ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মাইনষে খালি শরম দেয়

উবাচ

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ১৯ জুন ২০১৫

উবাচ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘বহুত হইছে। আর কত! বিএনপির যে অবস্থা, রাস্তাঘাটে মাইনষে খালি শরম দেয়’- কথাগুলো বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের। ইউটিউবে ভেসে ওঠা এক ফোনালাপে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তার দলের বর্তমান অবস্থায় নিজের হতাশা এমন আক্ষেপেই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের এক বিএনপি নেতার সঙ্গে আলাপচারিতায় বিএনপি নেত্রী সম্পর্কে ড. মঈন বলেন, ‘উনি যে অবস্থায় পতিত হয়েছেন, আর কোন দিন উঠতে পারেন কিনা, তা নিয়ে লোকজনের সন্দেহ আছে। লোকজন কইতাছে উনি (খালেদা জিয়া) তিনবার প্রধানমন্ত্রী হইছেন, এখন খামোখা ঝামেলা কইরা লাভ কী?’ এর আগে দলটির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের সঙ্গে ছাত্রদল নেতা এবং মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে যুবদল নেতার ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে। এই দুই নেতাও বলতে চেষ্টা করেছেন বিএনপির আর উঠে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। তাদের কথার সুরেও ছিলÑ ‘আমাদের যা অবস্থা মাইনষে খালি শরম দেয়।’ দুজনের মধ্যে রাজনীতি নিয়ে নেতিবাচক কথাবার্তার পর মঈন খান বলেন, ‘আমি চিন্তা করতাছি, কইয়েন না কাউরে, রাজনীতি টাজনীতি ছাইড়া দিয়ে নিরিবিলি জীবনযাপন করবÑ আমি এইডা চিন্তা করতাছি।’ আড়াইহাজারের নেতা বলেন, আমিও তাই করতে চাই। মঈন খান বলেন, বহুত হইছে; আর কত। বিএনপির যে অবস্থা, রাস্তাঘাটে মাইনষে খালি শরম দেয়। আড়াইহাজারের নেতা বলেন, হÑআজ অনেকেই কইলো, কী খবর আপনাগো? মঈন খান বলেন, কী খবর, কোন খবর নাই। আড়াইহাজারের নেতা বলেন, আজ একজন কইলো বলে, মওদুদ সাব আর অলি আহমদ মিলে নাকি বিএনপি ভাঙতাছে। মঈন খান বলেন, মওদুদ আর অলি সাব? অলি তো অনেক আগেই বিএনপি ছাইড়া গ্যাছে গা। বিএনপি ভাঙার কী আছে? হাঁ-হাঁ-হাঁ। অলরেডি বিএনপি ভাইঙ্গা গেছেগই। আড়াইহাজারের নেতা বলেন, মওদুদ সাব তো এখনও বিএনপি নিয়ে কথাবার্তা কয়? মঈন খান বলেন, এখন বেগম খালেদা জিয়া যাদের নিয়ে চলে-ফেরে, তাদের ঠিক করা না গেলে মওদুদরে বইক্কা লাভ কী? আড়াইহাজারের নেতা বলেন, উনি (খালেদা জিয়া) নোয়াখালীর লোক ছাড়বে না। মঈন খান বলেন, না না উনি (খালেদা জিয়া) নোয়াখালীর লোক ছাড়বে না এক নম্বর; দুই নম্বর হলো-উনি গুলশান অফিস ছাড়বে না। কিছু মনে কইরেন না-উনি যে অবস্থায় পতিত হইছেন, সেইখান থেইকা উঠতে পারবেন কি নাÑ এইডাই এখন মানুষ সন্দেহ প্রকাশ করতাছে। আড়াইহাজারের নেতা বলেন, ডাউড আছে, ডাউড আছে। মামলার শুনানি কী করব ফিসই দেয় না স্টাফ রিপোর্টার ॥ মামলার শুনানি ঠেকাতে এবার খালেদা জিয়া আইজীবীদের টাকা দেয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। বিষয়টি শুনলে যে কেউ মনে করবেন এটা বাংলাদেশের সব থেকে বড় কৌতুক ছাড়া আর কিছু নয়। কিন্তু বাস্তবে সত্যিই ঘটেছে তাই। বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন বৃহস্পতিবার লোক ভরা আদালতে খালেদা জিয়ার পয়সা বকেয়া পড়ার খবর ফাঁস করে দিয়েছেন। আদালতে ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’ মামলার শুনানির সময় খন্দকার মাহবুব বলেই ফেলেছেনÑ ধুর টাকাই দেয় না তা কি মামলার শুনানি করব। নিজের স্বামীর নামে ট্রাস্ট গঠন করে খালেদা জিয়া এতিম ছেলে-মেয়ের দায়িত্ব নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই ট্রাস্টের টাকা মা-ছেলে মিলে নাকি মেরে দিয়েছিলেন। এমন অভিযোগ তো করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার টাকাও নিশ্চয়ই এত দিনে ফুরিয়ে গেছে; নাহলে খন্দকার মাহবুবের ফিস বাকি পড়ল কিভাবে। খালেদা জিয়া দেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির জননী। ধর্মের শিক্ষা হচ্ছে শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকানোর আগেই তার মজুরি পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু এই বিশিষ্ট আইনজীবীর কত গায়ের ঘাম শুকিয়ে গেল; কিন্তু তিনি এখনও ফিসই পেলেন না। আর তাই তিনি বৃহস্পতিবার আদালতে বলেই ফেলেছেনÑ তিনি মামলার শুনানির প্রস্তুতি নিতে পারেননি কারণ তার মক্কেল এখনও তাকে ফিস দেননি। খালেদা জিয়ার টাকা বাকি পড়া সম্পর্কে যখন এমন কথা বলছিলেন খন্দকার মাহবুব তখন তিনি বসে বসে ক্লোজআপ মাখা হাসি দিচ্ছিলেন। এসময় বিএনপির আরেক আইনজীবী বলেন, ভবিষ্যতে সরকার পরিবর্তন হয়ে বিএনপি ক্ষমতায় এলে তিনি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী যেন মোশারফ হোসেন কাজলই থাকেনÑ এমন সুপারিশ করবেন। বাঁচতে হলে জামায়াত ছাড়তে হবে স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভোট আর মাঠ দুই রাজনীতিতেই বিএনপির বড় ভরসা জামায়াত। কিন্তু এতকাল পরে এসে হলেও দেশে যুদ্ধাপরাধের বিচার হচ্ছে। সকলের সামনে স্পষ্ট হচ্ছে মহান ’৭১-এ জামায়াত বাংলাদেশ সৃষ্টির বিরোধিতা করেছিল। শুধু তাই নয় এগিয়ে চলা দুনিয়াতে জামায়াত নামের এই দলটি উগ্র-সাম্প্রদায়িকতা বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে। শান্তি আর সম্প্রীতির ধর্ম ‘ইসলাম’কে বিকৃত করে মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করছে। দেশে জঙ্গীবাদের প্রশ্রয় দিয়ে পাকিস্তান থেকে আমদানি করা মওদুদীবাদ প্রচার করছে, যার সঙ্গে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কোন সম্পর্ক নেই। জামায়াত মানে ইসলাম নয়, এতদিনে এ কথাটি দেশের মানুষ বুঝতে পেরেছে। শুধু বুঝতে পারছে না বিএনপি। কিন্তু বিএনপির মিত্ররা ইতোমধ্যে বুঝতে পেরেছেন বাঁচতে হলে জামায়াত ছাড়তে হবে। মোদির ঢাকা সফরের পরে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত সন্ত্রাসবাদের বিস্তার চায় না। কিন্তু জামায়াত তাই করার চেষ্টা করছে। একদা বিএনপি থেকে বিতাড়িত এখন আবার ভীষণ বিএনপির শুভাকাক্সক্ষী বলে পরিচিত ডাঃ একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীও বলেছেন, বিএনপি এখন জামায়াতনির্ভর দল হয়ে উঠেছে। এ কারণে চারদিক থেকে চাপে রয়েছেন খালেদা জিয়া। বিএনপির বর্তমান নেতৃত্বকে ‘বাঁচতে’ জামায়াত ছাড়ারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। বি চৌধুরী বলেন, জিয়াউর রহমান হাজার হাজার মাইল হেঁটেছেন, সবাইকে নিয়ে ১২শ’ খাল কেটেছিলেন। সে দিন খালেদা জিয়াকে প্রশ্ন করেছিলাম, আপনি তিনবার ক্ষমতায় এসেছেন, কত মাইল খাল কেটেছেন? বি চৌধুরীর ভাষায় এ দলটি দুটি পর্যায় পেরিয়ে এখন তৃতীয় ধাপে রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ধাপটি ছিল ‘জিয়াউর রহমানের রাজনীতি। এরপর আসল খালেদা জিয়ার রাজনীতি। মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন। এখন তৃতীয় ধাপে আছে জামায়াতনির্ভর খালেদা জিয়ার রাজনীতি। জমল না স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে খুব দেন-দরবার করে দেখা করতে গিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। কিন্তু মোদির তিন প্রশ্নে বন্ধুত্বটা আর জমে উঠেনি। সাক্ষাতের পর খামাখা উচ্ছ্বসিত বিএনপি একেবারে চুপচাপ হয়ে গেছিল। ভাবখানা এমনÑ যা গেছে তা গেছে, আমি আর নরেন্দ্র মোদি আর কেউতো জানে না। কিন্তু সব কিছু ফাঁস করে দিল ভারতীয় সংবাদমাধ্যম। তাই বুঝি ফের চটেছে বিএনপি। ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের চুক্তিগুলোতে ভারতের দাসত্ব বলছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। নিজের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে বন্ধুত্ব! এ রকম বন্ধুত্ব কেউ চায় না। সমানে সমান হলে সেটাকে বন্ধুত্ব বলে না। সেটা হয় দাসত্ব। গেল সপ্তাহে এক দল আইনজীবীর সঙ্গে দেখা দেয়ার পর বিএনপি নেত্রী সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্ব নিয়ে এমন প্রশ্ন তুলেছেন। খালেদা বলেন, আপনারা যমুনা সেতুসহ বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে গেলে টোল দেন। কিন্তু অন্য দেশের গাড়ি যাবে, পণ্য যাবে তাদের কিছুই দিতে হবে না। এতে যে রাস্তার ক্ষতি হবে এটা পূরণ হবে কিভাবে। ভারতের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, বন্ধুত্ব হয় সমানে সমানে। এর ব্যতিক্রম হলে তা আর বন্ধুত্ব থাকে না, এটা হয় দাসত্ব। এ সময় পুলিশের সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, পুলিশ এখন সরকারের চেয়ে বড় হয়ে গেছে। তারা এখন বড় সরকার। গুম-খুন অত্যাচার করছে। কিন্তু পুলিশ র‌্যাব দিয়ে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকা যায় না। তিনি অভিযোগ করেন, সরকার অন্যায়ভাবে বিএনপিসমর্থিত নির্বাচিত মেয়রদের বরখাস্ত করছে। এসব ক্ষেত্রে আদালতের আমাদের পক্ষে আসার কথা। কিন্তু কোর্ট নিরপেক্ষতা রাখছে না বলেও জানান তিনি।
×