ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

যুদ্ধাপরাধী বিচার

বাগেরহাটের ৩ রাজাকারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের যুক্তিতর্ক শেষ

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১৮ জুন ২০১৫

বাগেরহাটের ৩ রাজাকারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের যুক্তিতর্ক শেষ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বাগেরহাটের রাজাকার কমান্ডার কসাই সিরাজ মাস্টার, খান আকরাম হোসেন ও লতিফ তালুকদারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার থেকে আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক শুরু হবে। চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ বুধবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। ট্রাইব্যুনালে অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক। যুক্তিতর্ক শেষ হলেই নিয়ম অনুযায়ী রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হবে। বুধবার প্রসিকিউশন পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন, প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন ও প্রসিকিউটর মোশফেক কবির। অপরদিকে আসামি পক্ষে ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার এম সারওয়ার হোসেন এবং সিরাজ মাস্টারের পক্ষে রাষ্ট্র নিয়োজিত আইনজীবী আবুল হাসান। গত ৬, ৭ ও ২১ এপ্রিল আসামিপক্ষে সাক্ষ্য দেন পাঁচজন সাফাই সাক্ষী। তারা হচ্ছেন- মোঃ আমজাদ শেখ, সরদার আব্দুল মান্নান, আব্দুর রশিদ মল্লিক, ইউসুফ আলী দিহিদার এবং মোঃ ফেরদৌস খান। অন্যদিকে গত বছরের ২ ডিসেম্বর থেকে গত ২৪ মার্চ পর্যন্ত সিরাজ-লতিফ-আকরামের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) হেলাল উদ্দিনসহ ৩২ সাক্ষী। উল্লেখ্য, গত ১৫ সেপ্টেম্বর এ তিন আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। তার আগের দিন গত ১৪ সেপ্টেম্বর সায়েদুল হক ও শেখ মুশফিক কবির তিন আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন। মানবতাবিরোধী অপরাধে সিরাজ মাস্টারের বিরুদ্ধে ছয়টি এবং আব্দুল লতিফ ও খান আকরামের বিরুদ্ধে যৌথভাবে ৪টি অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে, অভিযোগ ১ : ১৯৭১ সালের ১৩ মে দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বাগেরহাট জেলার রঞ্জিতপুর গ্রামে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর লুট এবং অগ্নিসংযোগ। এ সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের ৪০-৫০ জন নিরীহ নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা। অভিযোগ ২ : বাগেরহাট জেলার রামপাল থানার ডাকরার কালীমন্দিরে ভারতের শরণার্থী শিবিরে যাওয়ার উদ্দেশে জড়ো হয় হিন্দু সম্প্রদায়ের দুই-তিন হাজার লোক। ১৯৭১ সালের ২১ মে বেলা ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত তাদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে ৬০০-৭০০ জনকে হত্যা। অভিযোগ ৩ : ১৯৭১ সালের ১৮ জুন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সদর থানার বেসরগাতী, কান্দাপাড়া এলাকায় ১৯ জন নিরীহ নিরস্ত্র লোককে আটক, নির্যাতন, অপহরণ ও হত্যা। অভিযোগ ৪ : ১৯৭১ সালের ১৪ অক্টোবর সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সদর থানার চুলকাঠিতে হামলা চালিয়ে ৫০টি বাড়ি লুট ও অগ্নিসংযোগ। এসময় সাতজন নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা। অভিযোগ ৫ : ১৯৭১ সালের ৫ নবেম্বর দুপুর ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কচুয়া থানার শাখারিকাঠি হাটে হামলা চালিয়ে ৪২ জনকে আটক, নির্যাতন ও হত্যা। এসময় অনেক বাড়ির মালামাল লুট ও অগ্নিসংযোগ। অভিযোগ ৬ : ১৯৭১ সালের ২২ অক্টোবর সকাল ১০টা থেকে বিকেল আনুমানিক ৫টা পর্যন্ত কচুয়া থানা সদরের বিভিন্ন গ্রাম থেকে নিরস্ত্র পাঁচজনকে আটক, নির্যাতন, অপহরণ ও হত্যা। অভিযোগ ৭ : ১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টায় জেলার মোড়েলগঞ্জ থানার তেলিগাতীতে মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান শিকদারকে আটক, নির্যাতন ও হত্যা।
×