূটিং প্রতিযোগিতা। তাতে মেয়েদের ১০ মিটার এয়ার রাইফেল ইভেন্টে তাম্রপদক লাভ করেন ১৯৯২ সালের ১৭ ডিসেম্বরে জন্ম নেয়া ময়মনসিংহ পুলিশ লাইনের আইনজীবী বাবা নিখিল দত্ত আর গৃহিণী মা রেখা দত্তের মেয়ে তৃপ্তি। শৈশবে ক্রিকেটার হওয়ার বাসনা ছিল তৃপ্তির। হয়ে যান শূটার। সেই শূটিংই এখন তার জীবন। জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার এয়ার রাইফেল ইভেন্টে ২০১১ সালে রেকর্ডসহ রৌপ্যপদক, ২০০৮ সালে জুনিয়র পর্যায়ে রেকর্ডসহ স্বর্ণপদক লাভ করেন তৃপ্তি। ‘২০০৮ সালের ওই রেকর্ডটি এখনও অক্ষত আছে।’ জানান ধনু রাশির জাতিকা তৃপ্তি। নিজের ইভেন্টে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী? ‘নতুনরা এখনও কেউ আমার ইভেন্টে হুমকি নয়। কেননা তাদের স্কোর আমার ধারে কাছেও নেই। তবে ওরা উঠে আসছে। আগামীতে নিশ্চয়ই ভাল করবে।’ তৃপ্তি এখন পড়াশোনা করছেন রাজধানীর একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বি এ অনার্সে (দ্বিতীয় বর্ষ)। শূটিং নিয়ে ভবিষ্যত লক্ষ্য? ‘কোটা প্লেসে অংশ নিতে চাই অলিম্পিকে। তবে সেটা কেবল অংশ নেয়ার জন্যই নয়, অংশ নিতে চাই পদকজয়ের জন্য।’ তৃপ্তির আপাতত নিকট লক্ষ্য হচ্ছে আগামী নবেম্বরে জাতীয় এয়ারগান চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়ে স্বর্ণপদক জেতা। বিয়ে করছেন কবে? ‘শূটিংই আমার ধ্যানজ্ঞান, ওসব পরে হবে।’ তৃপ্তির লাজুক উত্তর। শূটিং প্রতিযোগিতায় প্রত্যাশিত সাফল্য না পেলে কেমন অনুভূতি হয়? ‘কষ্ট হয়। তবে আমার ফ্যামিলি অনেক সাপোর্ট ও উৎসাহ দেয়। তাই তো এখনও শূটিং চালিয়ে যেতে পারছি।’ ২০১২ সাল থেকে তৃপ্তিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসছে স্যামসাং (ইলেকট্রা ইন্টারন্যাশনাল)। এ প্রসঙ্গে তার ভাষ্য, ‘ওরা আমাকে অনেক সাহায্য-সহযোগিতা করে আসছে। এ জন্য তাদের প্রতি আমি দারুণ সন্তুষ্ট। এবারের জাতীয় শূটিং প্রতিযোগিতায় আমি ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে ব্রোঞ্জপদক পাওয়ার পেছনে আমার স্পন্সর কোম্পানিরই সবচেয়ে বড় অবদান। আমার স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান সানাউল্লাহকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আশা করি ভবিষ্যতেও পদক জিতে তাদের খুশি করতে পারব।’ স্পন্সর প্রতিষ্ঠান তৃপ্তিকে মাসিক দশ হাজার টাকা করে দিচ্ছে। সেই সঙ্গে কোন শূটিং প্রতিযোগিতা থাকলে দেয় ট্রাউজার্স, কেডস্, টি-শার্টসহ যখন যা কিছু দরকার পড়ে। কিভাবে এই স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ হলো? ‘আমার ক্লাবের কোচ ইমরান চৌধুরীর (তিনি ২০১২ সালে শূটিং ফেডারেশনের ইসি কমিটির সদস্য ছিলেন) মাধ্যমে স্যামসাংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ ঘটে। এবারের জাতীয় শূটিং প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হওয়ার কারণ কী? ‘আসলে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেয়ার জন্য তেমন সময় পাইনি। নইলে আরও ভাল রেজাল্ট করতে পারতাম।’ এ বছর নতুন রাইফেল কিনেছেন তৃপ্তি, ‘আমার ক্লাব আমাকে গত ১০ জানুয়ারি নতুন একটি রাইফেল কিনে দিয়েছে। জার্মানির তৈরি ফাইনাল বাউ নামের ৮০০ মডেলের রাইফেল।’ আগামীতে নতুন রাইফেল নিয়ে তৃপ্তি কতটা ভাল ফল করেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
×