ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কলেজে ভর্তিতে হয়রানির মুখে উন্মুক্ত ভার্সিটির হাজার হাজার শিক্ষার্থী

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ১৫ জুন ২০১৫

কলেজে ভর্তিতে হয়রানির মুখে উন্মুক্ত ভার্সিটির হাজার হাজার শিক্ষার্থী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বোর্ডের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে কলেজে ভর্তিতে জটিলতায় পড়েছে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করা সারাদেশের হাজার হাজার শিক্ষার্থী। রোল নম্ব^রের ডিজিট সংখ্যা বেশি হওয়ায় সাধারণ কলেজে ভর্তি হতে গিয়ে চরম ভোগান্তি ও হয়রানির মুখে পড়েছে তারা। সাধারণ স্কুলের শিক্ষার্থীদের রোল নম্ব^র ৬ ডিজিটের হলেও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রোল নম্ব^র এক্ষেত্রে ১১ ডিজিটের। ফলে রোল নম্ব^র সাপোর্ট না করায় শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ভর্তির ফর্ম পূরণ করতে পারছে না। এদিকে সার্ভারের দুর্বলতাসহ নানা কারণে ঠিকভাবে অনলাইনে ভর্তির আবেদন করতে ব্যর্থ হচ্ছে সাধারণ বোর্ডের অনেক শিক্ষার্থীও। এ অবস্থায় কলেজে ভর্তিতে আবেদনের সময় বৃদ্ধির জন্য শিক্ষা বোর্ডে আবেদন জানিয়েছে নামীদামী কলেজগুলো। শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নানা কারণে সাধারণ শিক্ষার সুযোগ না পাওয়া শিক্ষার্থীরাই মূলত বিশেষ ব্যবস্থা হিসেবে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। এক্ষেত্রে ভাল ফল করে অনেকে আবার সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থায় ফিরে আসে। অন্যান্য বছর এসএসসি পাস করে মেধাবী শিক্ষার্থীরা সাধারণ কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেত। সরাসরি কলেজে গিয়ে তারা ভর্তি হতে পারত প্রতিবছর। কিন্তু এবার অনলাইনে ভর্তির আবেদন সকলের জন্য সুফল বয়ে আনলেও দুর্ভোগে পড়েছে উন্মুক্তের শিক্ষার্থীরা। এক্ষেত্রে অধিকাংশ শিক্ষার্থী বলছেন, অনলাইনের উদ্যোগের সময় তাদের বিষয়টি ভালভাবে ভাবা হয়নি। ফলে এবার কলেজগুলোতে অনলাইন ভর্তি পদ্ধতির কারণে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনিশ্চয়তায় পড়েছে। মূলত উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রোল নম্ব^র ১১ ডিজিট হওয়ায় তারা ফর্ম পূরণ করতে পারছে না। মিরপুরে কমার্স কলেজে আবেদনে ব্যর্থ হয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রাজিব জানিয়েছে, কোন ফর্মেই আমরা ১১ ডিজিট ইনস্টল করতে পারছি না। কলেজে আসার পর বলে বাউবি’তে যেতে, বাউবি’তে যাওয়ার পর বলছে এখানে সমস্যা। আমরা সমস্যা সমাধানে দৌড়াদৌড়ি করলেও সমাধান মিলছে না। অনলাইনে ৬ তারিখ থেকে ফর্ম বিতরণ চলছে কিন্তু ১৩ তারিখেও আমরা কোন সমস্যার সমাধান পাচ্ছি না। ১৮ তারিখ অনলাইনে ফর্ম পূরণের শেষ সময়। এখন আমরা কি করব? এদিকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেষ্টা করে সাধারণ বোর্ডের শিক্ষার্থীরাও এক একটি আবেদন করতে পারছে। অনেকে একটি কলেজের নাম দেয়ার পর আর কোন কলেজের নাম দিলেই সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। আছে সার্ভার ঠিকভাবে না পাওয়ার সমস্যাও। এ অবস্থায় আবেদনের সময় বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন বোর্ডে আবেদন করছে কলেজগুলো। অনেক কলেজের শিক্ষকরাও বোর্ডে গিয়ে একই দাবি করেছেন। ঢাকা বোর্ডে সময় বৃদ্ধির জন্য বেশ কয়েকটি কলেজের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে। ট্রাস্ট কলেজের পক্ষ থেকে রবিবার বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করেছেন অধ্যক্ষ বশির আহাম্মেদ ভূঁইয়া। তিনি বলেছেন, অনলাইনে ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়াটি নিঃসন্দেহে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। ইতোমধ্যে সুধীমহলে প্রশংসিত হয়েছে। তবে পদ্ধতিটি প্রথমবার প্রয়োগ করা হচ্ছে বিধায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এ সম্পর্কে সম্পূর্ণরূপে অবগত হতে এবং নিজেদের তৈরি করতে কয়েকদিন চলে গেছে। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীর অজান্তে তার পক্ষে অনৈতিকভাবে কোন কোন প্রতিষ্ঠান পছন্দের অনুক্রমের তালিকায় নিজ প্রতিষ্ঠানকে ১ নম্বর ক্রমিকে বা একমাত্র পছন্দ রেখে আবেদন প্রেরণ করেছে। ফলে শিক্ষার্থীরা নানান জটিলতার সম্মুখীন হয়েছে এবং এই সম্পর্কে বোর্ডও অবগত। তাই অনলাইন ও এসএমএস পদ্ধতিতে আবেদনের জন্য যে সময় নির্ধারিত ছিল বর্তমান পরিস্থিতিতে তা পর্যাপ্ত নয় বলে আমরা মনে করি। অনলাইন ও এসএমএস পদ্ধতিতে আবেদনের সময় ২১ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীর অজান্তে অনৈতিকভাবে পূর্বেই প্রেরণকৃত আবেদন সংশোধনের সময় ১৮ জুন পর্যন্ত বাড়ানো জরুরী। খাতা মূল্যায়নে প্রধান পরীক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ ॥ এদিকে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে চলতি এইচএসসি পরীক্ষার কৃষি শিক্ষার খাতা মূল্যায়নে প্রধান পরীক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ এনে চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছেন শিক্ষকরা। বাংলাদেশ কৃষি শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ বোর্ড চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগে বলেছেন, নিয়ম অনুসারে প্রধান পরীক্ষক হবেন সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষকরাই। কিন্তু এবারের কৃষি শিক্ষার জন্য প্রধান পরীক্ষক হিসেবে অন্য বিষয়ের শিক্ষককে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বঞ্চিত করা হয়েছে কৃষি শিক্ষার শিক্ষকদের। বিষয়টি বেআইনী। এ বিষয়ে চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, এমন একটি অভিযোগ আমি পেয়েছি। তবে এটা অবশ্যই বন্ধ করা হবে। আমি এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।
×