ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নতুন কৌশলে রমজানে রাজধানীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে পুলিশ

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ১৯ জুন ২০১৫

নতুন কৌশলে রমজানে রাজধানীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে পুলিশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গতানুগতিক ধারা থেকে বের হয়ে এসে সম্পূর্ণ নয়া কৌশলে রমজানে রাজধানীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ জন্য “এক্সক্লুসিভ এ্যাকশন প্ল্যান” ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। গত কদিন ধরে মহানগর পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে একের পর এক বৈঠক করছেন কর্মকর্তারা। প্রতিনিয়ত কার্যকর কৌশল বের করার কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তারা। এ বিষয়ে জয়েন্ট কমিশনার অপারেশন মীর রেজাউল আলম জনকণ্ঠকে বলেন, এবার রাতেও ট্রাফিক নিরাপত্তাসহ অন্যান্য সব ইউনিটের সদস্যরা তৎপর থাকবে। পর্যাপ্তসংখ্যক পুলিশ দিয়ে ছেয়ে ফেলা হবে গোটা রাজধানী। পুলিশের সঙ্গে থাকবে সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা সদস্য, র‌্যাব, আনসার, আর্মড পুলিশ ও অন্যান্য গোয়েন্দারা। যাতে টহলের পর টহলের মাধ্যমে অপরাধীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়ানো হবে। জানা যায়, আগামীকাল থেকে শুরু হওয়া মাসব্যাপী রমজানে কিভাবে কে কোথায় ডিউটি করবে, সেটা বিন্যস্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে রাজধানীর ছিনতাই, অজ্ঞানপার্টি ও চাঁদাবাজির মতো অপরাধপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন ও লঞ্চঘাটভিত্তিক অপরাধ দমনে নেয়া হয়েছে আলাদা ব্যবস্থা। এ সব স্থানে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েনের পাশাপাশি পরিবর্তন আনা হয়েছে কৌশলগত অবস্থান। দিনরাত টহলে থাকবে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট। বিশেষ করে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ভোররাতে দূর পাল্লার গাড়ি থেকে নামার পর সেহ্্রির সময় যাতে নির্জন রাজপথে যাত্রীদের ছিনতাইকারীর কবলে পড়তে না হয়- সেজন্য পুলিশ থাকবে চারপাশে। সাদা পোশাকধারী পুলিশও থাকবে তৎপর। পুুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, পুরো রমজান মাস জুড়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে থাকবে পুলিশের বিশেষ ফাঁদ। গত মঙ্গলবার থেকেই এ অভিযান শুরু করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলামও বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও পবিত্র রমজান মাসের নিরাপত্তায় রাজধানীতে অভিযান চালাবে ডিএমপি। পাশাপাশি বিশেষ নিরাপত্তা নজরদারিতে থাকবে গোয়েন্দা পুলিশ। জানা যায়, রমজানকে কেন্দ্র করে দুটি ভাগে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রথমত, রমজানে প্রথম ১৫ দিন অজ্ঞান পার্টি, ছিনতাই, মলম পার্টির অপতৎপরতা প্রতিরোধে বিশেষ নজরদারি থাকবে। এ জন্য চিহ্নিত অপরাধীদের তালিকাও হাতে নেয়া হয়েছে। তাদের আস্তানাগুলো শনাক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া রমজানের শেষের ১৫ দিন এই নিরাপত্তাসহ বিশেষ করে ঈদ-উল ফিতরকে কেন্দ্র করে জাল টাকা চক্রের আনাগোনা প্রতিরোধে কঠোর নজরদারি থাকবে। যুগ্ম কমিশনার মীর রেজাউল আলম বলেন-রমজানে ডিবি পুলিশের টিম কয়েকটি স্তরে নিরাপত্তা দেবে। রাজধানীতে ডিবি পুলিশের মোবাইল টিম মাঠে থাকবে। বিভিন্ন শপিংমল ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিরাপত্তা দেয়া হবে। এ দিকে দ্বিতীয় স্তরের নিরাপত্তায় প্রাধান্য দেয়া হবে ঈদকে। ঈদের সময় নাড়ির টানে সবাই বাড়ি যাবে। এ সময়টা রাজধানীতে তাদের ফাঁকা বাসাবাড়িগুলোতেও কড়া নজরদারির আওতায় রাখা হবে। মহল্লাভিত্তিক অপরাধীকে শনাক্ত করে তাদের তালিকা নিয়ে তাদের গতিবিধিও নজরদারি করা হবে । এ দিকে বুধবার সাংবাদিকদের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের রাখার পাশাপাশি রমজানের শেষের দিকে আর্থিক কোন লেনদেনের ক্ষেত্রে কিছুটা বাড়তি চাপ থাকে। ঈদকে উদযাপন করতে এই সময়টায় মাদকের ব্যবহারও বেড়ে যায়। তাই মাদকের বিরুদ্ধেও অভিযান চালাচ্ছে ডিবি। ইতোমধ্যে, ডিবি পুলিশের অভিযান শুরু হয়েছে উল্লেখ করে যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, ডিবি পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। অভিযানে জাল টাকা তৈরির দুটি চক্র আটক করা হয়েছে।
×